নুমান আলী খান বাংলা ভিডিও

বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম আলহামদুলিল্লাহ, আমরা এখন উস্তাদ নুমান আলী খানের সকল বাংলা রিসোর্স আর্কাইভ সিরিজ আকারে নিয়ে এসেছি। এখানে বাংলা ভিডিও (ডাবিং ও সাবটাইটেল) এর একটি রিসোর্স সিরিজ পাবেন শিরোনামসহ সিরিয়াল আকারে। যারা মোবাইলে ভিডিও দেখতে বা ডাউনলোড করতে পারেন না, তারা ভিডিও এর সাথে দেওয়া অনুবাদ পড়তে পারেন।

কুরআনের রত্নঃ পথভ্রষ্টতা যেভাবে শুরু হয়

উস্তাদ নুমান আলী খানের কুরআন উইকলি তে দেয়া কুরআনের রত্ন সিরিজ থেকে।   শুরু করছি আল্লাহর নামে যিনি পরম করুণাময়, অতি দয়ালু। فَخَلَفَ مِن بَعْدِهِمْ خَلْفٌ أَضَاعُوا الصَّلَاةَ وَاتَّبَعُوا الشَّهَوَاتِ فَسَوْفَ يَلْقَوْنَ غَيًّا   বাংলা ভাবার্থঃ “অতঃপর তাদের পরে এল অপদার্থ পরবর্তীরা। তারা সালাত নষ্ট করল এবং কুপ্রবৃত্তির অনুবর্তী হল। সুতরাং তারা অচিরেই পথভ্রষ্টতা প্রত্যক্ষ করবে।” [১৯:৫৯] আমি ওস্তাদ নুমান, কুরআনের ১৬তম পারার অন্তর্ভুক্ত সুরা মারিয়ামের ৫৯নং আয়াতটি নিয়ে আলোচনা করবো। আর এই হল আমার বড় ছেলে ইমাদ । আলহামদুলিল্লাহ, সে আজ আমার সাথে যোগ দিয়েছে। ইমাদ তুমি কেমন আছ? ভালো । তুমি কি মনোযোগ দিয়ে শুনবে ? হাঁ । ঠিকাছে ভালো । আল্লাহ এই আয়াতে বনী ইসরাইলদের সম্পর্কে কথা বলেছেন । এই আয়াতের আগের আয়াতগুলোতে বিভিন্ন সময়ে আল্লাহ্‌র প্রেরিত নবী-রাসুলদের কথা বলা হয়েছে। যেমনঃ নুহ (আঃ) ও তাঁর বংশধর যারা মহাপ্লাবন থেকে উদ্ধার পেয়েছিল, ইব্রাহিম (আঃ) এবং তাঁর বংশধর বিশেষ করে ইসমাইল (আঃ), ইসহাক (আঃ), ইয়াকুব (আঃ) এবং তাঁর ছেলেরা, এবং মুসা (আঃ) সম্পর্কে বলা হয়েছে। এখানে উনাদের অনুসারীদের মধ্য থেকে একটি নির্দৃষ্ট প্রজন্মের কথা বলা হয়েছে যারা প্রত্যাশা পুরন করতে ব্যর্থ হয়েছিল। সেই প্রজন্ম সম্পর্কে আল্লাহ্‌‘তালা বলেছেন এইভাবেঃ ‘ফাখালাফা মিম বা‘দিহিম খালফুন’ অতঃপর তাদের পরে কারা এলো ? এমন মানুষ যারা প্রত্যাশা পুরন করতে ব্যর্থ হয়েছিল। এখানে ‘খালফ’ শব্দটি ব্যবহার করা হয়েছে। ‘খালাফ’ (লাম এর উপর জবর দিয়ে ) অর্থ পরবর্তী প্রজন্ম যারা  প্রত্যাশা পূরণ করতে সক্ষম, যারা দ্বীনের পথে রয়েছে। অপরদিকে ‘খালফ’ [সুকুনযোগে] অর্থ পরবর্তী প্রজন্ম যারা তাদের পূর্বপুরুষদের শিক্ষা  কে  এগিয়ে নিয়ে যায়নি, তারা পেছনে ফিরে গিয়েছিল। তারা পূর্ববর্তীদের কাছ থেকে নির্দেশনা পাওয়ার পরও পথভ্রষ্ট হয়েছিল। এখানে আল্লাহ্‌‘তালা বনী ইসরাইলদেরকে তেমন একটি জাতি হিসেবে চিহ্নিত করে ছেন যারা নবী-রাসুলদের কাছ থেকে স্পষ্ট নির্দেশ পাবার পরও...

