ভিডিও + প্রতিলিপি
সীরাতুন্নাবী (সাঃ), ১ম – ৩য় পর্ব
১ম পর্ব অডিও ডাউনলোড লিঙ্কঃ http://bit.ly/2ffFZWN কল্পনা করুন তো, সবর্োত্তম চরিত্রের অধিকারী মানুষটির সংস্পষর্ আপনি প্রতিনিয়ত অনুভব করছেন। তাঁর চরিত্রের মাধুযর্ ক্ষণে ক্ষণে আপনার মনকে ছুঁয়ে যাচ্ছে।… এ ধরণীতে তাঁর সান্নিধ্য লাভের এ সৌভাগ্য অর্জন আর সম্ভব না হলেও পবিত্র সেই জীবন এবং জীবনের রোমাঞ্চকর-চমকপ্রদ ঘটনাপ্রবাহ জানা, তাঁর প্রিয়দের অন্তভর্ুক্ত হবার চেষ্টা করা আর তাঁর প্রতি ভালোবাসাপূণর্ অভিবাদন প্রেরণের অবারিত সুযোগ এখনো উন্মুক্ত ২য় পর্ব অডিও ডাউনলোড লিঙ্কঃ https://www.mediafire.com/?56eesqn7l4823qx ৩য় পর্ব অডিও ডাউনলোড লিঙ্কঃ...ইসলামের অত্যাবশ্যকীয় বিষয়সমূহ (২য় পর্ব)
২য় বৃত্তটি হচ্ছে মৌলিক বাধ্যবাধকতা, মূল করণীয় এবং মূল বর্জনীয় কাজসমূহ। উদাহরণসরূপ: আমরা সবাই জানি যে আমাদের ধর্মের ৫ টি মূল স্তম্ভ আছে। সালাত এর মধ্যে একটি। সালাত হচ্ছে মৌলিক করণীয়। কিন্তু প্রকৃত পক্ষে, এই বাধ্যবাধকতার মাধ্যমে (১ম বৃত্তে বর্ণিত) ইসলামের অত্যাবশ্যকীয় মূলনীতিগুলোর একটিকে পূরণ করা যায়। আমাদের মনে রাখতে হবে যে পূর্বে বর্ণিত মূলনীতিগুলোই কিন্তু সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। এমনকি আল্লাহ আমাদেরকে যেসব মৌলিক বাধ্যবাধকতা সেট করে দিয়েছেন এসবের উদ্দেশ্য হচ্ছে মূলনীতিগুলিকে সুদৃঢ় করা। যেমন ধরুন, আল্লাহ বলেছেন: ‘আকিমুসসালাতা লি যিকরি’ – ‘সালাত প্রতিষ্ঠা করো, যাতে করে তোমরা আমাকে স্মরণ করতে পারো’। আল্লাহকে স্মরণ করা কি একটি মৌলিক নীতি নয়? অবশ্যই! আল্লাহর স্মরণকে আমরা কিভাবে আমাদের প্রাত্যহিক জীবনে নিয়ে আসবো? এমন কি উপায়ে আমরা এটা করতে পারি যা আল্লাহকে সন্তুষ্ট করবে? এমনটি করার সবচেয়ে ভালো উপায় হচ্ছে সালাত। সালাত হচ্ছে এমন একটি মাধ্যম যেটা আল্লাহকে স্মরণ করার বিমূর্ত ধারণাটিকে বাস্তবিক সত্যে রূপান্তরিত করে। সিয়াম পালন করার বিষয়ে আল্লাহ বলেন: ‘কামা কুতিবা আলাল্লাযীনা মিন কাবলিকুম লা আল্লাকুম তাত্তাকুন’ – ‘তোমাদের সিয়াম পালন করতে বলা হয়েছে, যাতে করে তোমরা তাকওয়া অর্জন করতে পারো’। তাকওয়া হচ্ছে বিমূর্ত ধারণা। বাস্তবে এমন কি করা যেতে পারে যেটা তাকওয়ার এই বিমূর্ত ধারণাকে আমার জীবনযাত্রায় প্রতিফলিত করবে? কি সেটা? সিয়াম পালন করা এই ধরণের কাজসমূহের একটি। এইভাবে আপনারা দেখবেন যে, আল্লাহ প্রদত্ত প্রতিটি মৌলিক বাধ্যবাধকতা এক একটি মৌলিক নীতিকে সুদৃঢ় করে। বাধ্যবাধকতাগুলো দেয়া হয়েছে যাতে করে মৌলিক নীতিগুলিকে আমাদের প্রাত্যহিক জীবনে নিয়ে আসতে পারি। দূর্ভাগ্যজনকভাবে আমরা যা করেছি সেটা হচ্ছে, আমরা আল্লাহ প্রদত্ত এইসব বাধ্যবাধকতাগুলোকে সংশ্লিষ্ট নীতিমালগুলো থেকে আলাদা করে ফেলেছি। এর ফলে যেটা হয়েছে, মানুষ ঠিকই সিয়াম পালন করছে কিন্তু তাদের মধ্যে এই বোধটি নেই যে সিয়াম পালনের মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে তাকওয়া বৃদ্ধি করা। মানুষ সালাত...আপনার সন্তানকে কিভাবে ইসলামের শিক্ষা দিবেন?
