উস্তাদ নুমান আলী খান

নুমান আলী খান একজন মুসলিম দা’ঈ। কুর’আন এর জ্ঞানে তার অসাধারণ গভীরতা এবং সুন্দর উপস্থাপনা শৈলীর কারণে সমগ্র বিশ্বের তরুণ প্রজন্মের কাছে তিনি অত্যন্ত জনপ্রিয় একজন ব্যক্তিত্ব। বাংলাদেশ এবং বাংলাভাষাভাষী অনেক ইসলাম অনুরাগী তরুণ তাঁর অসাধারণ আলোচনা থেকে উপকৃত হচ্ছে নিয়মিত …

সংক্ষিপ্ত পরিচিতি

আমাদের সাথে সংযুক্ত থাকুন

বর্তমানে আমরা ফেইসবুক ও ইউটিউব চ্যানেল এ নুমান আলী খানের লেকচার গুলো নিয়মিত প্রকাশ করছি এবং এই ওয়েবসাইট এর মাধ্যমে তা শ্রেণীবদ্ধ ভাবে সংরক্ষণ করছি। আপনি আমাদের ফেইসবুক ও ইউটিউব চ্যানেল লাইক /সাবস্ক্রিপশন করে আমাদের সাথে আরো নিবিড় ভাবে সংযুক্ত থাকতে পারেন।

আমাদের ওয়েবসাইট ভিজিট করার জন্য আপনাকে অভিনন্দন…

সংযুক্ত থাকুন

ভিডিও + প্রতিলিপি

সীরাতুন্নাবী (সাঃ), ১ম – ৩য় পর্ব

১ম পর্ব  অডিও ডাউনলোড লিঙ্কঃ http://bit.ly/2ffFZWN কল্পনা করুন তো, সবর্োত্তম চরিত্রের অধিকারী মানুষটির সংস্পষর্ আপনি প্রতিনিয়ত অনুভব করছেন। তাঁর চরিত্রের মাধুযর্ ক্ষণে ক্ষণে আপনার মনকে ছুঁয়ে যাচ্ছে।… এ ধরণীতে তাঁর সান্নিধ্য লাভের এ সৌভাগ্য অর্জন আর সম্ভব না হলেও পবিত্র সেই জীবন এবং জীবনের রোমাঞ্চকর-চমকপ্রদ ঘটনাপ্রবাহ জানা, তাঁর প্রিয়দের অন্তভর্ুক্ত হবার চেষ্টা করা আর তাঁর প্রতি ভালোবাসাপূণর্ অভিবাদন প্রেরণের অবারিত সুযোগ এখনো উন্মুক্ত ২য় পর্ব অডিও ডাউনলোড লিঙ্কঃ https://www.mediafire.com/?56eesqn7l4823qx ৩য় পর্ব অডিও ডাউনলোড লিঙ্কঃ...

ইসলামের অত্যাবশ্যকীয় বিষয়সমূহ (২য় পর্ব)

২য় বৃত্তটি হচ্ছে মৌলিক বাধ্যবাধকতা, মূল করণীয় এবং মূল বর্জনীয় কাজসমূহ। উদাহরণসরূপ: আমরা সবাই জানি যে আমাদের ধর্মের ৫ টি মূল স্তম্ভ আছে। সালাত এর মধ্যে একটি। সালাত হচ্ছে মৌলিক করণীয়। কিন্তু প্রকৃত পক্ষে, এই বাধ্যবাধকতার মাধ্যমে (১ম বৃত্তে বর্ণিত) ইসলামের অত্যাবশ্যকীয় মূলনীতিগুলোর একটিকে পূরণ করা যায়। আমাদের মনে রাখতে হবে যে পূর্বে বর্ণিত মূলনীতিগুলোই কিন্তু সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। এমনকি আল্লাহ আমাদেরকে যেসব মৌলিক বাধ্যবাধকতা সেট করে দিয়েছেন এসবের উদ্দেশ্য হচ্ছে মূলনীতিগুলিকে সুদৃঢ় করা। যেমন ধরুন, আল্লাহ বলেছেন: ‘আকিমুসসালাতা লি যিকরি’ – ‘সালাত প্রতিষ্ঠা করো, যাতে করে তোমরা আমাকে স্মরণ করতে পারো’। আল্লাহকে স্মরণ করা কি একটি মৌলিক নীতি নয়? অবশ্যই! আল্লাহর স্মরণকে আমরা কিভাবে আমাদের প্রাত্যহিক জীবনে নিয়ে আসবো? এমন কি উপায়ে আমরা এটা করতে পারি যা আল্লাহকে সন্তুষ্ট করবে? এমনটি করার সবচেয়ে ভালো উপায় হচ্ছে সালাত। সালাত হচ্ছে এমন একটি মাধ্যম যেটা আল্লাহকে স্মরণ করার বিমূর্ত ধারণাটিকে বাস্তবিক সত্যে রূপান্তরিত করে। সিয়াম পালন করার বিষয়ে আল্লাহ বলেন: ‘কামা কুতিবা আলাল্লাযীনা মিন কাবলিকুম লা আল্লাকুম তাত্তাকুন’ – ‘তোমাদের সিয়াম পালন করতে বলা হয়েছে, যাতে করে তোমরা তাকওয়া অর্জন করতে পারো’। তাকওয়া হচ্ছে বিমূর্ত ধারণা। বাস্তবে এমন কি করা যেতে পারে যেটা তাকওয়ার এই বিমূর্ত ধারণাকে আমার জীবনযাত্রায় প্রতিফলিত করবে? কি সেটা? সিয়াম পালন করা এই ধরণের কাজসমূহের একটি। এইভাবে আপনারা দেখবেন যে, আল্লাহ প্রদত্ত প্রতিটি মৌলিক বাধ্যবাধকতা এক একটি মৌলিক নীতিকে সুদৃঢ় করে। বাধ্যবাধকতাগুলো দেয়া হয়েছে যাতে করে মৌলিক নীতিগুলিকে আমাদের প্রাত্যহিক জীবনে নিয়ে আসতে পারি। দূর্ভাগ্যজনকভাবে আমরা যা করেছি সেটা হচ্ছে, আমরা আল্লাহ প্রদত্ত এইসব বাধ্যবাধকতাগুলোকে সংশ্লিষ্ট নীতিমালগুলো থেকে আলাদা করে ফেলেছি। এর ফলে যেটা হয়েছে, মানুষ ঠিকই সিয়াম পালন করছে কিন্তু তাদের মধ্যে এই বোধটি নেই যে সিয়াম পালনের মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে তাকওয়া বৃদ্ধি করা। মানুষ সালাত...

