উস্তাদ নুমান আলী খান

নুমান আলী খান একজন মুসলিম দা’ঈ। কুর’আন এর জ্ঞানে তার অসাধারণ গভীরতা এবং সুন্দর উপস্থাপনা শৈলীর কারণে সমগ্র বিশ্বের তরুণ প্রজন্মের কাছে তিনি অত্যন্ত জনপ্রিয় একজন ব্যক্তিত্ব। বাংলাদেশ এবং বাংলাভাষাভাষী অনেক ইসলাম অনুরাগী তরুণ তাঁর অসাধারণ আলোচনা থেকে উপকৃত হচ্ছে নিয়মিত …

সংক্ষিপ্ত পরিচিতি

আমাদের সাথে সংযুক্ত থাকুন

বর্তমানে আমরা ফেইসবুক ও ইউটিউব চ্যানেল এ নুমান আলী খানের লেকচার গুলো নিয়মিত প্রকাশ করছি এবং এই ওয়েবসাইট এর মাধ্যমে তা শ্রেণীবদ্ধ ভাবে সংরক্ষণ করছি। আপনি আমাদের ফেইসবুক ও ইউটিউব চ্যানেল লাইক /সাবস্ক্রিপশন করে আমাদের সাথে আরো নিবিড় ভাবে সংযুক্ত থাকতে পারেন।

আমাদের ওয়েবসাইট ভিজিট করার জন্য আপনাকে অভিনন্দন…

সংযুক্ত থাকুন

ভিডিও + প্রতিলিপি

অন্তহীন শূন্যতাঃ সমাধান কী?

আল্লাহ সুব হা নাহু ওয়া তায়ালার সবচেয়ে গৌরবজনক নাম হলো আল্লাহ। এটাই আল্লাহ সুব হা নাহু ওয়া তায়ালার প্রধান নাম। আর আল্লাহ নামটি এসেছে আল-ইলাহ থেকে অর্থাৎ যার উপাসনা করা হয়, যার ইবাদাত করা হয়। এজন্য সমগ্র কুরআন জুড়ে আল্লাহ নামটির ব্যাপক ব্যবহার লক্ষ্য করা যায়। আপনাকে আমাকে এই কথা স্মরণ করিয়ে দেয়ার জন্য যে, যিনি আমাদের সৃষ্টি করেছেন, যিনি আমাদের বাঁচিয়ে রেখেছেন, যাকে আমরা বিপদের সময় ডাকি – একমাত্র তিনিই আমাদের উপাসনা পাওয়ার যোগ্য। আমাদের এই মালিক, যাকে আমরা আল্লাহ নাকে ডাকি, তিনি সকল সুন্দরতম নাম এবং উপাধির অধিকারী। আল্লাহ সুব হানাহু ওয়া তায়ালা হলেন – আল ওয়াদুদ- ভালবাসাপূর্ণ, স্নেহময় এবং প্রিয়তম। এই পৃথিবীতে আপনার জন্য যত ভালবাসাই থাকুক না কেন – সেটা হতে পারে আপনার বন্ধুদের নিকট থেকে, আপনার স্ত্রীর কাছ থেকে, আপনার মাতা পিতার কাছ থেকে, এই দুনিয়ার অন্য সবার কাছ থেকেই হউক – আপনার অন্তর সবসময় অপূর্ণ থেকে যাবে। আর এই অপূর্ণতা একমাত্র আল্লাহর ভালবাসার মাধ্যমেই পূর্ণ হতে পারে। এ বিষয়টি ইবনে কাইয়েম (র) এভাবে বর্ণনা করেছেন- ”প্রকৃতপক্ষে অন্তরের শূন্যতা একমাত্র আল্লাহ সুব হানাহু ওয়া তায়ালার ভালবাসার মাধ্যমেই পূর্ণ হতে পারে।” এই ব্যাপারটি আমাদের অনেকেই উপলব্ধি করতে সমর্থ হয় না। মানব জাতির অনেকেই এটা উপলব্ধি করে না। তাই তারা অন্তরের এই শূন্যতা দুনিয়াবী লালসা দ্বারা পূর্ণ করতে চায়। হতে পারে সম্পদের মাধ্যমে, নারীর মাধ্যমে বা অন্য যে কোন মাধ্যমে- তারা প্রবৃত্তির লালসা দ্বারা এটা পূর্ণ করতে চায়। কিন্তু এতোসব কিছু দ্বারা চেষ্টা করা সত্ত্বেও এই শূন্যতা তারা আরও তীব্রভাবে অনুভব করে। তারা হয়তো এই শূন্যতা মদ্যপানের মাধ্যমে পূরণ করতে চায় বা যে কোন নেশাজাতিয় দ্রব্যের মাধ্যমে- কিন্তু এর পরিণতি কি? আবার সেই শূন্যতা। তারা দুনিয়াবি সব কিছু দ্বারা অন্তরের এই ফাঁকা জায়গাটা পূর্ণ করতে চায়...

