Articles, other scholars |
আমার মুসলিম ভাই ও বোনেরা, আমরা মুসলিম ভূমিতে এমন নৃসংসতা প্রত্যক্ষ করেছি যার মতো উদাহরণ বহুদিন ধরে আমরা দেখিনি। আমরা দেখেছি একজন ব্যক্তির ক্ষমতা এবং আধিপত্যের লালসার কারণে যেরকম নৃসংসতা সে ঘটিয়েছে আলেপ্পোতে, যুগ-যুগ ধরে যার দৃষ্টান্ত আমরা দেখিনি সুবহানাল্লাহ। যেভাবে সে তার জনগণকে হত্যা করেছে, যেভাবে সে রাজপথে রক্ত ঝরিয়েছে, যেভাবে সে ইসলামের শত্রুদের আসার সুযোগ করে দিয়েছে, আল্লাহর শপথ, এটা আমাকে মনে করিয়ে দেয় ইবনে তাইমিয়া যা বলেছেন। তিনি বলেছেন,…..। তিনি বলেছেন, নুসাইরিয়ারা কুফরীর দিক দিয়ে ইহুদি এবং নাসারাদের চেয়েও বেশী খারাপ। প্রকৃতই, আমি ইহুদীদেরকে দেখেছি ফিলিস্তিনে মুসলিমদের উপর অত্যাচার করতে, আমি পড়েছি কিভাবে ক্রুসেডাররা ফিলিস্তিনে মুসলিমদেরকে হত্যা করেছে। কিন্তু আমি এমন নৃসংসতা আর দেখিনি যেভাবে বাসার তার জনগণকে হত্যা করেছে। আমি দেখিনে এরকম দৃষ্টান্ত যেভাবে সে অত্যাচার করেছে, সুবহানা খলিকুল আজীম। আল্লাহর শপথ, সে তাদের চেয়েও কুফরীতে বেশী এগিয়ে। তো, প্রশ্ন হলো, আল্লাহ (সুবহানাহু ওয়া তাআলা) কেন অপেক্ষা করছেন ? অথবা আরেকটি প্রশ্ন মনে আসতে পারে, আল্লাহ (সুবহানাহু ওয়া তাআলা) কেন কিছু করছেন না ? আর এমনও হতে পারে যে আমাদের মনের ভিতরে রব্বুল আলামিন সম্পর্কে খারাপ ধারণা চলে আসে। হয়তো আপনার পরিবার সেই নৃশংসতার কারণে মারা গিয়েছে, অথবা আপনি হতে পারেন শরণার্থী যাকে নিজ দেশ থেকে বের করে দেওয়া হয়েছে, কিংবা আপনার পরিবার থেকে দূরে আছেন। এটা সম্ভব এবং আপতদৃষ্টিতে যুক্তিসঙ্গত যে, আল্লহ সম্পর্কে আপনার মনে খারাপ ধারণা তৈরী হতে পারে। কিন্তু আমি আপনাদেরকে বলতে চাই, প্রিয় ভাইয়েরা, কখনোই আল্লাহ সম্পর্কে খারাপ ধারণা করবেন না। আল্লাহর প্রত্যেকটি কাজের পেছনে একটি কারণ এবং হিকমাহ নিহিত রয়েছে। তাঁর প্রত্যেকটি কাজের পেছেনই বিচক্ষণতা রয়েছে, সর্বনিম্ন বিচক্ষণতা হলো আল্লাহ সুবহানাহু তাআলা চান বেশী বেশী মানুষকে শহীদ হিসেবে গ্রহণ করতে। আপনারা কি লক্ষ্য করেননি, যখন রাসূল (সঃ) তাঁর সাহাবাদের কাছে...