জিব্রাইল আঃ এর গল্প (১ম পর্ব)

আপনি কীভাবে জিব্রাইল আঃ এর নাম বলেন, কীভাবে উচ্চারণ করেন তার নাম? জিব্রীল, জিব্রাই–ল, জিব্রাইল, জিব্রাই’ল, জিব্রিইল এই পাঁচ ভাবে তার নাম উচ্চারণ করা হয়। আর এটা বিভিন্ন কিরাতের মাধ্যমে বর্ণনা করা হয়েছে। এখানে বার বার কি শোনা যাচ্ছে? ই-ল। ই-ল মানে আল্লাহ সুব হানাহু ওয়া তায়ালা। এ নিয়ে কোন মতপার্থক্য নেই। জিবরা মানে বান্দাহ, দাস। তাহলে জিব্রাইল অর্থ- আল্লাহর দাস। সুতরাং এটা হলো তার নাম এবং নামের অর্থ। রাসূল সঃ এবং আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তায়ালা কিভাবে তাঁকে সম্বোধন করতেন? এটা আসলেই একটা মজার বিষয়। যখন আমি এই বিষয়ে গবেষণা করা শুরু করলাম, প্রথম দিন এটা দেখে খুব অবাক হলাম যে- কারণ আমি বুখারি শরীফ থেকে শুরু করেছিলাম। আমি বুখারি শরীফ থেকে জিব্রাইল আঃ সম্পর্কে বর্ণিত সকল হাদিস সংগ্রহ করলাম। প্রথম যে হাদিসে জিব্রাইল আঃ এর নাম উল্লেখ আছে, রাসুল সঃ বলেন, জিব্রিল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম। আমরা সাধারণত জিব্রিলকে আলাইহিস সালাম হিসেবে সম্বোধন করি। যার অর্থ তাঁর উপর শান্তি বর্ষিত হউক। কিন্তু রাসুল সঃ তাঁর উপর সালাওয়াত ও পেশ করলেন সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলে। রাসুল সঃ এটা করলেন জিব্রাইল আ এর উচ্চ মর্যাদার কারণে। আরেকটা ব্যাপার, রাসুল সঃ প্রায়ই তাঁর নাম বলে তাঁকে সম্বোধন করতেন না। জানেন, কিভাবে করতেন? তিনি বলতেন, যিনি আমার রবের নিকটে থাকেন। আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তায়ালা বিভিন্ন উপায়ে তাঁকে সম্বোধন করতেন। সব গুলো আমার পক্ষে বর্ণনা করা সম্ভব নয়। এটা আরেকটা বিশাল অধ্যয়নের ব্যাপার। ইনশাআল্লাহ ভবিষ্যতে এ বিষয়ে আলোচনা করা যাবে। তবে সবচেয়ে কমন যে বিষয়টি আপনি পাবেন তা হলো ‘রুহ’ শব্দটি, আত্মা, স্পিরিট। আল্লাহ তাঁকে বলেন আর রুহুল কুদুস(পবিত্র আত্মা), আর রুহুল আমিন(বিশ্বাসী আত্মা), রুহানা(আমাদের আত্মা), আল্লাহ তাঁকে আরও ডাকেন ‘রাসুলুন কারীম (সম্মানিত বার্তাবাহক) বলে। সর্বশেষ আর একটি নাম বলেই আমরা অগ্রসর...