অসৎ সঙ্গ এড়িয়ে চলুন

তরুণ-তরুণীরা দয়া করে মনোযোগ দিয়ে শুনুন। আল্লাহ সুব হানাহু ওয়া তায়ালা সূরা ফুরকানের ৭২ নং আয়াতে বলেন – وَالَّذِينَ لَا يَشْهَدُونَ الزُّورَ ”তারা এমন মানুষ যারা কখনো অর্থহীন বন্ধু-বান্ধবের সঙ্গে থাকে না।” ‘যুর’ শব্দটির অর্থ হলো মিথ্যা সাক্ষ্য দেওয়া কিংবা এর আর একটা মানে হলো এমন সঙ্গী যারা অকেজো, যাদের দ্বারা কোনো উপকার আশা করা যায় না, তারা ‘বাতিল’। অন্যভাবে বললে তারা রাতের ২টা পর্যন্ত আড্ডাবাজি করে না। তারা রাত ৩ টা পর্যন্ত অর্থহীন কথাবার্তা বলতে থাকে না। তারা এমনটা করে না। কিন্তু কেন করে না? কারণ তারা তাওবা করেছে। আর যখন কেউ তাওবা করে সে জানে… আপনি যখন কোন বড় পাপ করে ফেলেন, জানেন? সেই বড় পাপ কাজ করতে কিভাবে উদবুদ্ধ হয়েছেন? আপনি শুরু করেন খুব ছোট গুনাহ দিয়ে আর সেটা ধীরে ধীরে বড় হতে থাকে তারপর আপনি বড় গুনাহ করে ফেলেন। আর একসময় বুঝতে পারেন আপনার গুনাহ গুলো সঙ্গদোষের কারণেই হয়েছে। যাদের সাথে আপনি সময় কাটান তারা আপনার জন্য এসব পাপ করা খুব সহজ করে দিয়েছিলো। তো আল্লাহ বলেছেন যখন তারা তাওবা করে ফেলেছে তারা নিশ্চিত করে যেন কখনোই কোন অশুভ আড্ডায় বসতে না হয়। তারা কখনো কোন মিথ্যার আসরে সময় কাটায় না। কখনো কখনো আপনি পার্টিতে যাওয়ার দাওয়াত পেয়ে যান, আর যারা দাওয়াত করে তারা হয়ত খুব একটা ধার্মিক নয়। তো সেখানে কান ফাটানো বাজনা বাজে, মেয়েরা মেকআপ করে আসে, ছেলে মেয়ে সবাই একসাথে। আর আপনি এই পার্টির মাঝে আটকা পড়েছেন। আপনি নিশ্চয়ই দাঁড়িয়ে বলবেন না, ‘ওয়াল্লাযীনা লা ইয়াশহাদুনা আয্‌যুরা’ আর বলে হন হন করে বেরিয়ে গেলেন! কিন্তু আপনি অযুহাত দেখাতে পারেন। ‘আমার একটু বের হতে হবে’ বলে বেরিয়ে পড়লেন। আপনি মসজিদে মাগরিব পড়লেন আর ইশা পর্যন্ত সেখানেই রইলেন। ইশা পড়ে পার্টিতে ফেরত এসে দেখলেন সবাই...