Articles, other scholars |
কুরআনের অন্যতম একটি প্রধান থিম, আক্ষরিকভাবে কুরআনের প্রতিটি পৃষ্ঠায় আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তায়ালা মৃত্যুর পরের জীবনের কথা উল্লেখ করেছেন। এটি আমাদের ধর্মের অন্যতম একটি মৌলিক স্তম্ভ। এটি অন্যতম একটি প্রধান বিষয় যা রাসূল (স) কুরাইশদের শিক্ষা দিয়েছিলেন। কারণ কুরাইশরা বিশ্বাস করতো না যে, মৃত্যুর পর আরেকটি জীবন রয়েছে। আর আল্লাহ এই বিষয়টি বিভিন্নভাবে মানুষকে বুঝিয়েছেন। যৌক্তিক প্রমানের মাধ্যমে – আল্লাহ বলেন – মৃত জমিনের দিকে তাকাও যাকে আমি পুনরায় জীবন দান করি। মৃত গাছের দিকে তাকাও, মরার পর সেগুলো আবার জীবন ফিরে পায়। শক্তিশালী সব সৃষ্টির দিকে তাকাও, তোমার নিজের জীবনের দিকে তাকাও। নিশ্চয়ই যিনি তোমাকে প্রথমবার সৃষ্টি করেছেন; তিনি তোমাকে পুনরায়ও সৃষ্টি করতে পারবেন। আল্লাহ যে প্রমাণগুলো ব্যবহার করেছেন সেগুলো নৈতিক প্রমান। আল্লাহ বলেন – তোমরা কি মনে করো আমি ধর্মভীরু এবং ধর্মহীনকে অথবা সৎ এবং অসৎ ব্যক্তিকে একই রকম প্রতিদান দিবো? এই পৃথিবীতে কখনো কখনো হাজার হাজার মানুষকে খুন করা ব্যক্তিও পার পেয়ে যায়। এই পৃথিবীতে চরম কোনো পাপিষ্ঠ ব্যক্তিকেও মাঝে মাঝে দেখা যায় উন্নত জীবন যাপন করতে। তারা নিরপরাধ মানুষকে নির্যাতন করে, হত্যা করে। এখন যদি মৃত্যুর পর কোনো জীবন না থাকে, জান্নাত-জাহান্নাম না থাকে, তাহলে জীবনটা তো খুবই অন্যায্য হয়ে পড়ে। ন্যায়ের আশ্রয় গ্রহণ করার তো আর কোনো সুযোগ থাকে না। কিন্তু আল্লাহ বলেছেন – তিনি ন্যায় বিচারক। তিনি সীমাহীন ন্যায়বিচারক। আর তাই বিচার দিবস অবশ্যই সত্য। সেই বিচার দিবসে মানুষকে তার ভালো কাজের জন্য পুরস্কৃত করা হবে; আর হ্যাঁ, তাদের অন্যায় কাজের শাস্তি দেয়া হবে। আবারো বলছি কুরআনে পরকাল বিষয়ে অসংখ্য আয়াত রয়েছে। কিন্তু দিনশেষে আপনাকে এটা বিশ্বাস করতে হবে। আমি আপনাদের কোনো বৈজ্ঞানিক প্রমান দিতে পারবো না। এমন কোনো ইকুয়েশন দিতে পারবো না যা প্রমান করবে যে মৃত্যুর পর আরেকটি জীবন রয়েছে। কিন্তু...
Articles, other scholars |
আপনি কি জানেন, জান্নাতের সবচেয়ে চমকপ্রদ বিষয়টি কী হবে? আল্লাহ আমাদের সবাইকে জান্নাতে একত্রিত করবেন ইনশাআল্লাহ! এবং আল্লাহ আমাদের সাথে কথা বলবেন। কল্পনা করুন… সহীহ হাদিস ভাইয়েরা, আমি চাই আপনারা সত্যিকার অর্থেই ব্যাপারটা কল্পনা করুন কোনো হাসি ঠাট্টা নয়। জান্নাতে আল্লাহ্ আমাদের সকলকে একত্রিত করবেন এবং আল্লাহ আমাদের সাথে কথা বলবেন আমার ভাই ও বোনেরা, আল্লাহ আপনাদের জিজ্ঞাসা করবেন “তোমরা কি আর কিছু চাও? তোমাদের জন্য আর কী করতে পারি?” কল্পনা করুন, এই ভঙ্গিমায় আল্লাহ আপনার সাথে কথা বলছেন… কল্পনা করুন আল্লাহ আপনাকে ডেকে বলছেন, আমি কি তোমার জন্য আর কিছু করতে পারি? তখন আমরা বলব, “হে আল্লাহ! আপনি আমাদের জাহান্নাম থেকে রক্ষা করেছেন, আমাদের জান্নাতে দাখিল করেছেন, আপনি আমাদের চিরদিনের জন্য জান্নাতে থাকার সুযোগ দিয়েছেন, আপনি আমাদের এতসব ভোগবিলাসের সামগ্রী প্রদান করেছেন হে আল্লাহ! আমাদের আর কিইবা চাওয়ার থাকতে পারে?” তখন আল্লাহ বলবেন, “তোমরা কি সন্তুষ্ট?” আমরা বলব, “হে আল্লাহ! আমরা এতটাই সন্তুষ্ট যে আমাদের আর কিছুই চাওয়ার নেই!” আল্লাহ বলবেন- “যদি তা-ই হয়ে থাকে আজকের দিন থেকে আমি কথা দিচ্ছি যে আজকের দিন থেকে, আমি আর কোনোদিন তোমাদের উপর অসন্তুষ্ট হবো না! (অর্থাৎ আমি চিরদিনের জন্য তোমাদের উপর সন্তুষ্ট হয়ে গেলাম!)”। এটা কল্পনা করুন ভাইয়েরা আমার…কল্পনা করুন, আল্লাহ আপনার উপর আর কক্ষনো রুষ্ট হবেন না! আপনি কি ভাবছেন এখানেই শেষ? ওয়াল্লাহি, এখানেই শেষ নয়! রাসূলুল্লাহ (সা.) সহীহ হাদিসে আমাদের জানিয়েছেন…আল্লাহ আমাদের একত্রিত করবেন আরেকবার এবং বলবেন, “হে আমার বান্দারা! তোমরা কি সুখী? তোমরা কি খুশি? তোমরা কি সন্তুষ্ট?” এবং আমরা উত্তর দিবো…”হে আল্লাহ! আমাদের আর কি চাওয়ার থাকতে পারে?” “হে আল্লাহ! আমরা যা চেয়েছি, আপনি তো আমাদের সবই দিয়েছেন! হে আল্লাহ! আপনি আমাদের জান্নাত দিয়েছেন, আপনি আমাদের সকল ইচ্ছা পূরণ করেছেন। এবং আপনি আমাদের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন যে,...