প্রবন্ধ

যখন ফেরেশতারা আপনাকে জান্নাতের সুসংবাদ দিবেন

— উস্তাদ নোমান আলী খান আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তায়ালা সূরা ফুসসিলাত এর ৩০ নাম্বার আয়াতে বলেন – إِنَّ الَّذِينَ قَالُوا رَبُّنَا اللَّهُ ثُمَّ اسْتَقَامُوا تَتَنَزَّلُ عَلَيْهِمُ الْمَلَائِكَةُ أَلَّا تَخَافُوا وَلَا تَحْزَنُوا وَأَبْشِرُوا بِالْجَنَّةِ الَّتِي كُنتُمْ تُوعَدُونَ – “নিশ্চয় যারা বলে, আমাদের পালনকর্তা আল্লাহ, অতঃপর তাতেই অবিচল থাকে, তাদের কাছে ফেরেশতা অবতীর্ণ হয় এবং বলে, তোমরা ভয় করো না, দুশ্চিন্তা করো না এবং তোমাদের প্রতিশ্রুত জান্নাতের সুসংবাদ শোন।”“তাতানাজ্জালু আলাইহিমুল মালা-ইকা” তাদের উপর ফেরেশতারা অবতীর্ণ হয় – এই আয়াত নিয়ে আমাদের ক্যাসিকাল স্কলারদের মাঝে বিভিন্ন মতামত পাওয়া যায়। কারণ পূর্বের আয়াতগুলোতে কিয়ামত, বিচার দিবস, জাহান্নামের আগুন, আখিরাত নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে। কেউ কেউ বলেন – সম্ভবত, এই ফেরেশতারা আখিরাতে অবতীর্ণ হবেন। অন্যরা বলেন – এই আয়াতে এই ধরনের কোন সীমা নির্ধারণ করা হয়নি। সম্ভবত, মৃত্যুর সময় এই ফেরেশতাদের আগমন ঘটবে। আপনি একটি ভালো জীবন অতিবাহিত করেছেন, এখন মৃত্যু শয্যায়…। আজ হউক কাল হউক আমরা একদিন এই মৃত্যু শয্যায় শায়িত হব। এটা গাড়িতে ঘটুক, প্লেনে ঘটুক বা আমাদের বিছানায় ঘটুক, যেখানেই ঘটুক না কেন এটা অবশ্যই ঘটবে। যখন আমরা বৃদ্ধ হয়ে পড়বো, অথবা হাসপাতালের বিছানায়…আপনি শুয়ে আছেন আর চারপাশে পরিবারের সদস্যরা কান্নাকাটি করছে, আপনি কথা বলতে পারছেন না, কারণ ”বালাগাতিত তারাকি” (প্রাণ কণ্ঠাগত ৭৫ঃ ২৬) রুহ ইতিমধ্যে গলায় পৌঁছে গেছে, আপনি আমি এই ক্ষণস্থায়ী বাসস্থান ছেড়ে চিরবিদায়ের পথে… এই শরীরটাও আমাদের রুহের জন্য ক্ষণকালের বাসস্থান, আমরা এই শরীর ছেড়ে দেয়ার পথে। আপনার মা পাশে দাঁড়িয়ে আছে, ভাই, বোনেরা এবং পরিবারের অন্যান্য সদস্যরা দাঁড়িয়ে আছে, তারা সবাই কাঁদছে; ঠিক সে সময় আপনার চোখ খুলে গেল আপনি এমন কিছু দেখতে পাচ্ছেন যা অন্য কেউ দেখছে না, আপনি দেখতে পেলেন ফেরেশতারা নেমে আসছে। আশে পাশের কেউ এই দৃশ্য দেখতে পারছে না, কিন্তু আপনি দেখতে পাচ্ছেন।...

ক্ষমতা বনাম সম্মান – উস্তাদ নোমান আলী খান

“قُلِ اللَّهُمَّ مَالِكَ الْمُلْكِ تُؤْتِي الْمُلْكَ مَن تَشَاء وَتَنزِعُ الْمُلْكَ مِمَّن تَشَاء …”- “হে আল্লাহ তুমিই সর্বভৌম ক্ষমতার অধিকারী। তুমি যাকে ইচ্ছা ক্ষমতা দেও আর যার নিকট হতে ইচ্ছা ক্ষমতা কেড়ে নেও।” (সূরা আল ইমরান ৩ঃ ২৬)। এটাই বাস্তবতা। এই স্বীকার করি এই ক্ষমতা শুধু আল্লাহর হাতেই, তিনি যাকে যখন ইচ্ছা দেন আর যখন ইচ্ছা তার থেকে কেরে নেও। এখানে একটা ব্যাপার বেশ নজর কাড়ে, আরবী শব্দ “মুলক” এখানে দুইবার ব্যবহৃত হয়েছে। “تُؤْتِي الْمُلْكَ مَن تَشَاء” এবং “تَنزِعُ الْمُلْكَ مِمَّن تَشَاء”। এখানে “দমীর” বা সর্বনাম ব্যবহার করা যেত। অর্থাৎ “মুলক” শব্দ দুইবার ব্যবহার না করে একবার মূল শব্দ আরেকবার সর্বনাম ব্যবহার করতে পারতেন। তাহলে আয়াতটা হতো এমন, “তুমি যাকে ইচ্ছা ক্ষমতা দেও আর যার নিকট হতে ইচ্ছা সেটা কেড়ে নেও।” পরেরবার ‘মুলক” ব্যবহার না করে “সেটা” বা এরকম কিছু ব্যবহার করা যেত। কিন্তু আল্লাহ “মুলক” অর্থাৎ ক্ষমতা বা রাজত্ব এই শব্দটি দুইবার ব্যবহার করেছেন। আরবীর নিয়ম অনুসারে আপনি যখন একই শব্দ দুইবার ব্যবহার করছেন তখন দুইটি শব্দ দ্বারা আলাদা দুইটি বিষয় বা এই আয়াতে আলাদা দুইটি ক্ষমতা বুঝায় না। এখানে একটি জিনিসের কথায় বলা হচ্ছে। সাধারণভাবে আমরা যদি চিন্তাকরি, তিনি যাকে ইচ্ছা ক্ষমতা দেন ও যার থেকে ইচ্ছা থেকে সেই ক্ষমতা কেড়ে নেন। আপনি হয়তো ভাবতে পারেন একজনকে রাজত্ব দেওয়া হচ্ছে আর অন্য একজন থেকে কেড়ে নেওয়া হচ্ছে, বিষয়টা এমন না। “মুলক” শব্দটির দুইবার ব্যবহারের ফলে এর আরেকটা অর্থ দাড়াচ্ছে। অর্থাৎ তিনি যাকে ক্ষমতা দিয়েছেন চাইলে তার থেকেই কেড়ে নিতে পারেন। অর্থাৎ ক্ষমতাপ্রাপ্ত ব্যক্তি থেকেই ক্ষমতা আল্লাহ চাইলে নিয়ে নিচ্ছেন। এটা আল্লাহর সিদ্ধান্ত। আবারো বলছি, বিষয়টা এমন না যে, একজনকে দিলেন এবং অন্যজন থেকে কেড়ে নিলেন।  আল্লাহ এমন করেননি যে, তোমাকে একবার ক্ষমতা দিয়েছি তারমানে সারাজীবন তুমিই শাসন করবে।...