অহেতুক তুলনা করবেন না

কুরআন তেলাওয়াতে পারদর্শী নয় এইরকম একজন যুবক ভাই একদিন আমাকে একটা প্রশ্ন করেছিলেন। প্রশ্নটা ছিল এইরকম – ‘আমি সবসময় ভালো করে কুরআন পড়ার চেষ্টা করি কিন্তু এত চেষ্টা করার পর ও আমি শুদ্ধ করে পড়তে পারি না’। যুবকের কথা শুনে মনে হচ্ছিল সে খুবই আবেগী প্রকৃতির মানুষ। একদিন সে রেডিও তে কোন এক প্রোগ্রামে একটা ছোট বাচ্চার কুরআন তেলাওয়াত শুনছিল। সেই বাচ্চাটা এত সুন্দর করে পড়ছিল যে ওই প্রোগ্রাম এর শিক্ষক বলছিলেন, ‘সুবহানআল্লাহ! তোমার নফ্স, তোমার মন খুব পবিত্র। তুমি খুব পবিত্র। আর এই কারণে আল্লাহ তোমাকে এত সহজে, এত সুন্দর করে তেলাওয়াত করার ক্ষমতা দিয়েছেন’। তো এই কথা শুনে ওই যুবক চিন্তায় পড়ে গেল এবং ভাবতে লাগলো – আমি মনে হয় ভালো মানুষ না, এজন্যে আমি ভালো করে কুরআন পড়তে পারি না, আমার আত্মা পবিত্র না। এসব ভেবে সে মানসিকভাবে কষ্ট পেতে লাগলো। যদিও আমি নিশ্চিত ওই রেডিও প্রোগ্রামের শিক্ষক এইরকম কিছু বোঝাতে চান নি, তিনি নিছক সেই বাচ্চা ছেলেকে উংসাহ দেয়ার জন্য এইরকম কিছু বলেছিলেন। এই প্রেক্ষিতে আসুন আমরা একটা হাদিস দেখি, রাসুল (স) বলেছেন ‘কুরআন তেলাওয়াতে পারদর্শী ব্যক্তিরা উচ্চ মর্যাদা সম্পন্ন ফেরেশতাদের সাথে থাকবে। কিন্তু যারা উচ্চারণগত বা অন্য কোন সমস্যা থাকা সত্বেও কষ্ট করে পড়ার চেষ্টা করে, তারা এর দ্বিগুন পুরস্কার পাবে। (সহি মুসলিম)’ এখন প্রশ্ন হচ্ছে ঐসব লোক কাদের তুলনায় এই দ্বিগুন পুরস্কার পাবে? সাধারণ তেলাওয়াতকারীদের তুলনায়? নাকি তেলাওয়াতে পারদর্শিদের তুলনায়? আমার মতে তেলাওয়াতে পারদর্শীদের তুলনায় এই দ্বিগুন পুরস্কার দেয়া হবে। কারণ একজন মানুষ কতটুকু অর্জন করলো আল্লাহ সেটাকে গুরুত্ব দেন না, আল্লাহ গুরত্ব দেন সে কী পরিমান চেষ্টা করলো সেটাকে। আমরা মানুষরাই অর্জনকে বেশি গুরুত্ব দেই, সবসময় দেখতে চাই ফলাফল কি, লাভ কতটুকু হলো? আমরা কতটুকু জানি, কতটুকু মুখস্ত করলাম, কতটুকু পড়লাম এই...