Articles, other scholars |
আমি আপনাদের ভাই ওমর সুলেইমান। সুপারস্টার সিরিজে স্বাগতম। ইনশা আল্লাহ, আজকে আমরা নবীদের পরে সবচেয়ে শ্রেষ্ঠ মানুষটিকে জানবো, আর তিনি হলেন আবু বকর সিদ্দীক (রা)। আর এটা রাসূলের (স) নিজের করা একটি উক্তি থেকে প্রমাণীত। আবু বকরকে (রা) যদি লক্ষ্য করেন, আপনি দেখতে পাবেন যে তিনি যেন রাসূলের (স) অবিকল প্রতিচ্ছবি ছিলেন। তিনি সবাইকে ছাড়িয়ে গেছেন দানশীলতায়, তিনি সবাইকে ছাড়িয়ে গেছেন শালীনতায়, তিনি সবাইকে ছাড়িয়ে গেছেন নামাজ আদায়ে, তিনি সবাইকে ছাড়িয়ে গেছেন কুরআন তিলাওয়াতে, তিনি সবাইকে ছাড়িয়ে গেছেন সবকিছুতে। আর এ কারণেই আলী (রা) আবু বকর (রা) সম্পর্কে বলেছেন, ( كَانَ سَبَّاقََا لِكُلِّ خَيْرِِ ) । আপনি যে কোন ভাল কাজের কথাই চিন্তা করেন, আবু বকর (রা) ইতিমধ্যেই সেটা করে ফেলেছেন। কিন্তু যেটা আমাদের কাছে তাঁকে বিষ্ময়কর করে তোলে, তা হলো তিনি ছিলেন আস-সিদ্দীক। তিনি ছিলেন এমন ব্যক্তিত্ব, যার সত্যবাদীতার সাক্ষ্য রাসূল (স) নিজে দিয়েছিলেন। রাসূলের (স) সাক্ষ্য অনুযায়ী তিনি ছিলেন শ্রেষ্ঠ মানুষ। কেন ? কারণ, যখনই তিনি বলেছেন যে তিনি কোন বিষয়ে বিশ্বাস স্থাপন করেছেন, যখনই তিনি বলেছেন যে তিনি রাসূলকে (স) বিশ্বাস করেন, তিনি হৃদয়ের গভীর থেকেই বলেছেন। তাঁর কথা এবং বাস্তবতর মাঝে যেমন সামঞ্জস্য ছিলো, তেমনি মিল ছিলো কথা এবং কাজে – যখনই তিনি বলেছেন তিনি আল্লাহ এবং রাসূলকে (স) ভালোবাসেন। একারণেই আমরা দেখতে পাই, যখন তাঁর বন্ধু রাসূল (স) তাঁর কাছে এসে বললেন, আমি আল্লাহর নবী, আবু বকর (রা) সেদিনই ইসলাম গ্রহণ করলেন এবং প্রভাবশালীদের মধ্যে অনেককেই ইসলামে নিয়ে আসলেন। তাদের মধ্যে ছিলেন, তালহা, যুবাইর, উসমান (রা), আব্দুর রহমান ইবনে আউফ। তিনি ইসলামে নিয়ে আসলেন অর্ধেকেরও বেশী আশারা মুবাশশিরীন, যারা ছিলেন জান্নাতের সুসংবাদপ্রাপ্ত দশ জন সহাবী, যাদেরকে নিয়ে আমরা এই সিরিজে আলোচনা করছি। কিন্তু আজকে আসলেই যে বিষয়ে নজর দিতে চাই, তা হলো, রাসূলের (স)...