আপনার আওয়াজ নবীর আওয়াজের উপর উঁচু করবেন না

–নোমান আলী খান সূরা হুজুরাত (৪৯) এর দ্বিতীয় আয়াতে, আল্লাহ আযযা ওয়া জাল্লা নবি ﷺ এর আমাদের উপর একটি অধিকারের বর্ণনা করছেন –يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا لَا تَرْفَعُوا أَصْوَاتَكُمْ فَوْقَ صَوْتِ النَّبِيِّ“হে ঈমানদারগণ, তোমরা নবীর আওয়াজের উপর তোমাদের আওয়াজ উঁচু করো নাوَلَا تَجْهَرُوا لَهُ بِالْقَوْلِ“এবং তাঁর সাথে সেরকম উচ্চস্বরে কথা বলো না”كَجَهْرِ بَعْضِكُمْ لِبَعْضٍ“যেমন তোমরা নিজেরা পরস্পর উচ্চস্বরে কথা বল,”أَنْ تَحْبَطَ أَعْمَالُكُمْ“এ আশঙ্কায় যে তোমাদের সকল আমল-নিস্ফল হয়ে যাবে”وَأَنْتُمْ لَا تَشْعُرُونَ“অথচ তোমরা উপলব্ধিও করতে পারবে না।“এই আয়াতের প্রেক্ষাপটের ব্যাপারে একটু বুঝে নেই, ঠিক আছে?যারা মুসলিম হয়েছিলেন, তাদের মধ্যে কিছু বেদুইনও ছিলেনএবং তাঁরা ইসলামি আচার ব্যাবহার তো দূরের কথা, সাধারণ সহুরে আদব কায়দার ব্যাপারেও অতো সভ্য ছিলেন না।তারা একরকম ভাবে জানতেন যে নবি ﷺ একজন রাসুল, কিন্তু তাঁকে শ্রদ্ধা করা, সঠিক সম্মান দেখানো, এসব ব্যাপারে তারা অজ্ঞ ছিলেন।তাই তারা তাঁর বাড়িতে যান, তাঁর বাড়ি ছিল খুবই ছোট, এবং দরজায় ধাক্কা দিয়ে বলেন, “ইয়া মুহাম্মাদ! উখ্রুজ আলাইনা!”“মুহাম্মাদ, বেড়িয়ে এসো, আমরা তোমাকে কিছু প্রশ্ন করতে চাই।“সমস্যা হলো – আল্লাহ নিজে কখনো নবি ﷺ কে “ইয়া মুহাম্মাদ” বলে ডাকেননি।আল্লাহ নিজে নবির প্রতি এতো শ্রদ্ধাশীল যেতিনি তাঁকে ডেকেছেন “ইয়া আইয়ুহান-নাবি”, “ইয়া আইয়ুহাল-মুযযাম্মিল”, “ইয়া আইয়ুহাল-মুদ্দাসসির”, “ইয়া আইয়ুহার-রাসুল” বলে,এমনকি যখন [কোরআনে] “মুহাম্মাদ” নামের উল্লেখ আসে, তিনি সাথে যোগ করেছেন “মুহাম্মাদ রাসুলুল্লাহ”(সূরা আস-সাফ:৬) – وَمُبَشِّرًا بِرَسُولٍ يَأْتِي مِن بَعْدِي اسْمُهُ أَحْمَدُতাই না?(সূরা আল-আহযাব: ৪০) – مَا كَانَ مُحَمَّدٌ أَبَا أَحَدٍ مِنْ رِجَالِكُمْ وَلَٰكِنْ رَسُولَ اللَّهِযেখানেই “মুহাম্মাদ” উল্লেখ করা হয়েছে সেখানেই “রাসুল”ও যোগ হয়েছে।এবং মাত্র একবার আল্লাহ “মুহাম্মাদ”-এর সাথে “রাসুল” উপাধি যোগ করেন নি, সেটা হলো সূরা মুহাম্মাদ-এ, যেখানে আল্লাহ তাঁর নামটাকেই লক্ষণীয় করেছেন।(QS. Muhammad: 2) – وَالَّذِينَ آمَنُوا وَعَمِلُوا الصَّالِحَاتِ وَآمَنُوا بِمَا نُزِّلَ عَلَىٰ مُحَمَّدٍ وَهُوَ الْحَقُّ مِن رَّبِّهِمْএবং এখানে তাঁর নামের সাথে রাসুল যোগ না করার...