কখনও হতাশ হবেন না

  আমি আপনাদের শয়তানের একটা চালাকির কথা বলছি শুনুন। মনে করুন আপনার অফিসে যেতে দেরী হয়েছে এবং দেরী করার জন্য আপনার বস রাগ হয়ে আছেন।অফিসে আরও অনেক মানুষ আছে। আপনি এরকম সময় কী করেন? আপনি সকলের নজর এড়িয়ে নিজের কিউবিকলে গিয়ে চুপচাপ বসে পড়েন। আপনি তখন বসের সাথে দেখা করতে চান না। অথবা মনে করুন একটা বাজে রিপোর্ট কার্ড নিয়ে আপনি বাড়ি ফিরলেন।যখন আপনি ক্লাস ৬ বা ৭ এ আর খারাপ রিপোর্ট কার্ড নিয়ে আসেন তখন আপনি  চুপিসারে  ঘরে ঢুকবেন। কোন “আসসালামু আলাইকুম” নেই কিছু না। চুপিসারে ঢুকে আপনি ঘুমের ভান করে পড়ে রইলেন। মা যদি জিজ্ঞেস করেন, “আজকে স্কুলে কী হোল?” আপনি বলবেন, “তেমন কিছু না।” আপনি যখন কাউকে হতাশ করেন তখন তার থেকে দূরে দূরে থাকেন। এটাই স্বাভাবিক। এই ক্ষেত্রে, যখন আমরা অশ্লীল কাজ করি, নিজেদের উপর যুলম করি, তখন আমরা কাকে হতাশ করি? আল্লাহ আযযা ওয়াযালকে! আপনি আল্লাহ্‌কে অসুন্তষ্টি করেন। শয়তান তখন এর সুযোগ নেয়। আপনার কাছে এসে সে বলে যে তুমি এখন আবার সালাহ পড়তে যাবে? ভন্ড! তুমি এতসব অশ্লীল কাজ করে এখন আবার একটা ক্লাস করতে যাবে?এখন তুমি ইবাদত করতে যাবে? তুমি তো দু’মুখো মানুষ! তখন সে বলে হ্যাঁ আমি তো দু’মুখো মানুষ; আমার সালাহ পড়া উচিত না। শয়তান আপনার গুনাহের সুযোগ নিয়ে আল্লাহর কাছ থেকে আপনাকে দূরে সরিয়ে রাখে। আপনি তখন আল্লাহর সামনে দাঁড়াতে বিব্রত বোধ করেন। কিন্তু একজন সত্যিকারের মুত্তাকী যখন ভুল কিছু করে তৎক্ষণাৎ সে কী করে? সে আল্লাহকে স্মরণ করে! যাকারুল্লাহ। ফা বা সুম্মাও আসেনি এখানে! “ফাসতাগফারু লিযুনুবিহিম।” তারপর তারা আল্লাহর কাছে ক্ষমা চেয়ে নেয়। (৩:১৩৫) এখানে যুনুব শব্দটা দিয়ে পাপ বোঝান হচ্ছে যা এসেছে যানাব থেকে। যানাব দিয়ে মূলত বোঝান হয় এমন একটা পাপ যার কারণে আপনি অসম্মানিত বোধ...