আপনার সন্তানকে কিভাবে ইসলামের শিক্ষা দিবেন? বাংলা ডাবিং। নু’মান আলী খান। অডিও ডাউনলোড লিঙ্ক...একজন বাবা ও একটি কাকের গল্প
...জিব্রাইল আঃ এর গল্প (১ম পর্ব)
আপনি কীভাবে জিব্রাইল আঃ এর নাম বলেন, কীভাবে উচ্চারণ করেন তার নাম? জিব্রীল, জিব্রাই–ল, জিব্রাইল, জিব্রাই’ল, জিব্রিইল এই পাঁচ ভাবে তার নাম উচ্চারণ করা হয়। আর এটা বিভিন্ন কিরাতের মাধ্যমে বর্ণনা করা হয়েছে। এখানে বার বার কি শোনা যাচ্ছে? ই-ল। ই-ল মানে আল্লাহ সুব হানাহু ওয়া তায়ালা। এ নিয়ে কোন মতপার্থক্য নেই। জিবরা মানে বান্দাহ, দাস। তাহলে জিব্রাইল অর্থ- আল্লাহর দাস। সুতরাং এটা হলো তার নাম এবং নামের অর্থ। রাসূল সঃ এবং আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তায়ালা কিভাবে তাঁকে সম্বোধন করতেন? এটা আসলেই একটা মজার বিষয়। যখন আমি এই বিষয়ে গবেষণা করা শুরু করলাম, প্রথম দিন এটা দেখে খুব অবাক হলাম যে- কারণ আমি বুখারি শরীফ থেকে শুরু করেছিলাম। আমি বুখারি শরীফ থেকে জিব্রাইল আঃ সম্পর্কে বর্ণিত সকল হাদিস সংগ্রহ করলাম। প্রথম যে হাদিসে জিব্রাইল আঃ এর নাম উল্লেখ আছে, রাসুল সঃ বলেন, জিব্রিল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম। আমরা সাধারণত জিব্রিলকে আলাইহিস সালাম হিসেবে সম্বোধন করি। যার অর্থ তাঁর উপর শান্তি বর্ষিত হউক। কিন্তু রাসুল সঃ তাঁর উপর সালাওয়াত ও পেশ করলেন সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলে। রাসুল সঃ এটা করলেন জিব্রাইল আ এর উচ্চ মর্যাদার কারণে। আরেকটা ব্যাপার, রাসুল সঃ প্রায়ই তাঁর নাম বলে তাঁকে সম্বোধন করতেন না। জানেন, কিভাবে করতেন? তিনি বলতেন, যিনি আমার রবের নিকটে থাকেন। আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তায়ালা বিভিন্ন উপায়ে তাঁকে সম্বোধন করতেন। সব গুলো আমার পক্ষে বর্ণনা করা সম্ভব নয়। এটা আরেকটা বিশাল অধ্যয়নের ব্যাপার। ইনশাআল্লাহ ভবিষ্যতে এ বিষয়ে আলোচনা করা যাবে। তবে সবচেয়ে কমন যে বিষয়টি আপনি পাবেন তা হলো ‘রুহ’ শব্দটি, আত্মা, স্পিরিট। আল্লাহ তাঁকে বলেন আর রুহুল কুদুস(পবিত্র আত্মা), আর রুহুল আমিন(বিশ্বাসী আত্মা), রুহানা(আমাদের আত্মা), আল্লাহ তাঁকে আরও ডাকেন ‘রাসুলুন কারীম (সম্মানিত বার্তাবাহক) বলে। সর্বশেষ আর একটি নাম বলেই আমরা অগ্রসর...প্রবন্ধ
ইসলামি শিক্ষাব্যবস্থার জন্য একটি বিপ্লবের প্রয়োজন
ব্যাক্তিগতভাবে আমি মনে করি যে, ইসলামি শিক্ষাব্যবস্থার একটি বিপ্লব দরকার। এটা একান্তই আমার নিজস্ব মতামত, “ইসলামি শিক্ষাব্যবস্থার জন্য একটি বিপ্লবের প্রয়োজন” আমি এর দ্বারা কি বুঝাতে চাচ্ছি ? (দেখুন) আলেমদের জন্য ইসলামি অধ্যাপনার ব্যবস্থা আছে যেখানে তারা পড়াশুনা করবেন ফিকহ, হাদিস, তাফসীর, আকীদাহ নিয়ে, এগুলো সবই তারা চর্চা করবেন এবং (এভাবে) আপনিও একজন আলেম হবেন আর আপনি সেগুলো চর্চা করে অনেক উচু স্তরে যেতে পারেন। কিন্তু এর নিচেও একটি স্তর আছে, যেটা আসলে আমাদেরই তৈরি করা প্রয়োজন। যেটার বাস্তবে তেমন কোন অস্তিত্ব নেই, এখনো এবং (তাই) আমাদের প্রয়োজন ইসলাম শেখার একটি স্তর তৈরি করা শুধুমাত্র প্রতিদিন অনুশীলনের জন্য, প্রাত্যহিক জীবনে। আমি ফিকহ নিয়ে কথা বলছি না, আমি কথা বলছি বাবাদের জন্য উপদেশ নিয়ে, আমি কথা বলছি স্ত্রীদের