দুঃখ কষ্টের মাহাত্ম্য

– – নোমান আলী খান আপনি জানেন এই জীবনে আমরা কিছু জিনিস চাই।একজন যুবক বিয়ে করতে চায় অথবা মহিলা বিয়ে করতে চায়।আপনি একটি ভালো চাকরি চান।আপনি একটি ঘর চান।আপনি চান আপনার পরিবার ঠিক থাকুক।আপনি আপনারা সন্তানদের জন্য করতে চান তাদের জন্য ভালো শিক্ষা চান আপনার সন্তানদের বিয়ে দিতে চান।কিছু ব্যাপার আছে যেগুলোর অগ্রাধিকার আমাদের জীবনে আছে।আল্লাহ আজ্জা ওয়াজাল তার কিতাবে আমাদের শিখাচ্ছেন একটা জিনিস আপনি যদি এই জীবনে পেয়ে থাকেন তা অন্য সব কিছুর থেকে মূল্যবান।আর সেই একটি জিনিস হলো আল্লাহর নৈকট্য। আল্লাহর সাথে ভালো হওয়া এবং সত্যিকার অর্থে তার সাথে সম্পর্ক তৈরি করা।মানুষের সমস্যা হচ্ছে যখন জীবন ভালো যায় অনেক মানুষ বিভ্রান্ত হয়ে পরে।আপনি ভিডিও গেম খেলেন,মুভি দেখেন,সোস্যাল মিডিয়া স্ট্যাটাস চ্যাক করেন,বন্ধুদের সাথে হ্যাং আউট করেন রেস্টুরেন্টে,ঘুমান।আল্লাহকে এই সব কিছুর বাইরে রাখেন।এখানে আল্লাহ নেই।এটা আপনি চিল করছেন,সেখানেই সব।এবং তারপর কঠিন সময় আসে।বন্ধুরা সেখানে নেই।গেম আর ভালো লাগে না গাড়িটাও সুন্দর লাগেনা কারন সুস্থতা নেই আর যখন অসুস্থ থাকি তখন কোন কিছুই ভালো লাগেনা।আর তখন আপনার শুধুমাত্র আশা থাকে “আমি এই হাসপাতালের বিছানা থেকে বের হতে চাই।আমি আবার হাটতে পারলেই চলবে।” মানুষজন আপনার প্রিয় খাবার নিয়ে আসবে আপনি খেতে চাবেননা।আপনাকে মুভি দেখাতে চাবে আপনি দেখতে চাবেননা।যাকিছু যেগুলো নিয়ে আপনি বেচে ছিলেন a,b,c,d সব কিছু নাই হয়ে গিয়েছে।আপনি আর এগুলোর প্রতি পরোয়া করেননা।কারন একটা নিয়ামত আল্লাহ আপনার জন্য একটু কমিয়ে দিয়েছেন।এবং এই পর্যায়ে আপনার দুটি রাস্তা আছে।আপনি যদি এই মানুষদের মধ্যে হন যারা একদম দারপ্রান্তে আছে, আপনি আল্লাহর কাছে অভিযোগ শুরু করতে পারেন “কেন আপনি আমার সাথে এমন করলেন? আপনার কি পছন্দ হয়নি আমি সুখী ছিলাম।” অথবা আপনি সবচেয়ে শ্রেষ্ঠ সম্পদ লাভ করতে পারেন আর সেটা হলো নম্রতা এবং আল্লাহর নৈকট্য ।অসলে উপলদ্ধি করা এমনকি যখন আমি সুস্থ ছিলাম, এমনকি...

আল্লাহ সর্বশক্তিমান 

– উস্তাদ নোমান আলী খান ইনশাআল্লাহ, আজ আমি আপনাদের নিকট আল্লাহর একটি নাম القوي – এর উপকারিতা বর্ণনা করবো। القوي অর্থ – শক্তিশালী, ক্ষমতাশালী। এই অসাধারণ শব্দটি দ্বারা আল্লাহর একটি নাম প্রকাশ করা হয়। শব্দটি শুনলেই আপনি বুঝতে পারেন এর মানে হল আল্লাহ সর্বশক্তিমান। কিন্তু সুরাতুল হাজ্জের শেষের দিকে আল্লাহ যেভাবে এই শব্দটি ব্যবহার করেছেন তা অসাধারণ চমকপ্রদ। আমি যুক্তি দেখাবো, একজন বিশ্বাসীর জন্য আল্লাহর ‘القوي’ হওয়ার মানে কী তা উপলব্ধি করার জন্য আল কুরআনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ জায়গাগুলোর একটি হল সুরাতুল হাজ্জের এই অংশটি। আমরা তাঁর সকল নামে বিশ্বাস করি কিন্তু তাঁর প্রত্যেকটি নাম কোন না কোনভাবে আমাদের উপকার করে। কোন না কোনভাবে আমাদের সাহায্য করে। القوي কীভাবে আমাদের সাহায্য করে? এটা শেখার অন্যতম একটি সেরা জায়গা হল ২২তম সূরা, সুরাতুল হাজ্জের শেষের অংশ। এই সূরায় আল্লাহ একটি উপমা পেশ করেন যেন মানুষ তাঁর সম্পর্কে একটি ব্যাপার উপলব্ধি করতে পারে। তিনি বলেন – يَا أَيُّهَا النَّاسُ ضُرِبَ مَثَلٌ فَاسْتَمِعُوا لَهُ – “হে লোক সকল! একটি উপমা বর্ণনা করা হলো, অতএব তোমরা তা মনোযোগ দিয়ে শোন;” এভাবেই তিনি শুরু করেছেন, একটি উপমা দেয়া হল মনোযোগ দিয়ে শ্রবণ করো। তিনি সাধারণত এভাবে বলেন – আল্লাহ একটি উপমা বর্ণনা করলেন। কিন্তু এখানে বলেছেন, একটি উপমা প্রদান করা হলো। ‘আমি একটি উপমা দিচ্ছি’ বলার পরিবর্তে। তিনি এখানে বক্তাকে আলোচনা থেকে গোপন করে ফেললেন। এটি একটি সাইড নোট – কিন্তু গুরুত্বপূর্ণ একটি – যা আমাদের জানা থাকা প্রয়োজন। আমি এখন আপনাদের সামনে দাঁড়িয়ে আছি। আমার একটি নির্দিষ্ট রূপ আছে, আমার দাঁড়ি আছে, আমার পোশাক এইরকম, আমার মাথায় টুপি আছে ইত্যাদি ইত্যাদি। আপনারা সরাসরি আমাকে দেখতে পাচ্ছেন। আমি কুরআন থেকে কিছু তিলাওয়াত করলে বা কোন আলোচনা করলে সেটাও আপনারা দেখতে পান। কিন্তু এমন একটি পরিস্থিতির...

