যখন ফেরেশতারা আপনাকে জান্নাতের সুসংবাদ দিবেন

— উস্তাদ নোমান আলী খান আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তায়ালা সূরা ফুসসিলাত এর ৩০ নাম্বার আয়াতে বলেন – إِنَّ الَّذِينَ قَالُوا رَبُّنَا اللَّهُ ثُمَّ اسْتَقَامُوا تَتَنَزَّلُ عَلَيْهِمُ الْمَلَائِكَةُ أَلَّا تَخَافُوا وَلَا تَحْزَنُوا وَأَبْشِرُوا بِالْجَنَّةِ الَّتِي كُنتُمْ تُوعَدُونَ – “নিশ্চয় যারা বলে, আমাদের পালনকর্তা আল্লাহ, অতঃপর তাতেই অবিচল থাকে, তাদের কাছে ফেরেশতা অবতীর্ণ হয় এবং বলে, তোমরা ভয় করো না, দুশ্চিন্তা করো না এবং তোমাদের প্রতিশ্রুত জান্নাতের সুসংবাদ শোন।”“তাতানাজ্জালু আলাইহিমুল মালা-ইকা” তাদের উপর ফেরেশতারা অবতীর্ণ হয় – এই আয়াত নিয়ে আমাদের ক্যাসিকাল স্কলারদের মাঝে বিভিন্ন মতামত পাওয়া যায়। কারণ পূর্বের আয়াতগুলোতে কিয়ামত, বিচার দিবস, জাহান্নামের আগুন, আখিরাত নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে। কেউ কেউ বলেন – সম্ভবত, এই ফেরেশতারা আখিরাতে অবতীর্ণ হবেন। অন্যরা বলেন – এই আয়াতে এই ধরনের কোন সীমা নির্ধারণ করা হয়নি। সম্ভবত, মৃত্যুর সময় এই ফেরেশতাদের আগমন ঘটবে। আপনি একটি ভালো জীবন অতিবাহিত করেছেন, এখন মৃত্যু শয্যায়…। আজ হউক কাল হউক আমরা একদিন এই মৃত্যু শয্যায় শায়িত হব। এটা গাড়িতে ঘটুক, প্লেনে ঘটুক বা আমাদের বিছানায় ঘটুক, যেখানেই ঘটুক না কেন এটা অবশ্যই ঘটবে। যখন আমরা বৃদ্ধ হয়ে পড়বো, অথবা হাসপাতালের বিছানায়…আপনি শুয়ে আছেন আর চারপাশে পরিবারের সদস্যরা কান্নাকাটি করছে, আপনি কথা বলতে পারছেন না, কারণ ”বালাগাতিত তারাকি” (প্রাণ কণ্ঠাগত ৭৫ঃ ২৬) রুহ ইতিমধ্যে গলায় পৌঁছে গেছে, আপনি আমি এই ক্ষণস্থায়ী বাসস্থান ছেড়ে চিরবিদায়ের পথে… এই শরীরটাও আমাদের রুহের জন্য ক্ষণকালের বাসস্থান, আমরা এই শরীর ছেড়ে দেয়ার পথে। আপনার মা পাশে দাঁড়িয়ে আছে, ভাই, বোনেরা এবং পরিবারের অন্যান্য সদস্যরা দাঁড়িয়ে আছে, তারা সবাই কাঁদছে; ঠিক সে সময় আপনার চোখ খুলে গেল আপনি এমন কিছু দেখতে পাচ্ছেন যা অন্য কেউ দেখছে না, আপনি দেখতে পেলেন ফেরেশতারা নেমে আসছে। আশে পাশের কেউ এই দৃশ্য দেখতে পারছে না, কিন্তু আপনি দেখতে পাচ্ছেন।...

