ঈমান, লেভেল, ও আমাদের জাজমেন্টাল মানসিকতা – ২য় পর্ব

ঈমান, লেভেল, ও আমাদের জাজমেন্টাল মানসিকতা – ২য় পর্ব

বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহীম কিছু কিছু মানুষের আধ্যাত্বিক ঈমান দীর্ঘ সময় ধরে সমস্যায় জড়িয়ে থাকে। আমি এও বলেছি যে আধ্যাত্বিক সমস্যা দীর্ঘদিন ধরে যদি সমস্যায় জড়িয়ে থাকে সেটা বুদ্ধিবৃত্তিক ঈমানেও সমস্যা ঘটায়। এমন সময় অনেকেই তাদেরকে আধ্যাত্বিক সমস্যার সমাধানে আধ্যাত্বিকতা উন্নত করতে বলে। অথচ এতদিনে সে কিন্তু বুদ্ধিবৃত্তিক সমস্যায়ও জড়িয়ে গেছে। এজন্য তখন আধ্যাত্বিক উন্নয়ন ও সমাধানের সাথে বুদ্ধিবৃত্তিক সমস্যারও সমাধান দরকার। আবার কিছু মানুষ কেবল বুদ্ধিবৃত্তিক সমাধানের জন্য বলে। এটার সমস্যা হলো একটি আধ্যাত্বিক সমস্যার সমাধান না করতে পারলে এই সমস্যা তাকে আরো একটি বুদ্ধিবৃত্তিক সমস্যার দিকে নিয়ে যাবে, সেটি আবার অন্য আরেকটি বুদ্ধিবৃত্তিক সমস্যায় ফেলবে…এভাবে চলতেই থাকবে। কারো যদি আধ্যাত্বিক সমস্যা থাকে আর তাকে বুদ্ধিবৃত্তিক সমাধান দিতে থাকেন দর্শন, আকীদা ইত্যাদি দিয়ে, তখন তাঁর আরো নতুন সমস্যা বাড়তে থাকে, বাড়তেই থাকে, বাড়তেই থাকে। কারণ হলো তাঁর প্রয়োজন ছিল আধ্যাত্বিক সমস্যার সমাধান আর আপনি তাকে দিয়েছেন বুদ্ধিবৃত্তিক সমাধানের আলোচনা যা তাকে আরো সমস্যায় ফেলেছে। উস্তাদ নুমান আলী খান শাইখ আব্দুর নাসির জাংদার একটা ঘটনা উল্লেখ করেন এখানে(যা তাঁর Prophetic Biography, Podcast এও বলেছেন, qalaminstitute.org)। এক ব্যক্তি হাদীস নিয়ে সন্দিহান হয়ে পড়েন। হাদীস নিয়ে বিভিন্ন সন্দেহ প্রকাশ করতো। এই হাদীসে এমন অথচ অন্য হাদীসে তেমন কেন? এই হাদীস এরকম কেন আর অন্য হাদীসে অন্যভাবে কেন? এভাবে সে এখান থেকে এক হাদীস, আরেক জায়গা থেকে অন্য হাদীস পড়ে মিলাতে না পেরে, সন্দেহে পড়ে যায় এমনকি রাসল কে সমালোচনা করে বসে আর তাকে অস্বীকার করে বসে। তার কথা সে আর মুসলিম থাকবে না। সে কিন্তু মুসলিম। তারপরেও সে রাসূলের সমালোচনা করতো কেন তিনি এই হাদীস বললেন, কেন তার কথায় ইবাদত এই রকম ইত্যাদি। শাইখ আব্দুন নাসির জাংদা তাকে একটা বই দিলো। বললো পুরোটা পড়তে। এবং আরোও নির্দেশনা দিলো যে সে যেন পূর্ণটা...
ঈমান, লেভেল ও আমাদের জাজমেন্টাল মানসিকতা – ১ম পর্ব

ঈমান, লেভেল ও আমাদের জাজমেন্টাল মানসিকতা – ১ম পর্ব

 বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহীম আমরা যখন ঈমানের কথা চিন্তা করি তখন প্রথমত দুই প্রকার ঈমানের কথা বলি। সেগুলো হলো   ১। আইনগত ঈমান (Legal Iman) ২। প্রকৃত ঈমান (Real Iman)   প্রকৃত ঈমান দুই প্রকার   ১। আধ্যাত্বিক ঈমান (Sprititual Iman) ২। বুদ্ধিবৃত্তিক/যৌক্তিক ঈমান (Intellectual/ Rational Iman)   কেউ যখন শাহাদাহ বলে ইসলাম গ্রহণ করে, সেটা লিগাল বা আইনগত ঈমান। অর্থাৎ তিনি ইসলাম গ্রহণ করেছে। ইসলামী আইনগতভাবে বা শরীয়ার দৃষ্টিকোণ থেকে সে মুসলিম। লিগাল ঈমানের সুবিধা হলো একজন ব্যক্তি যে মুসলিম সেটা বুঝতে পারি। তার ঈমানে অবস্থা কি, কিয়ামাতের দিনে সে কেমন থাকবে এসব বিষয় এর সাথে সংশ্লিষ্ট নয়। লিগাল ঈমান আখিরাতে কোনো কাজে আসবে না। আখিরাতে একমাত্র প্রকৃত ঈমান-ই কাজে আসবে। আপনি সালাত আদায় করেন, আমরা আপনাকে সালাম দেই, আপনি দুনিয়াতে ইসলাম গ্রহণ করে সন্তুষ্ট। আপনি দুনিয়াতে সবার কাছে মুসলিম হিসেবে পরিচিত। কিন্তু আখিরাতে আল্লাহর কাছে ধর্তব্য বিষয় হবে একমাত্র প্রকৃত ঈমান। লিগাল ঈমান স্থির। এটা কমেও না বাড়েও না। আপনি ঘুমালেও মুসলিম, জেগে থাকলেও মুসলিম, সালাত আদায় করলেও মুসলিম। আল্লাহ যখন ‘হে ইমানদারগণ’ বলে সম্বোধন করেন, এটা ইসলাম যে গ্রহণ করেছে সবাইকে অন্তর্ভূক্ত করে। কিন্তু আমরা তো এও জানি আমাদের ঈমানের কিছু বিষয়াবলি কমে-বাড়ে, ওঠানামা করে। এটাই প্রকৃত ঈমান। অর্থাৎ প্রকৃত ঈমান কমে বাড়ে আমাদের ভালো-মন্দ, পূণ্য বা পাপ কাজ করার কারণে। আর এই প্রকৃত ঈমানের মধ্যে ‘আধ্যাত্বিক ঈমান’-ই ওঠানামা করে বা কমে-বাড়ে। এই ‘আধ্যাত্বিক ঈমান’ যখন অতিরিক্ত ওঠানামা করে তখন এটি ‘বুদ্ধিবৃত্তিক ঈমান’ এর সাথে বিশৃংখলা ঘটায়, তালগোল পাকিয়ে ফেলে। এভাবেই ঈমানের বিষয়গুলো কাজ করে। আপনি লিগালি মুসলিম কিন্তু আপনার সাথে আল্লাহর সম্পর্ক, মানুষের সাথে সম্পর্কে প্রকৃত ঈমান ওঠানামা করে, যা আল্লাহর নিকটে আখিরাতে মূল হিসেবে গণ্য হবে, যার ভিত্তিতে আল্লাহ হিসাব নির্ধারণ করবেন। কুরআনের প্রাথমিক নির্দেশনা...