মু’জিযা

কুরআনের মু’জিযা – চাঁদ, সূর্য, লোহা

  <> চাঁদ-সূর্য <> ২৫ নাম্বার সূরা ফুরকানে আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তায়ালা বলেছেন – تَبَارَكَ الَّذِي جَعَلَ فِي السَّمَاءِ بُرُوجًا وَجَعَلَ فِيهَا سِرَاجًا وَقَمَرًا مُّنِيرًا (আয়াত ৬১) আকাশ এবং পৃথিবীতে থাকা বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আল্লাহ কথা বলেছেন। ”পূন্যময় তিনি যিনি আকাশে নক্ষত্ররাজি স্থাপন করেছেন।” তার পর বলছেন, ”আর আকাশে তিনি প্রদীপ স্থাপন করেছেন।” তিনি এই আয়াতে সূর্যকে প্রদীপ বলেছেন -সিরাজ। ‘’ও কামারাম মুনিরা।’’ ‘কামার’ অর্থ চাঁদ। কিন্তু এর পরের ‘মুনির’ শব্দটি আসলে বৈজ্ঞানিক। যদি আপনি এভাবে বলতে চান। মুনির শব্দের অর্থ যাকে আলো দেয়া হয়েছে। এমনকিছু যাতে প্রতিবিম্বিত আলো আছে। তাহলে দুটি শব্দ। একটি হলো সিরাজ, যা দ্বারা বুঝায় আলোর উৎস। আরেকটি(মুনির) হল আলোর গ্রাহক। যখন সূর্যের কথা আসলো তখন তিনি বললেন সিরাজ বা বাতি। আর যখন চাঁদের কথা আসলো তিনি বললেন- মুনির বা যার উপর আলো প্রতিবিম্বিত হয়। সুতরাং এমন এক সময় যখন এটা সবার জানা ছিল না তখন আল্লাহ বলছেন, চাঁদ নিজের আলো দিচ্ছে না। এখন আমরা সবাই জানি, চাঁদ সূর্যের আলোয় আলোকিত হয়। কিন্তু ১৫০০ বছর আগে এটা এতোটা সুস্পষ্ট ব্যাপার ছিল না। মনে হত এটা নিজের আলোই বিতরণ করছে। <> লোহা <> সুতরাং এই আয়াত বলছে- আমি লোহা প্রেরণ করেছি। এটা ৫৭ নাম্বার সূরা হাদিদে আছে। আল্লাহ এখানে বলেছেন আমি লোহা প্রেরণ করেছি। আল্লাহ কুরআনে বহু কিছু সৃষ্টি করার কথা বলেছেন। আর এর জন্য তিনি ‘খালাকা’ (সৃষ্টি করা) ক্রিয়াপদ ব্যবহার করেছেন। তিনি পৃথিবী এবং মহাকাশ সৃষ্টি করেছেন, তিনি জীবন মৃত্যু সৃষ্টি করেছেন, ইত্যাদি ইত্যাদি সৃষ্টি করেছেন। কিন্তু যখন লোহার কথা আসলো তিনি বলেননি যে, তিনি সৃষ্টি করেছেন। তিনি বলেছেন এটা প্রেরণ করেছেন। অতীতের আলেমরা এই আয়াত ব্যাখ্যা করতে হিমশিম খেতেন যে কেন আল্লাহ প্রেরণ করা বললেন। কারণ আল্লাহর কথা খুবই স্পষ্টরূপে নির্দিষ্ট, এটা আমাদের বিশ্বাস।...

কুর’আনের মু’জিজা – বৃত্তাকার গঠন বিন্যাস

কুরআনের গঠন বিন্যাস একটি অন্যতম কারণ যার জন্যে মুসলিমরা বিশ্বাস করে যে এটা একমাত্র সৃষ্টিকর্তার পক্ষ থেকেই অবতীর্ণ হতে পারে। আধুনিক গবেষণায় পাওয়া গিয়েছে যে কুরআনের একটি বিশেষ গঠন বিন্যাস রয়েছে। এই বিন্যাসের নাম হল “বৃত্তাকার গঠন বিন্যাস”। এটির উদাহরণের জন্য আসুন আমরা কুরআনের দ্বিতীয় সুরাটি নিয়ে পর্যালোচনা করি। এর নাম হল “বাকারা” অর্থাৎ গাভী। এই সুরাটিতে মোট ২৮৬ টি আয়াত আছে। পুরো সুরাটিকে ৯ টি অংশে ভাগ করা যেতে পারে, বিষয়বস্তুর উপর ভিত্তি করে। প্রথম অংশের আয়াতগুলোতে আলোচনা করা হয়েছে বিশ্বাস এবং অবিশ্বাস নিয়ে। এই একি আলোচনার প্রতিফলন হয়েছে ৯ম অংশে। ২য় অংশে আলোচিত হয়েছে সৃষ্টি রহস্য এবং জ্ঞান নিয়ে, যার প্রতিফলন হয়েছে শেষ থেকে ২য় অর্থাৎ ৮ম অংশে। ৩য় অংশে আছে সেইসব আইন যা বনী ইসরাইলকে দেয়া হয়েছিল। যার প্রতিফলন হয়েছে ৭ম অংশে, যেখানে আছে মুসলিমদেরকে দেয়া আইনগুলো। ৪র্থ অংশে আছে ইব্রাহিম (আঃ) এর পরীক্ষাগুলো, যার প্রতিফলন হল মুসলিমদের জন্যও পরীক্ষা, যা হল ষষ্ঠ অংশের বিষয়। আর মাঝের অংশ অর্থাৎ ৫ম অংশটি হল পুরো সুরাটির মুখ্য আলোচনা, সালাতের কিবলার দিক পরিবর্তন। “এমনিভাবে আমি তোমাদেরকে মধ্যপন্থী সম্প্রদায় করেছি যাতে করে তোমরা সাক্ষ্যদাতা হও মানবমন্ডলীর জন্যে…. আপনি যে কেবলার উপর ছিলেন, তাকে আমি এজন্যই কেবলা করেছিলাম, যাতে একথা প্রতীয়মান হয় যে, কে রসূলের অনুসারী থাকে আর কে পিঠটান দেয়।” (আল কুরআন ২:১৪৩) এই কিবলার পরিবর্তন, যা ছিল জেরুসালেম থেকে মক্কার দিকে, এটি ছিল আসলে বিশ্বাসীদের জন্যও এক বিরাট পরীক্ষা। আর এই ঘুরে দাঁড়ানোর উল্লেখ আমরা দেখতে পাই সুরাটির ঠিক মধ্যম অংশে। ঠিক ১৪৩তম আয়াতে। আরও উল্লেখ্য হল এই আয়াতেই আছে ”মধ্যপন্থী সম্প্রদায়” শব্দটি। এই ৯ টি অংশ একসাথে একটি বিশাল বৃত্তাকার বিন্যাস গঠন করে। খুব সহজেই দেখা যাচ্ছে যেঁ এই বৃত্তাকার বিন্যাসটি হল একটি পূর্ণ বৃত্ত যার মূল অর্থটি...