ক্ষমতা বনাম সম্মান – উস্তাদ নোমান আলী খান

“قُلِ اللَّهُمَّ مَالِكَ الْمُلْكِ تُؤْتِي الْمُلْكَ مَن تَشَاء وَتَنزِعُ الْمُلْكَ مِمَّن تَشَاء …”- “হে আল্লাহ তুমিই সর্বভৌম ক্ষমতার অধিকারী। তুমি যাকে ইচ্ছা ক্ষমতা দেও আর যার নিকট হতে ইচ্ছা ক্ষমতা কেড়ে নেও।” (সূরা আল ইমরান ৩ঃ ২৬)। এটাই বাস্তবতা। এই স্বীকার করি এই ক্ষমতা শুধু আল্লাহর হাতেই, তিনি যাকে যখন ইচ্ছা দেন আর যখন ইচ্ছা তার থেকে কেরে নেও। এখানে একটা ব্যাপার বেশ নজর কাড়ে, আরবী শব্দ “মুলক” এখানে দুইবার ব্যবহৃত হয়েছে। “تُؤْتِي الْمُلْكَ مَن تَشَاء” এবং “تَنزِعُ الْمُلْكَ مِمَّن تَشَاء”। এখানে “দমীর” বা সর্বনাম ব্যবহার করা যেত। অর্থাৎ “মুলক” শব্দ দুইবার ব্যবহার না করে একবার মূল শব্দ আরেকবার সর্বনাম ব্যবহার করতে পারতেন। তাহলে আয়াতটা হতো এমন, “তুমি যাকে ইচ্ছা ক্ষমতা দেও আর যার নিকট হতে ইচ্ছা সেটা কেড়ে নেও।” পরেরবার ‘মুলক” ব্যবহার না করে “সেটা” বা এরকম কিছু ব্যবহার করা যেত। কিন্তু আল্লাহ “মুলক” অর্থাৎ ক্ষমতা বা রাজত্ব এই শব্দটি দুইবার ব্যবহার করেছেন। আরবীর নিয়ম অনুসারে আপনি যখন একই শব্দ দুইবার ব্যবহার করছেন তখন দুইটি শব্দ দ্বারা আলাদা দুইটি বিষয় বা এই আয়াতে আলাদা দুইটি ক্ষমতা বুঝায় না। এখানে একটি জিনিসের কথায় বলা হচ্ছে। সাধারণভাবে আমরা যদি চিন্তাকরি, তিনি যাকে ইচ্ছা ক্ষমতা দেন ও যার থেকে ইচ্ছা থেকে সেই ক্ষমতা কেড়ে নেন। আপনি হয়তো ভাবতে পারেন একজনকে রাজত্ব দেওয়া হচ্ছে আর অন্য একজন থেকে কেড়ে নেওয়া হচ্ছে, বিষয়টা এমন না। “মুলক” শব্দটির দুইবার ব্যবহারের ফলে এর আরেকটা অর্থ দাড়াচ্ছে। অর্থাৎ তিনি যাকে ক্ষমতা দিয়েছেন চাইলে তার থেকেই কেড়ে নিতে পারেন। অর্থাৎ ক্ষমতাপ্রাপ্ত ব্যক্তি থেকেই ক্ষমতা আল্লাহ চাইলে নিয়ে নিচ্ছেন। এটা আল্লাহর সিদ্ধান্ত। আবারো বলছি, বিষয়টা এমন না যে, একজনকে দিলেন এবং অন্যজন থেকে কেড়ে নিলেন।  আল্লাহ এমন করেননি যে, তোমাকে একবার ক্ষমতা দিয়েছি তারমানে সারাজীবন তুমিই শাসন করবে।...