এখনই সময় পরিবর্তনের

আমি দুয়া করি যেন আমরা সবাই, আমরা এই দর্শকদের সবাই, আমাদের পরিবারে কী করি, কী হয় সেটার দায়িত্ব নিই। আমি যদি বলি যে আমাদেরকে উম্মাহর সদস্য হিসাবে পরিবর্তন করতে হবে, তাহলে আপনি আসলে কোন দায়িত্ব নেওয়া ছাড়াই এখান থেকে বের হয়ে যাবেন। হ্যাঁ উম্মাহ! আমি জানি না এটা কী। আপনাকে দায়িত্ব নিতে হবে আসলে আপনার নিজের পরিবারে কি হচ্ছে সেটার। আপনার পরিবার হচ্ছে আপনার জন্য সরকারের মত, এবং সেখানে যখন দুর্নীতি হয় এর অর্থ আপনার ঘরের মাঝেই একটা ফ্যাসাদপূর্ন পরিবেশ চলছে। সেখানেই আপনার পরিবর্তন করতে হবে, যদি আপনার নিজের পরিবারেই পরিবর্তিত না হয়, দুনিয়া পরিবর্তনের কথা ভুলে যান। আপনি নিজে যদি ব্যক্তিগত ভাবে পরিবর্তিত না হয়ে থাকেন, তাহলে দুনিয়া পরিবর্তনের কথা বলবেন না। আপনি আসলে নিজের সাথেই রসিকতা করছেন। নিজেকে ধোঁকা দিচ্ছেন। কীভাবে এটা সম্ভব যে আপনি বলছেন আপনি নবীজী মুহাম্মদ (সঃ) এর উম্মাহকে ভালোবাসেন কিন্তু যেভাবে আপনি আপনার স্ত্রীর সাথে ব্যবহার করছেন, তার সাথে নবীজী মুহাম্মদ (সঃ) উনার স্ত্রী- উম্মুল মু’মীনীনদের – সাথে যেভাবে ব্যবহার করতেন তার কোন মিলই নেই? কেমন করে এটা সম্ভব হতে পারে যে আপনি বলেন, আপনি নবীজী মুহাম্মদ (সঃ) কে ভালোবাসেন, বলেন যে আপনি পুরো বুখারী শরীফ, মুসলিম শরীফ শিখে ফেলবেন, দুনিয়ার সব জ্ঞান আহরণ করে ফেলবেন, কিন্তু যেভাবে আপনি আপনার বাচ্চাদের সাথে কথা বলেন, তাদের সাথে আচরন করেন, তাতে কোন “রাহমা” নেই, যেখানে নবীজী মুহাম্মদ (সঃ) যখন উনার সন্তানদের সাথে আচরন করতেন “রাহমা” সহকারে? আপনি কেন শিখছেন এগুলো? কেন শিখছেন এসব? কীভাবে সম্ভব যে আপনি কিভাবে আপনার পরিবারের সাথে ব্যবহার করছেন তাতে কোন প্রভাবই ফেলছে না আপনার শিক্ষা? মাসজিদে পাশের মুসলিমের সাথে যে ব্যবহার করছেন তাতে কেন এর কোন প্রভাবই পড়ছেনা ? কীভাবে সম্ভব যে আপনি যেভাবে গাড়ি চালাচ্ছেন তাতে এটা কোন প্রভাবই...