সূরা ওয়াকিয়া এবং আর রাহমানের বিস্ময়কর মিল

সূরা ওয়াকিয়া এবং আর রাহমানের বিস্ময়কর মিলঃ উভয় সুরাতেই ৫টি বিষয় নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে। <> সূরা আর-রাহমানের বিষয়বস্তুগুলো হলো… ১। কুরআন; করুনাময় আল্লাহ শিক্ষা দিয়েছেন কুর’আন। ২। আল্লাহর সৃষ্টি; যেমন সূর্য ও চন্দ্র হিসাবমতো চলে এবং তৃণলতা ও বৃক্ষাদি সেজদারত অবস্থায় আছে। ৩। বিচার দিবস এবং অপরাধীদেরকে কীভাবে জাহান্নামে নিয়ে যাওয়া হবে; (৩৭ নাম্বার আয়াত থেকে…)। ৪। জান্নাত; (৪৬ নং আয়াত থেকে… যে ব্যক্তি তার পালনকর্তার সামনে পেশ হওয়ার ভয় রাখে, তার জন্যে রয়েছে দুটি উদ্যান…)। এরা ঈমানদারদের সর্বশ্রেষ্ঠ দল নয়, বরং এরা শুধু আল্লাহকে ভয় করতো, তাই এরা দু’টি জান্নাত পাবে। ৫। জান্নাতের সুপার স্পেশাল ডিলাক্স প্যাকেজ (৬২ নাম্বার আয়াত থেকে…)। <> সূরা ওয়াকিয়ার বিষয়বস্তুগুলো হলো… ১। সাবিকুন (জান্নাতের এলিট গ্রুপ)। ২। আসহাবুল ইয়ামিন (তারা হবেন দ্বিতীয় শ্রেণীর জান্নাতী)। ৩। আসহাবুস শিমাল (বাম পাশের মানুষ, যারা হবেন জাহান্নামের অধিবাসী। ৪। আল্লাহর সৃষ্টি। এই পর্যায়ে আল্লাহ বিভিন্ন বিষয়ে প্রশ্ন করেন। যেমনঃ ‘আমি মানুষ সৃষ্টি করি, না তোমরা মানুষ সৃষ্টি কর? আমি ফসল উৎপন্ন করি, না তোমরা উৎপন্ন কর? আমি আগুন সৃষ্টি করেছি, না তোমরা সৃষ্টি করেছ? আমি আকাশ থেকে পানি বর্ষণ করি, না তোমরা কর?’ এই প্রশ্নগুলোর মানে হলোঃ আল্লাহ মানুষকে বলছেন এই বিষয়ে চিন্তা করার জন্য যে আল্লাহ সৃষ্টি করেন, মানুষ সৃষ্টি করে না । মানুষের সৃষ্টি করার কোন ক্ষমতাই নেই। ৫। আল কুরআন, এই পর্যায়ে আল কুরআনের মাহাত্ম্য এবং বিস্ময়কর শ্রেষ্ঠত্ব নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে। আর সূরার শেষে এই পাঁচটি বিষয়ের সারমর্ম তুলে ধরা হয়েছে। এখন দেখুন, <> সূরা আর রাহমানের ১ নম্বর বিষয়বস্তু হলো আল কুরআন, আর সূরা ওয়াকিয়ার ৫ নম্বর বিষয়বস্তু হলো আল কুরআন। <> সূরা আর রাহমানের ২ নম্বর বিষয়বস্তু হলো আল্লাহর সৃষ্টি, আর সূরা ওয়াকিয়ার ৪ নম্বর বিষয়বস্তু হলো আল্লাহর সৃষ্টি। <>...

