Tafsir, Videos |
‘’তোমরা জেনে রাখ যে, দুনিয়ার জীবন ক্রীড়া কৌতুক, শোভা-সৌন্দর্য, তোমাদের পারস্পরিক গর্ব-অহঙ্কার এবং ধন-সম্পদ ও সন্তান-সন্ততিতে আধিক্যের প্রতিযোগিতা মাত্র। এর উপমা হল বৃষ্টির মত, যার উৎপন্ন ফসল কৃষকদেরকে আনন্দ দেয়, তারপর তা শুকিয়ে যায়, তখন তুমি তা হলুদ বর্ণের দেখতে পাও, তারপর তা খড়-কুটায় পরিণত হয়। আর আখিরাতে আছে কঠিন আযাব এবং আল্লাহর পক্ষ থেকে ক্ষমা ও সন্তুষ্টি। আর দুনিয়ার জীবনটা তো ধোকার সামগ্রী ছাড়া আর কিছুই নয়।’’ সূরা হাদিদ:...
Articles |
প্রথমেই আপনি নিজেকে নিয়মানুবর্তী করে গড়ে তুলুন। আমাকে এবং আপনাকে এ ব্যাপারে যত্নশীল হতে হবে। আচ্ছা নিয়মানুবর্তিতা বলতে আপনি কি বুঝেন? সকাল সকাল ঘুমিয়ে পড়ুন। এশার সালাতের পর আপনি ঘুমিয়ে পড়ুন। রাত ১২.৩০ এ আপনি আড্ডা জমিয়ে বসবেন না, সিনেমা দেখতে বসে পড়বেন না, বন্ধুদের সাথে ঘুরতে বের হবেন না, রাতভর ইসলামী লেকচার শোনাকে জরুরী মনে করবেন না। কখনও করবেন না। এগুলো আপনার জন্য মোটেও কল্যাণ বয়ে আনবে না। এশার পর শুয়ে পড়ুন এবং ফজরের আগে উঠে পড়ুন। নিজের জন্য ১৫, ২০ অথবা ৩০ মিনিট সময় বরাদ্দ রাখুন। ভাবছেন এটা একদম অসম্ভব। রাত জেগে নেটফ্লিক্স দেখার কারনেই আপনার কাছে এটা অসম্ভব মনে হচ্ছে। শুধু এ কারনেই আপনার কাছে এটা অসম্ভব মনে হচ্ছে। আপনার রাতযাপন উন্নত করুন। রাতযাপন ঘুমের জন্য নির্দিষ্ট করুন কারণ এতে করে অন্তত প্রতি রাতে আপনি গুনাহের বোঝা বাড়িয়ে দিচ্ছেন না। অন্তত আপনি নিজের অন্তরকে গুনাহের মাধ্যমে কলুষিত করার হাত থেকে রক্ষা করলেন। অন্তত আপনি ঘুমাচ্ছেন এবং সে সময়টাতে পাপ করা থেকে মুক্ত। ঘুম থেকে উঠে নামাজ পড়ুন। অন্তত প্রতিদিন সময়মত ফজর সালাত আদায় করার ব্যাপারে সচেষ্ট হোন। আর ছেলেরা এখানে যারা আছেন অন্তত সপ্তাহে একদিন মাসজিদে ফজরের সালাত আদায় করুন। আমি প্রতিদিন বলছি না অন্তত সপ্তাহে একদিনের কথা বলছি। অন্তত সপ্তাহে একদিন। আর দ্বিতীয় রাকাতে সালাম ফিরানোর আগে জামাতে যেয়ে উপস্থিত হবেন না। তারপর নামায শেষে বললেন, “ও যাক আজ মসজিদে আসতে পারলাম!” তারপর ডান কাঁধের ফেরেশতার দিকে ইঙ্গিত করে বললেন, “আপনি এটা লিখেছেন তো ? আজকের ফজর!!” মসজিদে নামায শুরু হওয়ার আগেই উপস্থিত হন। আপনাদের মসজিদে ফজর নামায পড়ার উপকারিতা সম্পর্কে বলছি… এটার এমন এক আধ্যাত্মিক প্রভাব রয়েছে যে একমাত্র যারা যায় তারাই তা অনুভব করতে পারে। এটা বক্তৃতা দিয়ে বোঝানো যাবে না। যখন আপনি...