প্রবন্ধ

আপনার ভিতরের প্রতিভাকে খুঁজে নিন

আল্লাহ সূরা বনি ইসরাইলে বলেছেন,” বলুন, ‘প্রত্যেকেই নিজ প্রকৃতি অনুযায়ী কাজ করে থাকে এবং আপনার রব সম্যক অবগত আছেন চলার পথে কে সবচেয়ে নির্ভুল।‘”-(১৭:৮৪) এটি সূরা বনী-ইসরাইলের একটি খুব সুন্দর আয়াত। আল্লাহ সুবহানাহু তায়ালা আমাদের প্রত্যেককে কঠিন পরিশ্রম করার নির্দেশ দিয়েছেন আমাদের নিজ প্রকৃতি,প্রবণতা,আকৃতি,গঠনের উপর ভিত্তি করে। এর মানে হচ্ছে আমাকে আল্লাহ বিভিন্ন রকমের দক্ষতা দিয়েছেন, বিভিন্ন রকমের জেনেটিক্স,বিভিন্ন রকমের প্রতিভা, শক্তির বিভিন্নতা আপনাদের থেকে। আপনাকে আমার চেয়ে ভিন্ন প্রকৃতি আপনাকে দেওয়া হয়েছে,বিভিন্ন সুযোগ,ভিন্নরকম জেনেটিক অবকাঠামো। আপনাকে কিছু প্রতিভা দেয়া হয়েছে,আমাকে অন্যরকম প্রতিভা দেয়া হয়েছে, অন্যজনকে অন্যরকম প্রতিভা দেয়া হয়েছে। প্রথম কথা হল আল্লাহ বলেছেন নিজের সক্ষমতা অনুযায়ী কাজ করতে। আমরা যখন আল্লাহর এই নির্দেশনা সঠিকভাবে পালন করিনা তখন কি হয়? সবাই চিন্তা করতে শুরু করে,আমার লক্ষ্য ওই মানুষটির সাথে তুলনা করে সাজানো উচিত। এই মানুষটি এই লক্ষ্যে,ওই লক্ষ্যে পৌঁছেছেন, আমি কেন পৌঁছাতে পারিনি। আমার ভাই মেডিকেল কলেজে খুব ভাল করেছে কিন্তু আমি বায়োলজি পছন্দ করিনা তাই আমি একজন ব্যার্থ। আপনি কিছু বুঝতে পারছেন না মানে হল আপনার বোঝার সক্ষমতা আপনার ভাইয়ের সক্ষমতার মাঝে পার্থক্য রয়েছে। আমি জানিনা, আপনি হয়ত একজন ভাল অলিম্পিক ক্রীড়াবিদ হতে পারেন। আমি জানিনা,আপনি হয়তো একজন খুব ভাল লেখক হতে পারেন। আপনাকে আপনার ভাইয়ের মত প্রতিভা না দিয়ে হয়ত অন্য প্রতিভা দেয়া হয়েছে। আল্লাহ বলেছেন,”আর যা দ্বারা আল্লাহ তোমাদের কাউকে কারো উপর শ্রেষ্ঠত্ব দিয়েছেন তোমরা তার লালসা করো না।”(সূরা: নিসা- ৪:৩২) আল্লাহ কাউকে একটা বিষয়ে খুব ভাল দক্ষতা দিয়েছেন,হয়ত সে বিষয়ে আপনার দক্ষতা একদম কম,আবার আপনাকে যে বিষয়ে দক্ষতা দিয়েছেন অন্যজনের সে বিষয়ে হয়ত দক্ষতা নেই। তাই প্রথম কথা হল, এই আয়াতগুলোর মাদ্ধমে বলতে চাচ্ছি- আল্লাহ আমাদের একটি সুন্দর নির্দেশনা দিয়েছেন,নির্দেশনা মানে হল আমাদেরকে একটি লক্ষ্যে পৌঁছান। আজকাল অনেক মানুষের মনে প্রশ্ন আছে,তারা জিজ্ঞেস করে,...