কুরআনের রত্নঃ শয়তানের কৌশল

উস্তাদ নুমান আলী খানের কুরআন উইকলি তে দেয়া কুরআনের রত্ন সিরিজ থেকে।   فَدَلَّاهُمَا بِغُرُورٍ অতঃপর প্রতারণাপূর্বক তাদেরকে সম্মত করে ফেলল। সূরা আল আরাফঃ ২২ আসসালামু আলায়কুম, Quran Weekly. সূরা আল আরাফ এর ২২ নম্বর আয়াতটি দীর্ঘ একটি আয়াত, কিন্তু এই সংক্ষিপ্ত আলোচনায়, আমি আপনাদের সামনে তুলে ধরতে চাই এর প্রথম অংশ, যার মধ্যে  আছে  জীবনের জন্য অবিশ্বাস্য রকমের প্রজ্ঞা। আমরা কিভাবে শয়তানের মোকাবেলা করবো, আল্লাহ বর্ণনা করছেন, শয়তান কিভাবে আমাদের আদি পিতামাতা আদম (আঃ) ও হাওয়া (আঃ) কে ভুল করার জন্য প্ররোচিত করেছিল। তার কি এমন পদ্ধতি ছিল, যাতে তারা তার কথা মত কাজ করেছিলো? এটা শুধু তার কথার মধ্যেই সীমাবদ্ধ নয়, আমরা সবাই জানি যে সে তাদেরকে প্ররোচিত করেছিল, আমরা জানি যে সে তাদের কে অনন্ত জীবনের লোভ দেখিয়েছিল এবং বলেছিল যে তারা জান্নাতে থাকতে পারবে। এটা আমরা সবাই জানি, কিন্তু সে আসলে কিভাবে তা করেছিল, তার পদ্ধতি কি ছিল? এই পদ্ধতিটি বুঝা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এবং এটাই তুলে ধরা হয়েছে আয়াতটির প্রথম অংশে – ফাদাল্লাহুম্মা বি গুরুরিন। “দাল্লা” ব্যবহার করা হয় যখন আপনি বালতি টেনে তুলেন। আরবিতে “দাল্লু” বলতে বালতি বুঝানো হয় আর “আদলা” মানে হল বালতি নীচে ফেলে আবার টেনে  উপরে  উঠানো। যেমন পুরনো দিনে কুয়াতে বালতি ফেলে পানি টেনে উপরে উঠানো হত, মানে বালতি টেনে টেনে তুলতে হত, এটাই হল “আদলা”। কিন্তু “দাল্লা” হল খুব ধীরে  ধীরে বালতি নামানো, যেমন খুব পুরনো পশু শিকার করার পদ্ধতি। যেমন আপনার কাছে একটি গাজর বা কিছু খাবার আছে, আপনি তা বালতিতে রেখে দিলেন, এবং  বালতিটা দড়িতে বাঁধা। যখন কোন প্রাণী তাতে আকৃষ্ট হয়, আপনি ধীরে ধীরে বালতিটি নিজের দিকে টেনে নিয়ে আসেন, আর প্রাণীটি পিছু পিছু আসে। এটাই হল “দাল্লা”। আক্ষরিক ভাবেই, শয়তান তাদের কে বলেনি, “আল্লাহকে অমান্য...

আপনার সন্তানকে যথেষ্ট সময় দিচ্ছেন তো?

উস্তাদ নুমান আলী খানের ২০১০ এ ICNA তে দেয়া “Time, Love, Praise & Encouragement” লেকচারের অংশ বিশেষ।   টিনেজারদের বাবা-মারা প্রায় সময়ই আমার কাছে আসেন। ‘জানেন, আমার ছেলেটা না, আমার কথা শোনেই না আজকাল। আপনি ওর সাথে একটু কথা  বলবেন?’ যেন আমি কোনো মহৌষধ সাথে নিয়ে ঘুরি! যেন সেই ছেলেটা আমার কাছে আসলে আমি ওর গায়ে ফু দিয়ে দেব এভাবে। আর সাথে সাথেই সে দারুন লক্ষী  ছেলে হয়ে যাবে! ‘একটু যদি কথা বলতেন’। না, বরং আপনি আপনার ছেলের সাথে কথা বলছেন না কেন? কোথায় ছিলেন আপনি যখন তার সাথে কথা বলার প্রকৃত সময় ছিল? আজকে আমি আপনাদের সাথে বাবা-মাদের নিয়ে একটু কথা বলব, তারপর বলব স্বামী-স্ত্রীদের নিয়ে। আজকে এই দু’টো জিনিস নিয়ে বলারই সময় আছে। দু’টো খুবই মৌলিক সম্পর্ক: একটা আপনার সন্তানদের সাথে, আরেকটা আপনার জীবনসঙ্গীর সাথে। এই দু’টো সম্পর্কের ব্যপারেই আমরা খুব বেসিক কিছু ব্যাপার নিয়ে  আলোচনা  করবো। আপনার সন্তান যখন ছোট, খুবই ছোট, ধরুন যখন তাদের বয়স পাঁচ, ছয়, সাত, দুই, তিন, চার, তখন তাদের কাছে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কোন জিনিসটা বলুন তো? আমার নিজের পাঁচটা বাচ্চা আছে, তাই আমি খুব ভালো বলতে পারবো এ ব্যপারে। তাদের কাছে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো আপনার সমর্থন। তারা আপনাকে গর্বিত করতে চায়। তারা যা যা করেছে সব আপনাকে দেখাতে চায়। ধরুন, আমি জরুরী কোনো কাজের আলাপ করছি ফোনে, জরুরী একটা ফোন, আর এ সময় আমার দুই বছরের ছেলে এসে বলবে, – “আব্বা আব্বা আব্বা আব্বা আব্বা।” – “ভাই, একটু লাইনে থাকেন। কি হয়েছে?” – “হে হে হে”। ব্যস! আমি আবার ফোনালাপে ফিরে গেলাম, সে আবার আমাকে ডাকা শুরু করল। আমি বললাম, – “আচ্ছা ঠিক আছে, কি হয়েছে বলো”। – “আমি তোমাকে একটা জিনিস দেখাবো”। – “কি দেখাতে চাও বাবা?” – ” হে...