জন্য উপদেশ নিয়ে, শুধু একটি পাঠ্যক্রম, কিভাবে হওয়া যায় একজন ভালো মুসলিম স্ত্রী? কিভাবে হওয়া যায় একজন ভালো মুসলিম স্বামী? কিভাবে হওয়া যায় একজন ভালো মুসলিম….. পিতা? কিভাবে হওয়া যায় একজন ভালো পুত্র? কিভাবে হওয়া যায় একজন ভালো কন্যা? এ ব্যাপারে মহান আল্লাহ তাআলার কি কি উপদেশ আছে? পুরো পাঠ্যক্রমটার ভিত্তি হবে কিভাবে আমাদেরকে ভাল মানুষে পরিণত করা যায়, এটাই হচ্ছে (প্রকৃত) শিক্ষা। প্রকৃত শিক্ষা এটা না যে, তুমি C++ কোডিং জানো, আর তুমি মাইক্রোসফটের কিছু একটায় সার্টিফাইড হয়েছো এবং তুমি সিসকো সার্টিফাইড হয়েছো আর এ সবগুলোর উপরে তোমার একটা একাউন্টিং ডিগ্রী আছে, এমবিএ ডিগ্রী আছে। এ সবকিছুরই মানে হলো, তুমি টাকা উপার্জন করতে সক্ষম কিন্তু তার মানে এই নয় যে, তুমি শিক্ষিত। এটার মানে শুধু এই যে, তুমি টাকা উপার্জন করতে সক্ষম। এতটুকুই, এ সবকিছুর মানে শুধু এতটুকুই। এগুলোর কোনোটাই তোমাকে একজন ভালো মানুষ হিসাবে গড়ে তুলবে না। আমি অনেক চিকিৎসকদেরকে চিনি যারা মানুষ হিসাবে ভয়ংকর, আমি অনেক প্রোগ্রামারদেরকেও চিনি যারা...আমাদের পরিবারঃ আমার চোখের শীতলতা
– উস্তাদ নোমান আলী খান হে আল্লাহ আমাদের সেই অপ্রত্যাশিত উপহার প্রদান করুন। কি সেই অপ্রত্যাশিত উপহার? رَبَّنَا هَبْ لَنَا مِنْ أَزْوَاجِنَا وَذُرِّيَّاتِنَا قُرَّةَ أَعْيُن- হে আমার প্রভু! স্ত্রী ও সন্তাদের দ্বারা আমার চোখ শীতল কর।অর্থাৎ, স্বামী বা স্ত্রী এবং সন্তান দেও যা আমাদের চোখ জুড়িয়ে দেয় ও চোখে আনন্দের অশ্রু বইয়ে দেয়। কুররাতা আইয়ুন, এর অর্থ কি আপনি জানেন? এর মানে এমন কিছু যা পাওয়ার আনন্দে আপনার চোখে আনন্দের অশ্রু চলে আসে। আপনি যখন দেখেন আপনার সন্তান কুরআন তিলাওয়াত করছে ও কুরআন তিলাওয়াত করতে ভালোবাসে তখন কি আনন্দে আপনার চোখে পানি আসে না কিংবা আপনার প্রিয়তমা স্ত্রী যখন অতি আদর-যত্নে বড় করে তোলে আপনার সন্তানদের তখন কি আপনার চোখ আনন্দে ভিজে যায় না? আপনি যখন দেখেন আপনার স্বামী আপনার সন্তানদের ফজরে ডেকে তোলে এবং তাদেরকে নিয়ে মসজিদে যায় তখনো আনন্দে আপনার চোখে অশ্রু চলে আসে, আপনি প্রচন্ড সুখ অনুভব করেন।অনেক স্বামী বা স্ত্রীকেই কাঁদতে দেখবেন কিন্তু তাদের এই কান্না কিন্তু আনন্দের কান্না না, তাদের এই কান্না অন্য কোন কারণে। আমরা আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করছি আনন্দের কান্নার জন্য, আমরা চাই আমাদের পরিবার নিয়ে সর্বোচ্চ সুখী হতে। কিন্তু সেটা কিভাবে হবেন? এখনো তো আপনি বাসায় গিয়ে আপনার স্ত্রীর সাথে ঝগড়া করেন। আপনি বাসায় গেলে আপনার স্ত্রী জিজ্ঞেস করে আপনার আসতে দেরি হলো কেন আর আপনিও তখন রেগেমেগে জবাব দেন এই বলে যে বারবার একই প্রশ্ন কেন করো, তুমি কি জানো না রাস্তায় কি পরিমাণ জ্যাম, জানালা দিয়ে বাইরে তাকালেই তো দেখতে পাও। এই ধরণের ঝগড়া নিয়মিতই হয় আর এরপর আপনি যখন আপনার সন্তানের কাছে যান তাকেও আপনি বকাঝকা করেন সে কেন খেলনা নিয়ে খেলছে বা কেন এত হাসাহাসি করছে, এত খুশির কি আছে এসব নিয়ে। তাকে বকা দেন তার হোমওয়ার্ক...আপনার ভিতরের প্রতিভাকে খুঁজে নিন