সেই বিবাহ প্রস্তাবটি

— উস্তাদ নোমান আলী খান আপনাদের সাথে মুসা আলাইহিস সালামের কাহিনীর একটি অংশ আজ শেয়ার করতে যাচ্ছি। যা ঘটেছিল – মূসা আলাইহিস সালাম দুজন নারীকে সাহায্য করেন যারা তাকে উত্তম বিবেচনা করে তাদের ঘরে আমন্ত্রণ জানায় যাতে অর্থের বিনিময়ে তিনি তাদের জন্য কাজ করেন। তিনি তাদের ঘরে আসেন আর নিজের কাহিনী বিস্তারিত তাদের বলেন – কিভাবে তিনি মিশর থেকে পালালেন, আর সেখানে কিভাবে তাকে হত্যার অপরাধে অভিযুক্ত করা হয়েছে, এবং তিনি যে গৃহহীন ও আশ্রয় পেতে আগ্রহী  ইত্যাদি। সেই নারীরা ঘরের অন্য পাশ থেকে সব শুনছিলেন, তন্মধ্যে একজন তাদের পিতাকে ডাকলেন আর তাকে কিছু জানালেন। এই বিষয়টি কুরআনে উল্লিখিত হয়েছে, অর্থাৎ এটি গুরুত্বপূর্ণ। সে নারীটি পিতাকে ডেকে বললেন,  يا ابت استاجره  প্রিয় আব্বা, তাকে কাজের জন্য নিয়ে নিন।   দারুন। এই বৃদ্ধ লোকটির দুটি কন্যা রয়েছে, কিন্তু কোন পুত্রসন্তান নেই, স্বাভাবিক যে এ কারনেই তাকে তাঁর মেয়েদেরকেই পাঠাতে হয় যেকোন কাজের জন্য। মেয়েটি ভাল করেই জানে,  যদি মুসাকে কাজের জন্য নেয়া হয় তাহলে তাকে  অবিবাহিত এই নারীদের আশেপাশেই কাজ করতে হবে – যা অস্বস্তিকর পরিস্থিতির সৃষ্টি করবে। তো সে জানে বা বুঝতে পারছিল যে যদি তাকে ভাড়ায় নেয়া হয় – সুযোগ থাকে তাদের দুইজনের একজনের সাথেই তাঁর বিয়ে হবে । আর সে নিজেই যখন এই কথা বলছে, সুযোগ বেশি যে আব্বা তার ইংগিত বুঝবে – আব্বা, আমার মনে হয় বিবাহের জন্য সে এক উত্তম পুরুষ।  তো প্রথমেই যে বিষয়টি এখান থেকে আপনারা বুঝতে পারেন, এই নারীর আত্মবিশ্বাস ছিল যে সে নিজের বিয়ের জন্য আব্বাকে কারও সম্পর্কে বলতে পারে।  কোন কন্যাসন্তান বিবাহের ব্যাপারে কোন ছেলের প্রতি আগ্রহী থাকলে, তার পিতাকে ইঙ্গিত দিয়ে জানানোতে কোনই অন্যায় নেই। বড় একটি বিষয় যা এখান থেকে পাওয়া যায়। এতে কোন ক্ষতি নেই, লজ্জার ও...

আলেমদের ঝগড়ার কারনেই পরবর্তী প্রজন্ম বিশ্বাস হারাচ্ছে

নোমান আলি খান وان الذين اورثوا الكتاب من بعدهم لفي شك منه مريب তিনি বলেন – কোন সন্দেহ নেই যে যারা তাদের পরবর্তীতে বংশগতভাবে কিতাব পেয়েছিল, যাদের কিতাব দেয়া হয়েছিল উত্তরাধিকার সূত্রে اورثوا الكتاب من بعدهم শব্দগুলো নিয়ে একটু ভেবে দেখুন। সাধারণভাবে এখানে পরের প্রজন্ম নিয়ে তিনি বলছেন,  ঠিক কিনা ?  পরবর্তী জেনারেশানের মুসলিমরা। কিন্তু তিনি এটা কিভাবে বলছেন ? তিনি বোঝাতে চাচ্ছেন যে, যারা উত্তরাধিকারসূত্রে এই দ্বীন পেয়েছিল প্রথম প্রজন্ম থেকে – সেই প্রথম প্রজন্ম ব্যাস্ত ছিল অনৈক্য ও বিভাগ-বিভাজনে। তো এ থেকে আমাদের পরবর্তী প্রজন্ম কী শিখবে ?  বুঝতে পারছেন? তারা তাদের বড়দের যা যা করতে দেখেছিল, যেভাবে তাদেরকে দ্বীন অনুসরণ করতে দেখেছিল – সেটা এতটাই কুতসিত ছিল, এতটাই সামঞ্জস্যহীন ছিল..  কেননা আমরা জানি ধর্ম হওয়ার কথা এমন কিছু যা কিনা খুবই চমৎকার, এটা সমাজে ঐক্য নিয়ে আসে। উম্মাহর ভেতর একতার বিকাশ ঘটায়। এটা اشداء على الكفار رحماء بينهم সৃষ্টি করে।  হ্যা এমন অবস্থারই প্রবর্তন করে । এটা পুরোপুরি উলটো বিষয়ের প্রবর্তন ঘটায়।  কিন্তু পরবর্তীতে এমন প্রজন্মের আবির্ভাব ঘটলো যারা বিভেদ, অনৈক্যের মানুষদের থেকে দ্বীন শেখা শুরু করলো। হ্যা এটা নতুন প্রজন্ম।  এখন এই নতুন প্রজন্মের ব্যাপারে তিনি কী বলেন !?… তারা দেখতে পেল সেই বিষয়ের কদাকার চিত্র যা তাদের হাতে পৌছেছিল ।  তারা এখন আর এই কিতাবকে চমৎকার কিছু হিসেবে দেখে না। এই দ্বীনকে সুন্দর কিছু বলে মনে করে না। তারা আসলে ভয়ঙ্কর একটা রুপ তাদের সামনে দেখে থাকে। তো তাদের কী অবস্থা হয় জানেন ?  এই পরবর্তী প্রজন্ম ?   لفي شك منه তারা এ ব্যাপারে সংশয়তে ভোগে ।  পরবর্তী প্রজন্ম, তারা নিজেদের দ্বীনকেই সন্দেহ করতে শুরু করে। সুবহানাল্লাহ।  এ কেমন মূল, যা পরিশোধ করতে হচ্ছে, এই অপরাধের দরুন !  এখানে এমন মানুষজন রয়েছে যারা দ্বীন...