আপনার আওয়াজ নবীর আওয়াজের উপর উঁচু করবেন না

–নোমান আলী খান সূরা হুজুরাত (৪৯) এর দ্বিতীয় আয়াতে, আল্লাহ আযযা ওয়া জাল্লা নবি ﷺ এর আমাদের উপর একটি অধিকারের বর্ণনা করছেন –يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا لَا تَرْفَعُوا أَصْوَاتَكُمْ فَوْقَ صَوْتِ النَّبِيِّ“হে ঈমানদারগণ, তোমরা নবীর আওয়াজের উপর তোমাদের আওয়াজ উঁচু করো নাوَلَا تَجْهَرُوا لَهُ بِالْقَوْلِ“এবং তাঁর সাথে সেরকম উচ্চস্বরে কথা বলো না”كَجَهْرِ بَعْضِكُمْ لِبَعْضٍ“যেমন তোমরা নিজেরা পরস্পর উচ্চস্বরে কথা বল,”أَنْ تَحْبَطَ أَعْمَالُكُمْ“এ আশঙ্কায় যে তোমাদের সকল আমল-নিস্ফল হয়ে যাবে”وَأَنْتُمْ لَا تَشْعُرُونَ“অথচ তোমরা উপলব্ধিও করতে পারবে না।“এই আয়াতের প্রেক্ষাপটের ব্যাপারে একটু বুঝে নেই, ঠিক আছে?যারা মুসলিম হয়েছিলেন, তাদের মধ্যে কিছু বেদুইনও ছিলেনএবং তাঁরা ইসলামি আচার ব্যাবহার তো দূরের কথা, সাধারণ সহুরে আদব কায়দার ব্যাপারেও অতো সভ্য ছিলেন না।তারা একরকম ভাবে জানতেন যে নবি ﷺ একজন রাসুল, কিন্তু তাঁকে শ্রদ্ধা করা, সঠিক সম্মান দেখানো, এসব ব্যাপারে তারা অজ্ঞ ছিলেন।তাই তারা তাঁর বাড়িতে যান, তাঁর বাড়ি ছিল খুবই ছোট, এবং দরজায় ধাক্কা দিয়ে বলেন, “ইয়া মুহাম্মাদ! উখ্রুজ আলাইনা!”“মুহাম্মাদ, বেড়িয়ে এসো, আমরা তোমাকে কিছু প্রশ্ন করতে চাই।“সমস্যা হলো – আল্লাহ নিজে কখনো নবি ﷺ কে “ইয়া মুহাম্মাদ” বলে ডাকেননি।আল্লাহ নিজে নবির প্রতি এতো শ্রদ্ধাশীল যেতিনি তাঁকে ডেকেছেন “ইয়া আইয়ুহান-নাবি”, “ইয়া আইয়ুহাল-মুযযাম্মিল”, “ইয়া আইয়ুহাল-মুদ্দাসসির”, “ইয়া আইয়ুহার-রাসুল” বলে,এমনকি যখন [কোরআনে] “মুহাম্মাদ” নামের উল্লেখ আসে, তিনি সাথে যোগ করেছেন “মুহাম্মাদ রাসুলুল্লাহ”(সূরা আস-সাফ:৬) – وَمُبَشِّرًا بِرَسُولٍ يَأْتِي مِن بَعْدِي اسْمُهُ أَحْمَدُতাই না?(সূরা আল-আহযাব: ৪০) – مَا كَانَ مُحَمَّدٌ أَبَا أَحَدٍ مِنْ رِجَالِكُمْ وَلَٰكِنْ رَسُولَ اللَّهِযেখানেই “মুহাম্মাদ” উল্লেখ করা হয়েছে সেখানেই “রাসুল”ও যোগ হয়েছে।এবং মাত্র একবার আল্লাহ “মুহাম্মাদ”-এর সাথে “রাসুল” উপাধি যোগ করেন নি, সেটা হলো সূরা মুহাম্মাদ-এ, যেখানে আল্লাহ তাঁর নামটাকেই লক্ষণীয় করেছেন।(QS. Muhammad: 2) – وَالَّذِينَ آمَنُوا وَعَمِلُوا الصَّالِحَاتِ وَآمَنُوا بِمَا نُزِّلَ عَلَىٰ مُحَمَّدٍ وَهُوَ الْحَقُّ مِن رَّبِّهِمْএবং এখানে তাঁর নামের সাথে রাসুল যোগ না করার...