আল্লাহ সূরা বনি ইসরাইলে বলেছেন,” বলুন, ‘প্রত্যেকেই নিজ প্রকৃতি অনুযায়ী কাজ করে থাকে এবং আপনার রব সম্যক অবগত আছেন চলার পথে কে সবচেয়ে নির্ভুল।‘”-(১৭:৮৪) এটি সূরা বনী-ইসরাইলের একটি খুব সুন্দর আয়াত। আল্লাহ সুবহানাহু তায়ালা আমাদের প্রত্যেককে কঠিন পরিশ্রম করার নির্দেশ দিয়েছেন আমাদের নিজ প্রকৃতি,প্রবণতা,আকৃতি,গঠনের উপর ভিত্তি করে। এর মানে হচ্ছে আমাকে আল্লাহ বিভিন্ন রকমের দক্ষতা দিয়েছেন, বিভিন্ন রকমের জেনেটিক্স,বিভিন্ন রকমের প্রতিভা, শক্তির বিভিন্নতা আপনাদের থেকে। আপনাকে আমার চেয়ে ভিন্ন প্রকৃতি আপনাকে দেওয়া হয়েছে,বিভিন্ন সুযোগ,ভিন্নরকম জেনেটিক অবকাঠামো। আপনাকে কিছু প্রতিভা দেয়া হয়েছে,আমাকে অন্যরকম প্রতিভা দেয়া হয়েছে, অন্যজনকে অন্যরকম প্রতিভা দেয়া হয়েছে। প্রথম কথা হল আল্লাহ বলেছেন নিজের সক্ষমতা অনুযায়ী কাজ করতে। আমরা যখন আল্লাহর এই নির্দেশনা সঠিকভাবে পালন করিনা তখন কি হয়? সবাই চিন্তা করতে শুরু করে,আমার লক্ষ্য ওই মানুষটির সাথে তুলনা করে সাজানো উচিত। এই মানুষটি এই লক্ষ্যে,ওই লক্ষ্যে পৌঁছেছেন, আমি কেন পৌঁছাতে পারিনি। আমার ভাই মেডিকেল কলেজে খুব ভাল করেছে কিন্তু আমি বায়োলজি পছন্দ করিনা তাই আমি একজন ব্যার্থ। আপনি কিছু বুঝতে পারছেন না মানে হল আপনার বোঝার সক্ষমতা আপনার ভাইয়ের সক্ষমতার মাঝে পার্থক্য রয়েছে। আমি জানিনা, আপনি হয়ত একজন ভাল অলিম্পিক ক্রীড়াবিদ হতে পারেন। আমি জানিনা,আপনি হয়তো একজন খুব ভাল লেখক হতে পারেন। আপনাকে আপনার ভাইয়ের মত প্রতিভা না দিয়ে হয়ত অন্য প্রতিভা দেয়া হয়েছে। আল্লাহ বলেছেন,”আর যা দ্বারা আল্লাহ তোমাদের কাউকে কারো উপর শ্রেষ্ঠত্ব দিয়েছেন তোমরা তার লালসা করো না।”(সূরা: নিসা- ৪:৩২) আল্লাহ কাউকে একটা বিষয়ে খুব ভাল দক্ষতা দিয়েছেন,হয়ত সে বিষয়ে আপনার দক্ষতা একদম কম,আবার আপনাকে যে বিষয়ে দক্ষতা দিয়েছেন অন্যজনের সে বিষয়ে হয়ত দক্ষতা নেই। তাই প্রথম কথা হল, এই আয়াতগুলোর মাদ্ধমে বলতে চাচ্ছি- আল্লাহ আমাদের একটি সুন্দর নির্দেশনা দিয়েছেন,নির্দেশনা মানে হল আমাদেরকে একটি লক্ষ্যে পৌঁছান। আজকাল অনেক মানুষের মনে প্রশ্ন আছে,তারা জিজ্ঞেস করে,...সেই বিবাহ প্রস্তাবটি
— উস্তাদ নোমান আলী খান আপনাদের সাথে মুসা আলাইহিস সালামের কাহিনীর একটি অংশ আজ শেয়ার করতে যাচ্ছি। যা ঘটেছিল – মূসা আলাইহিস সালাম দুজন নারীকে সাহায্য করেন যারা তাকে উত্তম বিবেচনা করে তাদের ঘরে আমন্ত্রণ জানায় যাতে অর্থের বিনিময়ে তিনি তাদের জন্য কাজ করেন। তিনি তাদের ঘরে আসেন আর নিজের কাহিনী বিস্তারিত তাদের বলেন – কিভাবে তিনি মিশর থেকে পালালেন, আর সেখানে কিভাবে তাকে হত্যার অপরাধে অভিযুক্ত করা হয়েছে, এবং তিনি যে গৃহহীন ও আশ্রয় পেতে আগ্রহী ইত্যাদি। সেই নারীরা ঘরের অন্য পাশ থেকে সব শুনছিলেন, তন্মধ্যে একজন তাদের পিতাকে ডাকলেন আর তাকে কিছু জানালেন। এই বিষয়টি কুরআনে উল্লিখিত হয়েছে, অর্থাৎ এটি গুরুত্বপূর্ণ। সে নারীটি পিতাকে ডেকে বললেন, يا ابت استاجره প্রিয় আব্বা, তাকে কাজের জন্য নিয়ে নিন। দারুন। এই বৃদ্ধ লোকটির দুটি কন্যা রয়েছে, কিন্তু কোন পুত্রসন্তান নেই, স্বাভাবিক যে এ কারনেই তাকে তাঁর মেয়েদেরকেই পাঠাতে হয় যেকোন কাজের জন্য। মেয়েটি ভাল করেই জানে, যদি মুসাকে কাজের জন্য নেয়া হয় তাহলে তাকে অবিবাহিত এই নারীদের আশেপাশেই কাজ করতে হবে – যা অস্বস্তিকর পরিস্থিতির