আমাদের পরিবারঃ আমার চোখের শীতলতা

– উস্তাদ নোমান আলী খান হে আল্লাহ আমাদের সেই অপ্রত্যাশিত উপহার প্রদান করুন। কি সেই অপ্রত্যাশিত উপহার?   رَبَّنَا هَبْ لَنَا مِنْ أَزْوَاجِنَا وَذُرِّيَّاتِنَا قُرَّةَ أَعْيُن- হে আমার প্রভু! স্ত্রী ও সন্তাদের দ্বারা আমার চোখ শীতল কর।অর্থাৎ, স্বামী বা স্ত্রী এবং সন্তান দেও যা আমাদের চোখ জুড়িয়ে দেয় ও চোখে আনন্দের অশ্রু বইয়ে দেয়। কুররাতা আইয়ুন, এর অর্থ কি আপনি জানেন? এর মানে এমন কিছু যা পাওয়ার আনন্দে আপনার চোখে আনন্দের অশ্রু চলে আসে। আপনি যখন দেখেন আপনার সন্তান কুরআন তিলাওয়াত করছে ও কুরআন তিলাওয়াত করতে ভালোবাসে তখন কি আনন্দে আপনার চোখে পানি আসে না কিংবা আপনার প্রিয়তমা স্ত্রী যখন অতি আদর-যত্নে বড় করে তোলে আপনার সন্তানদের তখন কি আপনার চোখ আনন্দে ভিজে যায় না? আপনি যখন দেখেন আপনার স্বামী আপনার সন্তানদের ফজরে ডেকে তোলে এবং তাদেরকে নিয়ে মসজিদে যায় তখনো আনন্দে আপনার চোখে অশ্রু চলে আসে, আপনি প্রচন্ড সুখ অনুভব করেন।অনেক স্বামী বা স্ত্রীকেই কাঁদতে দেখবেন কিন্তু তাদের এই কান্না কিন্তু আনন্দের কান্না না, তাদের এই কান্না অন্য কোন কারণে। আমরা আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করছি আনন্দের কান্নার জন্য, আমরা চাই আমাদের পরিবার নিয়ে সর্বোচ্চ সুখী হতে। কিন্তু সেটা কিভাবে হবেন? এখনো তো আপনি বাসায় গিয়ে আপনার স্ত্রীর সাথে ঝগড়া করেন। আপনি বাসায় গেলে আপনার স্ত্রী জিজ্ঞেস করে আপনার আসতে দেরি হলো কেন আর আপনিও তখন রেগেমেগে জবাব দেন এই বলে যে বারবার একই প্রশ্ন কেন করো, তুমি কি জানো না রাস্তায় কি পরিমাণ জ্যাম, জানালা দিয়ে বাইরে তাকালেই তো দেখতে পাও। এই ধরণের ঝগড়া নিয়মিতই হয় আর এরপর আপনি যখন আপনার সন্তানের কাছে যান তাকেও আপনি বকাঝকা করেন সে কেন খেলনা নিয়ে খেলছে বা কেন এত হাসাহাসি করছে, এত খুশির কি আছে এসব নিয়ে। তাকে বকা দেন তার হোমওয়ার্ক...