দুঃখ কষ্টের মাহাত্ম্য

– – নোমান আলী খান আপনি জানেন এই জীবনে আমরা কিছু জিনিস চাই।একজন যুবক বিয়ে করতে চায় অথবা মহিলা বিয়ে করতে চায়।আপনি একটি ভালো চাকরি চান।আপনি একটি ঘর চান।আপনি চান আপনার পরিবার ঠিক থাকুক।আপনি আপনারা সন্তানদের জন্য করতে চান তাদের জন্য ভালো শিক্ষা চান আপনার সন্তানদের বিয়ে দিতে চান।কিছু ব্যাপার আছে যেগুলোর অগ্রাধিকার আমাদের জীবনে আছে।আল্লাহ আজ্জা ওয়াজাল তার কিতাবে আমাদের শিখাচ্ছেন একটা জিনিস আপনি যদি এই জীবনে পেয়ে থাকেন তা অন্য সব কিছুর থেকে মূল্যবান।আর সেই একটি জিনিস হলো আল্লাহর নৈকট্য। আল্লাহর সাথে ভালো হওয়া এবং সত্যিকার অর্থে তার সাথে সম্পর্ক তৈরি করা।মানুষের সমস্যা হচ্ছে যখন জীবন ভালো যায় অনেক মানুষ বিভ্রান্ত হয়ে পরে।আপনি ভিডিও গেম খেলেন,মুভি দেখেন,সোস্যাল মিডিয়া স্ট্যাটাস চ্যাক করেন,বন্ধুদের সাথে হ্যাং আউট করেন রেস্টুরেন্টে,ঘুমান।আল্লাহকে এই সব কিছুর বাইরে রাখেন।এখানে আল্লাহ নেই।এটা আপনি চিল করছেন,সেখানেই সব।এবং তারপর কঠিন সময় আসে।বন্ধুরা সেখানে নেই।গেম আর ভালো লাগে না গাড়িটাও সুন্দর লাগেনা কারন সুস্থতা নেই আর যখন অসুস্থ থাকি তখন কোন কিছুই ভালো লাগেনা।আর তখন আপনার শুধুমাত্র আশা থাকে “আমি এই হাসপাতালের বিছানা থেকে বের হতে চাই।আমি আবার হাটতে পারলেই চলবে।” মানুষজন আপনার প্রিয় খাবার নিয়ে আসবে আপনি খেতে চাবেননা।আপনাকে মুভি দেখাতে চাবে আপনি দেখতে চাবেননা।যাকিছু যেগুলো নিয়ে আপনি বেচে ছিলেন a,b,c,d সব কিছু নাই হয়ে গিয়েছে।আপনি আর এগুলোর প্রতি পরোয়া করেননা।কারন একটা নিয়ামত আল্লাহ আপনার জন্য একটু কমিয়ে দিয়েছেন।এবং এই পর্যায়ে আপনার দুটি রাস্তা আছে।আপনি যদি এই মানুষদের মধ্যে হন যারা একদম দারপ্রান্তে আছে, আপনি আল্লাহর কাছে অভিযোগ শুরু করতে পারেন “কেন আপনি আমার সাথে এমন করলেন? আপনার কি পছন্দ হয়নি আমি সুখী ছিলাম।” অথবা আপনি সবচেয়ে শ্রেষ্ঠ সম্পদ লাভ করতে পারেন আর সেটা হলো নম্রতা এবং আল্লাহর নৈকট্য ।অসলে উপলদ্ধি করা এমনকি যখন আমি সুস্থ ছিলাম, এমনকি...

আল্লাহ সর্বশক্তিমান 

– উস্তাদ নোমান আলী খান ইনশাআল্লাহ, আজ আমি আপনাদের নিকট আল্লাহর একটি নাম القوي – এর উপকারিতা বর্ণনা করবো। القوي অর্থ – শক্তিশালী, ক্ষমতাশালী। এই অসাধারণ শব্দটি দ্বারা আল্লাহর একটি নাম প্রকাশ করা হয়। শব্দটি শুনলেই আপনি বুঝতে পারেন এর মানে হল আল্লাহ সর্বশক্তিমান। কিন্তু সুরাতুল হাজ্জের শেষের দিকে আল্লাহ যেভাবে এই শব্দটি ব্যবহার করেছেন তা অসাধারণ চমকপ্রদ। আমি যুক্তি দেখাবো, একজন বিশ্বাসীর জন্য আল্লাহর ‘القوي’ হওয়ার মানে কী তা উপলব্ধি করার জন্য আল কুরআনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ জায়গাগুলোর একটি হল সুরাতুল হাজ্জের এই অংশটি। আমরা তাঁর সকল নামে বিশ্বাস করি কিন্তু তাঁর প্রত্যেকটি নাম কোন না কোনভাবে আমাদের উপকার করে। কোন না কোনভাবে আমাদের সাহায্য করে। القوي কীভাবে আমাদের সাহায্য করে? এটা শেখার অন্যতম একটি সেরা জায়গা হল ২২তম সূরা, সুরাতুল হাজ্জের শেষের অংশ। এই সূরায় আল্লাহ একটি উপমা পেশ করেন যেন মানুষ তাঁর সম্পর্কে একটি ব্যাপার উপলব্ধি করতে পারে। তিনি বলেন – يَا أَيُّهَا النَّاسُ ضُرِبَ مَثَلٌ فَاسْتَمِعُوا لَهُ – “হে লোক সকল! একটি উপমা বর্ণনা করা হলো, অতএব তোমরা তা মনোযোগ দিয়ে শোন;” এভাবেই তিনি শুরু করেছেন, একটি উপমা দেয়া হল মনোযোগ দিয়ে শ্রবণ করো। তিনি সাধারণত এভাবে বলেন – আল্লাহ একটি উপমা বর্ণনা করলেন। কিন্তু এখানে বলেছেন, একটি উপমা প্রদান করা হলো। ‘আমি একটি উপমা দিচ্ছি’ বলার পরিবর্তে। তিনি এখানে বক্তাকে আলোচনা থেকে গোপন করে ফেললেন। এটি একটি সাইড নোট – কিন্তু গুরুত্বপূর্ণ একটি – যা আমাদের জানা থাকা প্রয়োজন। আমি এখন আপনাদের সামনে দাঁড়িয়ে আছি। আমার একটি নির্দিষ্ট রূপ আছে, আমার দাঁড়ি আছে, আমার পোশাক এইরকম, আমার মাথায় টুপি আছে ইত্যাদি ইত্যাদি। আপনারা সরাসরি আমাকে দেখতে পাচ্ছেন। আমি কুরআন থেকে কিছু তিলাওয়াত করলে বা কোন আলোচনা করলে সেটাও আপনারা দেখতে পান। কিন্তু এমন একটি পরিস্থিতির...