সৃষ্টি করবে। তো সে জানে বা বুঝতে পারছিল যে যদি তাকে ভাড়ায় নেয়া হয় – সুযোগ থাকে তাদের দুইজনের একজনের সাথেই তাঁর বিয়ে হবে । আর সে নিজেই যখন এই কথা বলছে, সুযোগ বেশি যে আব্বা তার ইংগিত বুঝবে – আব্বা, আমার মনে হয় বিবাহের জন্য সে এক উত্তম পুরুষ। তো প্রথমেই যে বিষয়টি এখান থেকে আপনারা বুঝতে পারেন, এই নারীর আত্মবিশ্বাস ছিল যে সে নিজের বিয়ের জন্য আব্বাকে কারও সম্পর্কে বলতে পারে। কোন কন্যাসন্তান বিবাহের ব্যাপারে কোন ছেলের প্রতি আগ্রহী থাকলে, তার পিতাকে ইঙ্গিত দিয়ে জানানোতে কোনই অন্যায় নেই। বড় একটি বিষয় যা এখান থেকে পাওয়া যায়। এতে কোন ক্ষতি নেই, লজ্জার ও...আলেমদের ঝগড়ার কারনেই পরবর্তী প্রজন্ম বিশ্বাস হারাচ্ছে
নোমান আলি খান وان الذين اورثوا الكتاب من بعدهم لفي شك منه مريب তিনি বলেন – কোন সন্দেহ নেই যে যারা তাদের পরবর্তীতে বংশগতভাবে কিতাব পেয়েছিল, যাদের কিতাব দেয়া হয়েছিল উত্তরাধিকার সূত্রে اورثوا الكتاب من بعدهم শব্দগুলো নিয়ে একটু ভেবে দেখুন। সাধারণভাবে এখানে পরের প্রজন্ম নিয়ে তিনি বলছেন, ঠিক কিনা ? পরবর্তী জেনারেশানের মুসলিমরা। কিন্তু তিনি এটা কিভাবে বলছেন ? তিনি বোঝাতে চাচ্ছেন যে, যারা উত্তরাধিকারসূত্রে এই দ্বীন পেয়েছিল প্রথম প্রজন্ম থেকে – সেই প্রথম প্রজন্ম ব্যাস্ত ছিল অনৈক্য ও বিভাগ-বিভাজনে। তো এ থেকে আমাদের পরবর্তী প্রজন্ম কী শিখবে ? বুঝতে পারছেন? তারা তাদের বড়দের যা যা করতে দেখেছিল, যেভাবে তাদেরকে দ্বীন অনুসরণ করতে দেখেছিল – সেটা এতটাই কুতসিত ছিল, এতটাই সামঞ্জস্যহীন ছিল.. কেননা আমরা জানি ধর্ম হওয়ার কথা এমন কিছু যা কিনা খুবই চমৎকার, এটা সমাজে ঐক্য নিয়ে আসে। উম্মাহর ভেতর একতার বিকাশ ঘটায়। এটা اشداء على الكفار رحماء بينهم সৃষ্টি করে। হ্যা এমন অবস্থারই প্রবর্তন করে । এটা পুরোপুরি উলটো বিষয়ের প্রবর্তন ঘটায়। কিন্তু পরবর্তীতে এমন প্রজন্মের আবির্ভাব ঘটলো যারা বিভেদ, অনৈক্যের মানুষদের থেকে দ্বীন শেখা শুরু করলো। হ্যা এটা নতুন প্রজন্ম। এখন এই নতুন প্রজন্মের ব্যাপারে তিনি কী বলেন !?… তারা দেখতে পেল সেই বিষয়ের কদাকার চিত্র যা তাদের হাতে পৌছেছিল । তারা এখন আর এই কিতাবকে চমৎকার কিছু হিসেবে দেখে না। এই দ্বীনকে সুন্দর কিছু বলে মনে করে না। তারা আসলে ভয়ঙ্কর একটা রুপ তাদের সামনে দেখে থাকে। তো তাদের কী অবস্থা হয় জানেন ? এই পরবর্তী প্রজন্ম ? لفي شك منه তারা এ ব্যাপারে সংশয়তে ভোগে । পরবর্তী প্রজন্ম, তারা নিজেদের দ্বীনকেই সন্দেহ করতে শুরু করে। সুবহানাল্লাহ। এ কেমন মূল, যা পরিশোধ করতে হচ্ছে, এই অপরাধের দরুন ! এখানে এমন মানুষজন রয়েছে যারা দ্বীন...মু’জিযা
কুরআনের মু’জিযা – চাঁদ, সূর্য, লোহা
<> চাঁদ-সূর্য <> ২৫ নাম্বার সূরা ফুরকানে আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তায়ালা বলেছেন – تَبَارَكَ الَّذِي جَعَلَ فِي السَّمَاءِ بُرُوجًا وَجَعَلَ فِيهَا سِرَاجًا وَقَمَرًا مُّنِيرًا (আয়াত ৬১) আকাশ এবং পৃথিবীতে থাকা বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আল্লাহ কথা বলেছেন। ”পূন্যময় তিনি যিনি আকাশে নক্ষত্ররাজি স্থাপন করেছেন।” তার পর বলছেন, ”আর আকাশে তিনি প্রদীপ স্থাপন করেছেন।” তিনি এই আয়াতে সূর্যকে প্রদীপ বলেছেন -সিরাজ। ‘’ও কামারাম মুনিরা।’’ ‘কামার’ অর্থ চাঁদ। কিন্তু এর পরের ‘মুনির’ শব্দটি আসলে বৈজ্ঞানিক। যদি আপনি এভাবে বলতে চান। মুনির শব্দের অর্থ যাকে আলো দেয়া হয়েছে। এমনকিছু যাতে প্রতিবিম্বিত আলো আছে। তাহলে দুটি শব্দ। একটি হলো সিরাজ, যা দ্বারা বুঝায় আলোর উৎস। আরেকটি(মুনির) হল আলোর গ্রাহক। যখন সূর্যের কথা আসলো তখন তিনি বললেন সিরাজ বা বাতি। আর যখন চাঁদের কথা আসলো তিনি বললেন- মুনির বা যার উপর আলো প্রতিবিম্বিত হয়। সুতরাং এমন এক সময় যখন এটা সবার জানা ছিল না তখন আল্লাহ বলছেন, চাঁদ নিজের আলো দিচ্ছে না। এখন আমরা সবাই জানি, চাঁদ সূর্যের আলোয় আলোকিত হয়। কিন্তু ১৫০০ বছর আগে এটা এতোটা সুস্পষ্ট ব্যাপার ছিল না। মনে হত এটা নিজের আলোই বিতরণ করছে। <> লোহা <> সুতরাং এই আয়াত বলছে- আমি লোহা প্রেরণ করেছি। এটা ৫৭ নাম্বার সূরা হাদিদে আছে। আল্লাহ এখানে বলেছেন আমি লোহা প্রেরণ করেছি। আল্লাহ কুরআনে বহু কিছু সৃষ্টি করার কথা বলেছেন। আর এর জন্য তিনি ‘খালাকা’ (সৃষ্টি করা) ক্রিয়াপদ ব্যবহার করেছেন। তিনি পৃথিবী এবং মহাকাশ সৃষ্টি করেছেন, তিনি জীবন মৃত্যু সৃষ্টি করেছেন, ইত্যাদি ইত্যাদি সৃষ্টি করেছেন। কিন্তু যখন লোহার কথা আসলো তিনি বলেননি যে, তিনি সৃষ্টি করেছেন। তিনি বলেছেন এটা প্রেরণ করেছেন। অতীতের আলেমরা এই আয়াত ব্যাখ্যা করতে হিমশিম খেতেন যে কেন আল্লাহ প্রেরণ করা বললেন। কারণ আল্লাহর কথা খুবই স্পষ্টরূপে নির্দিষ্ট, এটা আমাদের বিশ্বাস।...কুর’আনের মু’জিজা – বৃত্তাকার গঠন বিন্যাস
কুরআনের গঠন বিন্যাস একটি অন্যতম কারণ যার জন্যে মুসলিমরা বিশ্বাস করে যে এটা একমাত্র সৃষ্টিকর্তার পক্ষ থেকেই অবতীর্ণ হতে পারে। আধুনিক গবেষণায় পাওয়া গিয়েছে যে কুরআনের একটি বিশেষ গঠন বিন্যাস রয়েছে। এই বিন্যাসের নাম হল “বৃত্তাকার গঠন বিন্যাস”। এটির উদাহরণের জন্য আসুন আমরা কুরআনের দ্বিতীয় সুরাটি নিয়ে পর্যালোচনা করি। এর নাম হল “বাকারা” অর্থাৎ গাভী। এই সুরাটিতে মোট ২৮৬ টি আয়াত আছে। পুরো সুরাটিকে ৯ টি অংশে ভাগ করা যেতে পারে, বিষয়বস্তুর উপর ভিত্তি করে। প্রথম অংশের আয়াতগুলোতে আলোচনা করা হয়েছে বিশ্বাস এবং অবিশ্বাস নিয়ে। এই একি আলোচনার প্রতিফলন হয়েছে ৯ম অংশে। ২য় অংশে আলোচিত হয়েছে সৃষ্টি রহস্য এবং জ্ঞান নিয়ে, যার প্রতিফলন হয়েছে শেষ থেকে ২য় অর্থাৎ ৮ম অংশে। ৩য় অংশে আছে সেইসব আইন যা বনী ইসরাইলকে দেয়া হয়েছিল। যার প্রতিফলন হয়েছে ৭ম অংশে, যেখানে আছে মুসলিমদেরকে দেয়া আইনগুলো। ৪র্থ অংশে আছে ইব্রাহিম (আঃ) এর পরীক্ষাগুলো, যার প্রতিফলন হল মুসলিমদের জন্যও পরীক্ষা, যা হল ষষ্ঠ অংশের বিষয়। আর মাঝের অংশ অর্থাৎ ৫ম অংশটি হল পুরো সুরাটির মুখ্য আলোচনা, সালাতের কিবলার দিক পরিবর্তন। “এমনিভাবে আমি তোমাদেরকে মধ্যপন্থী সম্প্রদায় করেছি যাতে করে তোমরা সাক্ষ্যদাতা হও মানবমন্ডলীর জন্যে…. আপনি যে কেবলার উপর ছিলেন, তাকে আমি এজন্যই কেবলা করেছিলাম, যাতে একথা প্রতীয়মান হয় যে, কে রসূলের অনুসারী থাকে আর কে পিঠটান দেয়।” (আল কুরআন ২:১৪৩) এই কিবলার পরিবর্তন, যা ছিল জেরুসালেম থেকে মক্কার দিকে, এটি ছিল আসলে বিশ্বাসীদের জন্যও এক বিরাট পরীক্ষা। আর এই ঘুরে দাঁড়ানোর উল্লেখ আমরা দেখতে পাই সুরাটির ঠিক মধ্যম অংশে। ঠিক ১৪৩তম আয়াতে। আরও উল্লেখ্য হল এই আয়াতেই আছে ”মধ্যপন্থী সম্প্রদায়” শব্দটি। এই ৯ টি অংশ একসাথে একটি বিশাল বৃত্তাকার বিন্যাস গঠন করে। খুব সহজেই দেখা যাচ্ছে যেঁ এই বৃত্তাকার বিন্যাসটি হল একটি পূর্ণ বৃত্ত যার মূল অর্থটি...সূরা ওয়াকিয়া এবং আর রাহমানের বিস্ময়কর মিল