মু্সলিমদের দায়িত্ব

উস্তাদ নুমান আলী খানের কুরআন উইকলি তে দেয়া কুরআনের রত্ন  সিরিজ থেকে রাসুলরা ছিলেন জান্নাতের সুসংবাদবাহী ও জাহান্নামের ভয় প্রদর্শনকারী,তাদের এজন্যই পাঠানো হয়েছিল যাতে করে রাসুলদের আগমনের পর আল্লাহ্‌ তায়ালার নিকট মানবজাতির কোন অজুহাত পেশ করার সুযোগ না থাকে; সত্যিই আল্লাহ্‌ তায়ালা মহাপরাক্রমশালি ও প্রজ্ঞাময়। সূরা আন-নিসাঃ ১৬৫ আসসালামু আলাইকুম ওয়ারাহমাতাল্লাহি ওয়াবারকাতুহু। আজকের সংক্ষিপ্ত রিমাইন্ডার বেশ গুরুত্বপূর্ণ। আল্লাহ্‌ সুবহানাহুওয়াতায়ালা সূরা নিসা আয়াত ১৬৫ তে আমাদের যা বলেছেন তা অনেক শক্তিশালী। “রাসুলরা ছিলেন জান্নাতের সুসংবাদবাহী ও জাহান্নামের ভয় প্রদর্শনকারী”। অবশ্যই আমরা জানি তাঁরা তা করেছেন। কিন্তু তারপর আল্লাহ্‌ বললেন আমাদের যে কেন তিনি তাঁদের পাঠিয়েছিলেন “যাতে করে রাসুলদের আগমনের পর আল্লাহ্‌ তায়ালার ওপর মানবজাতির কোন অজুহাত খাড়া করার সুযোগ না থাকে”। অন্যভাবে বলা যায় রাসুলদের পাঠানোই হয়েছে যাতে মানবজাতির কোন অজুহাত না চলে আল্লাহ্‌ সুবাহানাহুওয়াতালার পথ থেকে সরে যাওয়ার। এই কারণে রাসুলদের পাঠানো হয়েছে।এটা আসলেই অনেক কঠিন। এটা এই রুপ যেন আল্লাহ্‌ সুবাহানাহুওয়াতায়ালা বলছেন “ ইনিই সেই রাসুলুল্লাহ , শেষ নবীকে  পাঠানো  হয়েছে  মানবজাতির আর কোন অজুহাত চলবেনা। ইনিই শেষ নবী”। আপনি কি জানেন এটার মানে একজন মুসলিমের জন্য কি দাড়ায়? এটার মানে এই দুনিয়াতে যদি কেউ মোহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে না চিনেন উনি আসলেই কেমন তা না জানেন , তিনি তেমন নয় যারা তাকে ঘৃণা করে তারা যেভাবে উপস্থাপন করেন, তেমন ও নয় মিডিয়া অন্যের সামনে  তাঁকে  যেভাবে  তুলে  ধরে  বরং  তারা তো জানেনই না উনি সত্যিকারে কেমন, কিন্তু তিনি আসলেই কেমন তা যদি আমরা না জানি এটা আমাদের বহন করতে হবে কারন আমরা রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর মিশনের বাহক। কিন্তু এখন মানবজাতির কোন বিকল্প পথ নেই। কোন অজুহাত ও নেই। এই কারনেই রাসুলদের পাঠানো হয়েছিল। যদি রাসুলদের শুধু মাত্র তাঁদের জাতির জন্য প্রেরন করা হত তখন...