রাসূলুল্লাহ (স) এর কয়েকটি মু’জিযা

জড় পদার্থের মাধ্যমে যে সব মিরাকল ঘটেছে। রাসূল (স) এর যে সব মু’জিযা নিষ্প্রাণ কোনো বস্তুর মাধ্যমে ঘটেছে; পাথর, শিলা এরকম পদার্থের মাধ্যমে… এমন কিছু ঘটনা এখন আপনাদের নিকট উপস্থাপন করবো। এরকম অসংখ্য ঘটনার কথা বর্ণিত আছে। যেমন সহীহ বুখারীতে এসেছে – “রাসূল (স) বলেছেন, এখনো আমি এমন একটি পাথরকে শনাক্ত করতে পারি, যেটি নবুয়ত পাওয়ার পূর্বে মক্কায় অবস্থানকালে যখনই আমি এর পাশ দিয়ে গমন করতাম আমাকে সালাম জানাতো।” ইবনে মাসউদ (রা) বর্ণনা করেন, একদা আমরা রাসূল (স) এর নিকট অবস্থানকালে শুনতে পেলাম যে, খাবার তাসবীহ পাঠ করছে। এটিও বুখারীতে বর্ণিত আছে। রাসূল (স) মুখে খাবার তুলছেন আর সেই খাবার ‘সুবহানাল্লাহ’ পাঠ করছে। আরেকটি হাদিসে আবু যার আল গিফারী (রা) বর্ণনা করেন, আমি একবার একটি জমায়েতে আবু বকর, উমর, উসমান, আলীসহ অন্যান্য সাহাবাদের সঙ্গে ছিলাম। রাসূল (স) কিছু নুড়ি পাথর তাঁর হাতে নিলেন। আর আমরা সবাই শুনতে পেলাম যে, নুড়ি পাথরগুলো আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তায়ালার গুণকীর্তন করছে। রাসূল (স) পাথরগুলো আবু বকরের নিকট হস্তান্তর করলেন, আর তারা আবু বকরের হাতেও আল্লাহর প্রশংসা করতে লাগলো। রাসূল (স) আবু বকরের হাত থেকে পাথরগুলো নিয়ে ওমরের হাতে দিলেন, জমায়েতের সবাই শুনতে পেল উমরের হাতে গিয়েও পাথরগুলো ‘সুবহানাল্লাহ’ তাসবীহ পাঠ করছে। তারপর রাসূল (স) ওমরের হাত থেকে পাথরগুলো নিয়ে উসমানের (রা) হাতে দিলেন, পাথরগুলো তখনও তাসবীহ পাঠ করতে লাগলো। আর আমরা সবাই সেই তাসবীহ পাঠ শুনতে পেলাম। এরপর রাসূল (স) ঐ স্থান ত্যাগ করে চলে গেলেন। আমরা তখন পাথরগুলো হাতে নিলাম, কিন্তু কেউ আর কোনো আওয়াজ শুনতে পেলাম না। এই হাদীসটি তাবারানীর আল আওসাতে বর্ণিত আছে। এখানে লক্ষ্যণীয় বিষয় হলো -সুবহানাল্লাহ! রাসূল (স) নুড়ি পাথরগুলো হাতে তুলে নিলেন আর শুনতে পেলেন সেই পাথরগুলো আল্লাহর প্রশংসা করছে। পাথরগুলো ইতিমধ্যে আল্লাহর প্রশংসা করছে, তিনি সেগুলো...

অন্তর এবং বুদ্ধির সম্পর্ক

আমাদের ধর্মের একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ পাঠ হলো অন্তর এবং বুদ্ধির সম্পর্ক। যখন আল্লাহ বলেন – ‘লাআল্লাকুম তা’কিলুন’, যেন তোমরা চিন্তা করতে পারো’… তিনি এখানে ‘আকল’ শব্দটি ব্যবহার করেছেন। ‘আকল’ এর অবস্থান আপনার মস্তিষ্কে। আরবিতে ‘আকালা’ শব্দের অর্থ হলো – বুঝতে পারা। এর আরেকটি অর্থ হলো – কোনো কিছু বাঁধা। তাহলে ‘আকালা’ দ্বারা দুইটি বিষয় বোঝায় – বুঝতে পারা এবং কোনো কিছুকে শৃঙ্খলিত করা। যখন আমরা কোনো কারণে মানসিকভাবে অভিভূত হয়ে পড়ি, আমরা ভালোভাবে চিন্তা করতে পারি না। যদি আপনি অতিমাত্রায় রাগান্বিত হয়ে পড়েন, আপনি চিন্তা ভাবনা ছাড়াই অনেক কিছু বলে ফেলেন। যদি কোনো কিছুতে চরম খুশি হয়ে পড়েন, তাহলেও চিন্তা ভাবনা ছাড়া কিছু একটা করে ফেলেন। যদি অতিশয় দুঃখিত হয়ে পড়েন, তখনও চিন্তা ভাবনা ছাড়া কাজ করে ফেলেন। তাহলে দেখা যাচ্ছে কখনো কখনো আবেগ আপনাকে সঠিকভাবে চিন্তা ভাবনা করতে বিরত রাখে। এখন, আকল এর কাজ হলো আপনার আবেগকে এমনভাবে নিয়ন্ত্রণে রাখা যেন আপনি সঠিকভাবে চিন্তা করতে পারেন। তাই, আকল অর্থ শুধু বুঝতে পারা নয়, এর অর্থ হলো – প্রথমে আবেগকে নিয়ন্ত্রণে রাখা এবং তারপর বুঝতে পারা। ঘৃণা, রাগ, ভয় এ ধরণের মানবীয় আবেগের প্রভাবমুক্ত হয়ে চিন্তা ভাবনা করতে পারার নামই হলো আকল। অনেক সময় দেখা যায়, আপনি যদি কাউকে ঘৃণা করেন সে সঠিক কথা বললেও আপনি তা মানতে চান না। বনী ইসরাইলের ক্ষেত্রে দেখা যায়, তাদের নিকট সকল প্রমান উপস্থাপন করা সত্ত্বেও তারা রাসূল (স) কে মেনে নিচ্ছিলো না। কারণ তাদের অন্তর তালাবদ্ধ হয়ে পড়েছিল। অহংকার তাদের ‘কলব বা অন্তর’ ঢেকে ফেলেছিলো। তাই তাদের বুদ্ধি সকল প্রমান দেখা সত্ত্বেও রাসূল (স) কে স্বীকার করেনি। “দেখো দেখো তাওরাতেও এ সম্পর্কে বলা হয়েছে…আর কুরআনে বলা হয়েছে ‘মুসাদ্দিকুল লিমা মা’আকুম, এটা তোমাদের নিকট যা নাজিল হয়েছিল তার সত্যতার সাক্ষী দিচ্ছে।’ না, আমি...

ইমেইলের মাধ্যমে সংযুক্ত থাকুন



Created by Webfish.

Facebook Like

সাথেই থাকুন

 

<—-Facebook & YouTube —->

Youtube Subscriber