সূরা ওয়াকিয়া এবং আর রাহমানের বিস্ময়কর মিলঃ উভয় সুরাতেই ৫টি বিষয় নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে। <> সূরা আর-রাহমানের বিষয়বস্তুগুলো হলো… ১। কুরআন; করুনাময় আল্লাহ শিক্ষা দিয়েছেন কুর’আন। ২। আল্লাহর সৃষ্টি; যেমন সূর্য ও চন্দ্র হিসাবমতো চলে এবং তৃণলতা ও বৃক্ষাদি সেজদারত অবস্থায় আছে। ৩। বিচার দিবস এবং অপরাধীদেরকে কীভাবে জাহান্নামে নিয়ে যাওয়া হবে; (৩৭ নাম্বার আয়াত থেকে…)। ৪। জান্নাত; (৪৬ নং আয়াত থেকে… যে ব্যক্তি তার পালনকর্তার সামনে পেশ হওয়ার ভয় রাখে, তার জন্যে রয়েছে দুটি উদ্যান…)। এরা ঈমানদারদের সর্বশ্রেষ্ঠ দল নয়, বরং এরা শুধু আল্লাহকে ভয় করতো, তাই এরা দু’টি জান্নাত পাবে। ৫। জান্নাতের সুপার স্পেশাল ডিলাক্স প্যাকেজ (৬২ নাম্বার আয়াত থেকে…)। <> সূরা ওয়াকিয়ার বিষয়বস্তুগুলো হলো… ১। সাবিকুন (জান্নাতের এলিট গ্রুপ)। ২। আসহাবুল ইয়ামিন (তারা হবেন দ্বিতীয় শ্রেণীর জান্নাতী)। ৩। আসহাবুস শিমাল (বাম পাশের মানুষ, যারা হবেন জাহান্নামের অধিবাসী। ৪। আল্লাহর সৃষ্টি। এই পর্যায়ে আল্লাহ বিভিন্ন বিষয়ে প্রশ্ন করেন। যেমনঃ ‘আমি মানুষ সৃষ্টি করি, না তোমরা মানুষ সৃষ্টি কর? আমি ফসল উৎপন্ন করি, না তোমরা উৎপন্ন কর? আমি আগুন সৃষ্টি করেছি, না তোমরা সৃষ্টি করেছ? আমি আকাশ থেকে পানি বর্ষণ করি, না তোমরা কর?’ এই প্রশ্নগুলোর মানে হলোঃ আল্লাহ মানুষকে বলছেন এই বিষয়ে চিন্তা করার জন্য যে আল্লাহ সৃষ্টি করেন, মানুষ সৃষ্টি করে না । মানুষের সৃষ্টি করার কোন ক্ষমতাই নেই। ৫। আল কুরআন, এই পর্যায়ে আল কুরআনের মাহাত্ম্য এবং বিস্ময়কর শ্রেষ্ঠত্ব নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে। আর সূরার শেষে এই পাঁচটি বিষয়ের সারমর্ম তুলে ধরা হয়েছে। এখন দেখুন, <> সূরা আর রাহমানের ১ নম্বর বিষয়বস্তু হলো আল কুরআন, আর সূরা ওয়াকিয়ার ৫ নম্বর বিষয়বস্তু হলো আল কুরআন। <> সূরা আর রাহমানের ২ নম্বর বিষয়বস্তু হলো আল্লাহর সৃষ্টি, আর সূরা ওয়াকিয়ার ৪ নম্বর বিষয়বস্তু হলো আল্লাহর সৃষ্টি। <>...রাসূলুল্লাহ (স) এর কয়েকটি মু’জিযা
জড় পদার্থের মাধ্যমে যে সব মিরাকল ঘটেছে। রাসূল (স) এর যে সব মু’জিযা নিষ্প্রাণ কোনো বস্তুর মাধ্যমে ঘটেছে; পাথর, শিলা এরকম পদার্থের মাধ্যমে… এমন কিছু ঘটনা এখন আপনাদের নিকট উপস্থাপন করবো। এরকম অসংখ্য ঘটনার কথা বর্ণিত আছে। যেমন সহীহ বুখারীতে এসেছে – “রাসূল (স) বলেছেন, এখনো আমি এমন একটি পাথরকে শনাক্ত করতে পারি, যেটি নবুয়ত পাওয়ার পূর্বে মক্কায় অবস্থানকালে যখনই আমি এর পাশ দিয়ে গমন করতাম আমাকে সালাম জানাতো।” ইবনে মাসউদ (রা) বর্ণনা করেন, একদা আমরা রাসূল (স) এর নিকট অবস্থানকালে শুনতে পেলাম যে, খাবার তাসবীহ পাঠ করছে। এটিও বুখারীতে বর্ণিত আছে। রাসূল (স) মুখে খাবার তুলছেন আর সেই খাবার ‘সুবহানাল্লাহ’ পাঠ করছে। আরেকটি হাদিসে আবু যার আল গিফারী (রা) বর্ণনা করেন, আমি