Articles |
আল্লাহ সময়কে বাস্তবতার এক সাক্ষী হিসেবে উপস্থাপন করেছেন। আর বাস্তবতাটি হলো মানুষ ক্ষতির মধ্যে নিমজ্জিত। এর মানে হলো ইতিহাস জুড়ে মানুষ যে ক্ষতির মাঝে নিমজ্জিত ছিল তার সবচেয়ে বড় সাক্ষী হলো সময় নিজেই। যেসব মানুষ মনে করে যে তারা বিশ্ব সেরা কারণ তাদের অনেক টাকা আছে, বা সুস্বাস্থ্যের অধিকারী, বা তারা দেখতে অনেক সুন্দর, অথবা তাদের সামাজিক মর্যাদা অনেক উপরে বা তারা অনেক জনপ্রিয়। যা কিছুই তাদের থাকুক না কেন যার কারণে তারা নিজেদের অন্যদের চেয়ে উপরে মনে করে….। আপনি আপনার এসব জিনিস যতদিন পারেন ধরে রাখতে পারেন কিন্তু যে জিনিসটি আপনি ধরে রাখতে পারবেন না তা হলো সময়। তাই যদি আপনি দেখতে অনেক সুন্দর হয়ে থাকেন, আজ থেকে চল্লিশ বছর পর আপনার চেহারায় ভাঁজ পড়তে শুরু করবে, মাথায় টাক গজাবে, মোটা গ্লাসের চশমা পরতে হবে। আর সত্তর বছর পর হয়তো ঠিক মত সোজা হয়ে হাঁটতেও পারবেন না, চেহারার মাঝে জায়গায় জায়গায় চামড়া জমাট বেঁধে যাবে। এটা ঘটতে যাচ্ছে। সারা দুনিয়ার সকল সম্পদ আপনার থাকতে পারে, কিন্ত সময় আপনার নিকট থেকে এতো কিছু নিয়ে যাবে যে …. আমি নিজ চোখে এমন মানুষদের দেখেছি যারা অস্বাভাবিক রকমের ধনী, অগণিত টাকা পয়সা যাদের রয়েছে…কিন্তু তারা এতো বৃদ্ধ এবং এতো দুর্বল যে এমনকি সিঁড়ি বেয়ে উপরের তলায়ও যেতে পারে না। তাদের বেলকনি থেকে বাইরের দৃশ্য অসম্ভব সুন্দর, কিন্তু তারা সে বেলকনিতেও যেতে পারে না কারণ বাতাসের ফলে হয়তো অসুস্থ হয়ে পড়বে। বাসার পেছনে রয়েছে ঝাঁকজমকপূর্ন সুইমিং পুল, তারা শুধু তাকিয়ে থাকতে পারে কিন্তু নামতে পারে না। বিশাল স্ক্রিনের টিভি রয়েছে কিন্তু চোখের জ্যোতি হারিয়ে গেছে, দেখতে পায় না। সময় সব কেড়ে নিয়ে গেছে। আমি আপনি যদি তাদের ম্যানসনে যাই, বিস্ময়ে হতবাক হয়ে যাবো। ‘মারাত্মক সুন্দর জায়গা, এটা দেখো, ঐটা দেখো।’ তারা এক...
Articles |
আল্লাহ যখন বলেন – তোমাদের মাঝে অবিবাহিতদের বিয়ে দিয়ে দাও, তাদেরকে বিয়ে করার সুযোগ করে দাও; এই নির্দেশনাটি ব্যাপকতা বুঝায়। এই নির্দেশনাটি কাদের জন্য প্রযোজ্য? আপনি হয়তো চিন্তা করবেন ছেলেটা যখন লেখাপড়া শেষ করবে, তারপর যখন ভাল একটা চাকরি পাবে, যখন সে অনেক টাকা জমাবে, যখন সে তার পিতামাতাকেও তাদের খরচের কিছু টাকা ফেরত দিতে পারবে, যখন সে এটা করবে সেটা করবে ইত্যাদি… এবং পরিবারের অন্য সবার যত্ন নেয়া হবে – তারপর আমরা তার বিয়ের কথা চিন্তা করবো। কারণ এখন যদি আমরা তাকে বিয়ে করাই তাহলে তার সকল মনোযোগের কেন্দ্রবিন্দু হবে তার স্ত্রী। আমরা কিছুই পাবো না। এটা আমাদের সন্তান, আমাদের বিনিয়োগ, তাকে বিয়ে করানোর আগে আমরা আমাদের টাকার মূল্য চাই। আর এমনকি যখন আমরা তাকে বিয়ে করাবো তখন ব্যাপারটা শুধু আমাদের পার্থিব অর্জনের বিষয় না, এটা আমাদের পারিবারিক