রাসূলের ﷺ উপমা সূর্যের মত

– নোমান আলী খান আজ আমি আপনাদের সাথে আমাদের প্রিয় নবী (স) সম্পর্কে কিছু কথা এবং আমাদের সাথে তাঁর সম্পর্কের স্বরূপ কেমন হওয়া উচিত তার উপর আলোকপাত করতে চাই। আলোচনার প্রথম দিকে আপনাদের কাছে হয়তো এমনটি মনে হবে না। কিন্তু শেষের দিকে গেলে বিষয়টা পরিষ্কার হয়ে উঠবে যে আমি এ বিষয় নিয়েই কথা বলতে চেয়েছি। আমার নিজের জন্যেও, কুরআনে আমি যা কিছু অধ্যয়ন করেছি এটা সবচেয়ে শক্তিশালী শিক্ষা। এবং আমি এই শিক্ষা দ্বারা খুবই প্রভাবিত হয়েছি। আমি দোয়া করছি, এই সূরা থেকে যা কিছু আমি অধ্যয়ন করেছি এবং যে সৌন্দর্য উপলব্ধি করতে পেরেছি তার কিছু কিছু যেন আপনাদের সাথে শেয়ার করতে পারি। এই পাঠটি সূরা ইয়াসিনের অন্তর্গত। কুরআনের ছত্রিশ তম সূরা। আল্লাহ আজ্জা ওয়া জাল্লা এই সূরায় নবীদের অনন্যসাধারণ একটি ঘটনা বর্ণনা করেন। সাধারণত দেখা যায় আল্লাহ আজ্জা ওয়া জাল্লা একটি অঞ্চলের জন্য একজন রাসূল প্রেরণ করেন। কিন্তু এই ক্ষেত্রে আল্লাহ আজ্জা ওয়া জাল্লা বলেন – إِذْ أَرْسَلْنَا إِلَيْهِمُ اثْنَيْنِ – আল্লাহ তাদের জন্য দুইজন রাসূল প্রেরণ করেন।(36:14) فَكَذَّبُوهُمَا – আর সেই জাতি উভয় রাসূলকেই অস্বীকার করে। فَعَزَّزْنَا بِثَالِثٍ – “তখন আমি তাদেরকে শক্তিশালী করলাম তৃতীয় একজনের মাধ্যমে।” তাই দেখা যাচ্ছে, এই জাতির ঘটনা অন্য সব জাতির তুলনায় অনন্যসাধারণ। কারণ তিনজন রাসূল একই সময়ে তাদেরকে ইসলামের দাওয়াত দিচ্ছেন। এই রাসূলদের প্রতি তাদের প্রতিক্রিয়া ছিল…। আলোচনা চালিয়ে যাবার পূর্বে আরেকটি ব্যাপারে দৃষ্টি আকর্ষণ করতে চাই। মূসা (আ) কে – কুরআনে বর্ণিত সবচেয়ে ভয়ংকর ভিলেনদের একজন – ফেরাউনের মোকাবেলা করতে হয়েছিল। আর এই কাজে তিনি কার সাহায্য চান? হারুন (আ) এর। তাহলে তাঁরা ছিলেন দুইজন। এমনকি এই ক্ষেত্রেও আপনি যদি ভালভাবে কুরআন অধ্যয়ন করেন তাহলে দেখবেন, সব কথা মূসা (আ) বলেছিলেন, হারুন (আ) নীরব ছিলেন। সব কাজ মূসা (আ) করেছিলেন। হারুন...