একবার একটি জমায়েতে আবু বকর, উমর, উসমান, আলীসহ অন্যান্য সাহাবাদের সঙ্গে ছিলাম। রাসূল (স) কিছু নুড়ি পাথর তাঁর হাতে নিলেন। আর আমরা সবাই শুনতে পেলাম যে, নুড়ি পাথরগুলো আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তায়ালার গুণকীর্তন করছে। রাসূল (স) পাথরগুলো আবু বকরের নিকট হস্তান্তর করলেন, আর তারা আবু বকরের হাতেও আল্লাহর প্রশংসা করতে লাগলো। রাসূল (স) আবু বকরের হাত থেকে পাথরগুলো নিয়ে ওমরের হাতে দিলেন, জমায়েতের সবাই শুনতে পেল উমরের হাতে গিয়েও পাথরগুলো ‘সুবহানাল্লাহ’ তাসবীহ পাঠ করছে। তারপর রাসূল (স) ওমরের হাত থেকে পাথরগুলো নিয়ে উসমানের (রা) হাতে দিলেন, পাথরগুলো তখনও তাসবীহ পাঠ করতে লাগলো। আর আমরা সবাই সেই তাসবীহ পাঠ শুনতে পেলাম। এরপর রাসূল (স) ঐ স্থান ত্যাগ করে চলে গেলেন। আমরা তখন পাথরগুলো হাতে নিলাম, কিন্তু কেউ আর কোনো আওয়াজ শুনতে পেলাম না। এই হাদীসটি তাবারানীর আল আওসাতে বর্ণিত আছে। এখানে লক্ষ্যণীয় বিষয় হলো -সুবহানাল্লাহ! রাসূল (স) নুড়ি পাথরগুলো হাতে তুলে নিলেন আর শুনতে পেলেন সেই পাথরগুলো আল্লাহর প্রশংসা করছে। পাথরগুলো ইতিমধ্যে আল্লাহর প্রশংসা করছে, তিনি সেগুলো...অন্তর এবং বুদ্ধির সম্পর্ক
আমাদের ধর্মের একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ পাঠ হলো অন্তর এবং বুদ্ধির সম্পর্ক। যখন আল্লাহ বলেন – ‘লাআল্লাকুম তা’কিলুন’, যেন তোমরা চিন্তা করতে পারো’… তিনি এখানে ‘আকল’ শব্দটি ব্যবহার করেছেন। ‘আকল’ এর অবস্থান আপনার মস্তিষ্কে। আরবিতে ‘আকালা’ শব্দের অর্থ হলো – বুঝতে পারা। এর আরেকটি অর্থ হলো – কোনো কিছু বাঁধা। তাহলে ‘আকালা’ দ্বারা দুইটি বিষয় বোঝায় – বুঝতে পারা এবং কোনো কিছুকে শৃঙ্খলিত করা। যখন আমরা কোনো কারণে মানসিকভাবে অভিভূত হয়ে পড়ি, আমরা ভালোভাবে চিন্তা করতে পারি না। যদি আপনি অতিমাত্রায় রাগান্বিত হয়ে পড়েন, আপনি চিন্তা ভাবনা ছাড়াই অনেক কিছু বলে ফেলেন। যদি কোনো কিছুতে চরম খুশি হয়ে পড়েন, তাহলেও চিন্তা ভাবনা ছাড়া কিছু একটা করে ফেলেন। যদি অতিশয় দুঃখিত হয়ে পড়েন, তখনও চিন্তা ভাবনা ছাড়া কাজ করে ফেলেন। তাহলে দেখা যাচ্ছে কখনো কখনো আবেগ আপনাকে সঠিকভাবে চিন্তা ভাবনা করতে বিরত রাখে। এখন, আকল এর কাজ হলো আপনার আবেগকে এমনভাবে নিয়ন্ত্রণে রাখা যেন আপনি সঠিকভাবে চিন্তা করতে পারেন। তাই, আকল অর্থ শুধু বুঝতে পারা নয়, এর অর্থ হলো – প্রথমে আবেগকে নিয়ন্ত্রণে রাখা এবং তারপর বুঝতে পারা। ঘৃণা, রাগ, ভয় এ ধরণের মানবীয় আবেগের প্রভাবমুক্ত হয়ে চিন্তা ভাবনা করতে পারার নামই হলো আকল। অনেক সময় দেখা যায়, আপনি যদি কাউকে ঘৃণা করেন সে সঠিক কথা বললেও আপনি তা মানতে চান না। বনী ইসরাইলের ক্ষেত্রে দেখা যায়, তাদের নিকট সকল প্রমান উপস্থাপন করা সত্ত্বেও তারা রাসূল (স) কে মেনে নিচ্ছিলো না। কারণ তাদের অন্তর তালাবদ্ধ হয়ে পড়েছিল। অহংকার তাদের ‘কলব বা অন্তর’ ঢেকে ফেলেছিলো। তাই তাদের বুদ্ধি সকল প্রমান দেখা সত্ত্বেও রাসূল (স) কে স্বীকার করেনি। “দেখো দেখো তাওরাতেও এ সম্পর্কে বলা হয়েছে…আর কুরআনে বলা হয়েছে ‘মুসাদ্দিকুল লিমা মা’আকুম, এটা তোমাদের নিকট যা নাজিল হয়েছিল তার সত্যতার সাক্ষী দিচ্ছে।’ না, আমি...(Visited 106,786 times, 16 visits today)