গৌরব এবং প্রদর্শনের বিষয়ও। এমন একজনকে বিয়ে করাতে হবে যাকে আমরা প্রদর্শন করতে পারবো। যাকে নিয়ে আমরা গর্বিত হব, অনেক ছবি তুলতে পারবো। তাই বিশাল এক অনুষ্ঠানের আয়োজন কর এবং মানুষকে দেখাও যে আমরা একটা উচ্চ শ্রেণীর পরিবারে আত্মীয়তা করেছি…ইত্যাদি ইত্যাদি। তাই কাউকে বিয়ে করানোর ক্ষেত্রে যে বিষয়গুলো আপনি বিবেচনা করেন তা হল – নারী পুরুষ উভয়ের জন্য আপনি বয়সের একটা মাত্রা ঠিক করে দেন। নারীদের ক্ষেত্রে একদম বিপরীত কাণ্ডটাই ঘটে, কোন কোন পরিবারে সে টিনএজ বয়সে পৌঁছার সাথে সাথে এমন ভাবা হয়- আমাকে দ্রুত এর দায়দায়িত্ব পালন থেকে বাঁচতে হবে। মনে হয় যেন এটা আপনার ঘরের একটা ব্যাধি, যত দ্রুত এর থেকে বাঁচা যায় ততই মঙ্গল। আপনি মেয়েটাকে যেন তেন কোন পাত্রের কাছে তুলে দিতে পারলেই বাঁচেন। বহু মেয়েরা হতাশায় ভোগেন, কারণ তাদের বাবা মা সবসময় বলতে থাকেন; তুমি এখনো এখানে পড়ে আছ, তুমি বিয়ে করছ না, তুমি বাসায়...
Articles |
আমি এখন আপনাদের এমন একটা বিষয়ের কথা বলবো যা আমাদেরকে আল্লাহর নিকট ক্ষমা চাওয়া থেকে বিরত রাখে। বিষয়টা একজনের কাছে কতটুকু প্রত্যাশা করা হয় তার সাথে সম্পর্কযুক্ত। কিছু কিছু মানুষ মনে মনে এই সিদ্ধান্তে উপনীত হয়ে যায় – “আমি সারা জীবন ধরে অসংখ্য পাপে নিমজ্জিত ছিলাম। আল্লাহ মনে হয় আমাকে খুব একটা পছন্দ করেন না।” কোনো কোনো মানুষ এমনকি এতদূর পর্যন্ত চলে যায় যে – বলে উঠে, “আল্লাহ আমাকে ঘৃণা করে।” আমি নিজে তাদের বলতে শুনেছি। “আল্লাহ আমাকে পছন্দ করেন না। আল্লাহ আমার উপর খুবই রাগান্বিত। কারণ আমি বহু অপকর্ম সাধন করেছি। আমি জানতাম – আল্লাহ এই এই কাজগুলো করতে নিষেধ করেছেন, কিন্তু তারপরেও আমি করেছি। শুধু একবার নয়, বহুবার এই খারাপ কাজগুলো করেছি। সুতরাং আল্লাহর ভালো মানুষের তালিকায় আমি নেই। আমার নামাজের কোনো দাম নেই।” মানুষ যখন নিজের সম্পর্কে এই রকম ধারণা পোষণ করে, তখন সে কী করে জানেন? “আমি তো খুবই খারাপ মানুষ। আপনি কি আমার জন্য একটু দোআ করতে পারবেন? কারণ আমি ইতিমধ্যে দোআ করার যোগ্যতা হারিয়ে ফেলেছি, এখন আপনাকে আমার জন্য দোআ করতে হবে। কারণ আমি আশা করছি, আল্লাহ অন্তত আপনার দোআ কবুল করবেন। এতে হয়তো আমার একটা সুযোগ তৈরী হতে পারে। কারণ আমি? আমার কথা তিনি শুনবেন না। আপনার তো আল্লাহর সাথে ভালো সম্পর্ক আছে বলে মনে হয়। তাই দোআ টা আপনিই করুন।” আপনাদেরকে আবার একটু পেছনে নিয়ে যাই। নূহ (আ) কাদের কাছে আল্লাহর নিকট ক্ষমা চাওয়ার এই প্রস্তাব তুলে ধরেছিলেন? নূহ (আ) কি এমন মানুষদের নিকট এই প্রস্তাব তুলে ধরেন যারা সারা রাত মসজিদে কাটাতো? প্রতিবছর হজ্জ্ব পালন করতে যেত? রোজা রাখতো এবং অন্য আরো সৎ কাজ করতো? নূহ (আ) ক্ষমা পাওয়ার এই প্রস্তাব তুলে ধরেন ইতিহাসের অন্যতম একটি বিদ্রোহী সম্প্রদায়ের প্রতি। যারা...