গান-বাজনা (মিউজিক) কি এতই খারাপ?

আমার মতে, বর্তমান সময়ে মিউজিক হল নৈতিক অবক্ষয়ের অন্যতম সহজ উপায়। বর্তমানে মিউজিক হল অডিও পর্ণগ্রাফি। এটা সত্যিই তাই। এটা স্পষ্টতই অশালীন এবং অভদ্র। এটা আপনার মধ্য থেকে মনুষ্যত্ব দূর করে দেয়, এটা আপনাকে নারীকে ভোগ্যপণ্য ভাবতে শিখায়, এমনকি ভোগ্যপণ্য থেকেও নিকৃষ্ট ভাবতে শিখায়। পশুর চেয়েও খারাপ ভাবতে শিখায়। এরা নারী সম্পর্কে এমন ভাবে কথা বলে যেন নারীরা পশু। সত্যি। এটা নারীকে ভোগ্যবস্তু রূপে পেশ করে, আমি বিশেষ ভাবে লক্ষ্য করেছি যে, আমার পরিচিতদের মাঝে অনেকেই এমন যারা মুসলিম, কিন্তু তারা “হিপ হপ” সংস্কৃতিতে আকৃষ্ট। তাদের অনেকেই গানগুলো হিফয বা মুখস্ত করে ফেলে, তাইনা? তারা গানগুলো মুখস্ত করে এবং তাজবীদ এর সাথে গানগুলো গাইতেও পারে, তাইনা? এবং তাই তারা এটা করে এবং গান গুলোর ভাষা খুবই কদর্য, খুবই ভয়াল, নিম্নমানের ভাষা। আপনাদের কি আর বলব, আমার একমাত্র মতামত এটাই যে, আপনার যদি আল্লাহ্ তাআলার  কিতাবের প্রতি বিন্দুমাত্রও শ্রদ্ধা থাকে, যদি আপনি সত্যি বিশ্বাস করেন যে  এটা  আল্লাহর পক্ষ থেকে নাজিল হয়েছে, “বি সালিস্মুল ফুসুকু বা’দাল ঈমান”, এমন কি খারাপ জিনিষ এর নাম, এর উল্লেখ, এ শব্দ ব্যবহার করাও ভয়াবহ, যদি আপনার বিশ্বাস থেকে থাকে। এমনকি কোন ভয়ানক খারাপ জিনিষ এর উল্লেখ করাও আপনার জন্য ক্ষতিকর, যদি আপনার বিশ্বাস থেকে থাকে। আপনার জিহব্বা/ভাষা অবশ্যই পরিষ্কার রাখতে হবে। আপনাকে বলতে হবে- “কুল্লি ইবাদুল ইয়াকুলুললাতি হিয়া আহসান” – আমার বান্দাদেরকে বলুন তাই বলতে যা সবচেয়ে ভাল। সবচেয়ে ভাল কথা বলুন। আপনার জিহবা দিয়ে ভাল কথা বলুন। এটাই হল প্রথম ধাপ। যখন আপনি কদর্য কথা বলেন এবং এমন কথা বলেন যা আমাদের জন্য আল্লাহ্ তাআলার নির্ধারিত নৈতিক মাপকাঠির সরাসরি বিপরীতে, তখন খুব স্পষ্টতই আপনি আপনার স্বাভাবিক বিশ্বাস থেকে দূরে সরে যাচ্ছেন, আল্লাহ্ তাআলার পথে চলার প্রবণতা  থেকে  দূরে  সরে যাচ্ছেন। আপনি যখন বিরতিহীন...

সালাতঃ ব্যক্তিত্ব পরিবর্তনকারী এক ইবাদাত। আসলেই কি আমাদের জীবনে পরিবর্তন আসছে?