শুনতে শিখুন

নোমান আলী খান কিছু দিন আগে,আমি আসলে একটি গির্জার সমাবেশে অংশ নিয়েছিলাম,শুধু দেখার জন্যে যে তারা আসলে কি করে।সেটা  ছিল  বুধবার রাতে,এবং যাজক মতামতই  পাঁচ মিনিটের মতো কথা বলে।তার যা বলার প্রথমে সে তা বলে। এবং তারপরে সবচেয়ে আকর্ষণীয় ঘটনাটি  ঘটে।তিনি সমাবেত লোকজনকে জিজ্ঞাসা করলেন, “এখানে  কার কি সমস্যা হচ্ছে? আমাকে খলখুলি এই সম্পর্কে বলুন!” কিছু লোক বলল, “আমি সবেমাত্র আমার চাকরি হারিয়েছি। আমার কঠিন সময় পার হচ্ছে। “ “ঠিক আছে সবাই, জেফের জন্য প্রার্থনা করুন!” এবং প্রত্যেকে জেফের জন্য প্রার্থনা শুরু করে। তারপর কেউ বলল যে , “আমি সবে তালাক পেয়েছি, আমার স্ত্রী সকল সম্পদ নিয়ে নিয়েছে। “ প্রত্যেকে এই ব্যক্তির জন্য প্রার্থনা করুন… এবং তারপর এক মহিলা বলল, “আমি সবেমাত্র ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়েছি” এবং প্রত্যেকে তার জন্য প্রার্থনা করল। এবং কোনে বসে থাকা এক লোক বলল, “সে একটা চাকরি হারিয়েছে? আমার সাথে পরে কথা বলতে বলুন।  আমার প্রতিষ্ঠানে পদ খালি আছে। “ এবং তারা শুরু যা তাদের একসাথে একতাবদ্ধ  করল তা কিন্তু  এটা না যে এই লোকটি ঘন্টা পড় ঘন্টা কথা বলে যাচ্ছে এবং তারা সেখানে বসে বসে শুনছে, আসলে তারা এই সমাবেশে জড়ো হয়েছিল কারণ তাদের এমন একটি জায়গা আছে যেখানে তাদের শোনার মানুষ আছে। যেখানে তারা সমর্থিত বোধ করতে পারে। রসুলুল্লাহ (ﷺ) একজন আশ্চর্য শ্রোতা ছিলেন।আমরা রাসুলুল্লাহ (ﷺ) কে আশ্চর্য বক্তা মনে করি।হ্যাঁ অবশ্যই তিনি তা ছিলেন.তবে তিনি অবিশ্বাস্য শ্রোতাও ছিলেন। অনেক সময়, যাদের হৃদয় আপনি প্রভাবিত করতে চান, অনেক সময় আমরা চিন্তা করি যে আমরা যদি কেবল তাদের সাথে কথা বলি তবে তাদের  পরিবর্তন হবে। কিন্তু আমি আপনাদের বলব যে, মানুষের সাথে কথা বলার চেয়ে জরুরি হল, আমাদের লোকের কথা শুনতে শিখতে হবে,আমাদের লোকের কথা শুনতে শিখতে হবে।আপনি কেবল উত্তর দেয়ার জন্য তাদের কথা...

মু’জিযা

No Results Found

The page you requested could not be found. Try refining your search, or use the navigation above to locate the post.

ইমেইলের মাধ্যমে সংযুক্ত থাকুন



Created by Webfish.

Facebook Like

সাথেই থাকুন

 

<—-Facebook & YouTube —->

Youtube Subscriber