উস্তাদ নুমান আলী খানের ডেইলি রিমাইন্ডার এ দেওয়া লেকচারের অংশ বিশেষ   হে মুমিনগণ! তোমরা রুকু কর, সেজদা কর, তোমাদের পালনকর্তার ইবাদাত কর এবং সৎকাজ সম্পাদন কর, যাতে তোমরা সফলকাম হতে পার। (সূরা আল-হাজ্জঃ আয়াত ৭৭) (এ আয়াতে আল্লাহ তা’আলা বলছেন) আমি তোমাদের শিখিয়ে দেই কিভাবে আল্লাহকে যথাযথ স্বীকৃতি দিতে হয়। ঠিক এভাবেই আল্লাহর মর্যাদার যথাযথ মূল্যায়ন করতে হয়। রুকূ’ কর এবং সিজদাহ কর। এই দুটি কাজই কিসের প্রতি ইঙ্গিত করছে? সালাত। (আল্লাহ বলছেন) তোমার উচিত আমাকে যথোপযুক্ত স্বীকৃতি দেওয়া। আর এর জন্যে প্রথম পদক্ষেপ হল সালাত আদায় করা আমরা আমাদের নামাযকে কতটা গুরত্ব দেই তা থেকে বুঝা যায় আমরা আল্লাহকে কতটা মর্যাদা দেই। আমরা কতটা সক্রিয় এবং সতর্ক ঘুম থেকে উঠে নামায পড়ার ব্যাপারে, মসজিদে যেতে কতটা আলসেমি লাগে, কুর’আনের তিলাওয়াত আকর্ষণীয় না হলে আমরা কতটা বিরক্ত অনুভব করি. এসব ব্যাপারই বলে দেয় আল্লাহর কাছে আমাদের অবস্থান কোথায়। যে আসলে নামায সম্পর্কে জানে না, মুসলিমদের প্রার্থনার ব্যাপারে যার কোন ধারণা নেই। যেমন একজন Non-Muslim, সে যদি হঠাৎ করে কিছু মুসলিমদের নামায পড়তে দেখে তবে সে খেয়াল করবে এই মানুষগুলো মাথা নিচু করে দাঁড়িয়ে আছে অর্থাৎ তারা কারও প্রতি তাদের হীনাবস্থা প্রকাশ করছে। এরপর তারা মাথাসহ অর্ধেক শরীর ঝুঁকিয়ে ফেলে। ওয়াও! তারা আরও বিনয়ী হয়ে উঠেছে। তারপর যখন তারা দাঁড়িয়ে পড়ে এরপর কী হয়? সঙ্গে সঙ্গে মাটিতে লুটিয়ে পড়ে! তারা সর্বোচ্চ সম্মান প্রদর্শন করছে! অন্য কথায় সে খেয়াল করবে আল্লাহর প্রতি সম্মান প্রদর্শনে তারা প্রতিনিয়ত অগ্রসর হচ্ছে। তারা যার ইবাদত করছে তাঁর প্রতি তারা আরও বেশি আজ্ঞাবহ হচ্ছে।দেখে মনে হবে তারা তাদের প্রভুকে সম্মান প্রদর্শন করছে…আরও সম্মান প্রদর্শন করছে… আরও বেশি সম্মান প্রদর্শন করছে। সালাতের এই অগ্রসরতা আমাদের শিক্ষা দেয় যে আল্লাহর প্রতি আমাদের বিনয়াবনত অবস্থা বেড়ে উঠা উচিত,...
{{unknown}}

ইসলাম ও ইগো (আত্ম-অহংকার)

বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম আমি সত্যিই সম্মানিত বোধ করছি এবং কিছুটা আশ্চর্যও হয়েছি আপনারা এতক্ষণ অপেক্ষা করেছেন দেখে আলহামদুলিল্লাহ্‌। আমার কণ্ঠস্বর কিছুটা ক্লান্ত মনে হতে পারে কারণ আমি আসলেই তাই … আট ঘন্টার টানা লেকচার ছিল কিন্তু আমি ইনশাল্লাহ খুব গুরুত্বপূর্ণ একটা বিষয় নিয়ে খুব সংক্ষিপ্ত কিছু কথা শেয়ার করব। এটা এমন একটা বিষয় যা এখন আর তেমন আলোচনায় আসে না কিন্তু এর প্রতি আমাদের মনোযোগ দেয়া প্রয়োজন। কোন সন্দেহ নেই যে এই বিষয়ের প্রতি আমাদের নজর দেয়া দরকার ইনশাল্লাহ। আমি আপনাদের সাথে কথা বলতে চাচ্ছি মুসলিম তরুণদের নিয়ে যারা কোন ধর্মীয় পথের ভেতর দিয়ে যাচ্ছে, বিশেষ করে পশ্চিমা সমাজে। তাদের মাঝে এক সংষ্কৃতি গড়ে উঠেছে। অনেক সময়ই মুসলিম তরুণরা যে জীবন যাপন করে তাকে বলা যেতে পারে … মনে করুন ‘পার্টিইং’ … ঠিক আছে … এবং তারপর জীবনের কোন এক সময় তারা কোন বিশেষ উপলব্ধির মুখোমুখি হয় এবং দ্বীনের পথে চলতে শুরু করে। এমন প্রচুর ভাই-বোন আছে যারা জীবনের কোন এক সময় পরিবর্তিত মানসিকতার ভেতর দিয়ে যায় এবং তারপর ধীরে ধীরে আরও ধার্মিক হয়ে ওঠে। কিন্তু তারপর যা হয় তা হচ্ছে, যখন সময়ের সাথে সাথে তারা আরও ধার্মিক হয়ে ওঠে, তারা অনেক বেশি কড়া হয়ে যায় এবং নিজেদের জন্য নিজেরাই কোন শিক্ষক খুঁজে নেয়। সেই শিক্ষক হচ্ছে কখনো কোন মানুষ, কখনো কোন লেকচার সিরিজ, কখনো কোন ওয়েবসাইট, কখনো ব্লগ, কখনো অপরিচিত কোন নাম কিন্তু সেটা যাই হোক না কেন, তারা নিজেদের জন্য একটা জ্ঞানের উৎস খুঁজে নেয় যেটাকে তারা “সঠিক” বলে মনে করে। এর প্রতি তারা খুবই অনুরক্ত হয়ে পড়ে এবং আস্তে আস্তে যা ঘটতে শুরু করে তা হচ্ছে তারা খুব কঠোর ও অনমনীয় হয়ে ওঠে। তারা লক্ষ্য করতে শুরু করে যে তাদের চারপাশের মানুষরা ঠিক তাদের মতো না।...

আল্লাহর কিতাব অনুযায়ী জীবন যাপন ও তার ফল

উস্তাদ নুমান আলী খানের কুরআন উইকলি তে দেয়া কুরআনের রত্ন সিরিজ থেকে   “আর যদি তারা তাওরাত, ইঞ্জিল এবং যা তাদের প্রতিপালকের পক্ষ থেকে অবতীর্ণ হয়েছে, পুরোপুরি পালন করত, তবে তারা উপর থেকে এবং পায়ের নীচ থেকে (অর্থাৎ আসমানী বরকত এবং ভূ-গর্ভের নেয়ামত) ভক্ষণ করতো। তাদের মধ্যে কিছু সংখ্যক লোক মধ্যপন্থা অবলম্বনকারী এবং অবশিষ্ট বেশিরভাগ লোকই মন্দ কাজ করে যাচ্ছে।” সূরা মায়িদাহঃ ৬৫ আজকের আলোচনায় সূরা মায়িদাহ এর ৬৬ নং আয়াতে আল্লাহ বলছেন, “ওয়া লাও আন্নাহুম আক্বামুত তাওরাতা ওয়াল ইঞ্জিল” – যদি ঐ লোকেরা তাওরাত এবং ইঞ্জিল প্রতিষ্ঠা করত (পুরোপুরি মেনে চলত)- আল্লাহ এখানে সেই সময়ের ইহুদি এবং খ্রীস্টানদের কথা বলছেন। তাদের উপর তাওরাত এবং ইঞ্জিল নাজিল হয়েছিলো।  যদি তারা সেই কিতাব মেনে চলত, “ওয়া মা উনঝিলা ইলাইহিম মিন রাব্বিহিম” – এবং অন্যান্য যেসব কিতাব তাদের প্রভুর পক্ষ থেকে নাজিল করা হয়েছিলো সেগুলো মেনে চলত, “লাআকালু মিন ফাউক্বিহিম ওয়া মিন তাহতিহিম” – তাহলে তারা তাদের উপর থেকে আর তাদের নিচ থেকে আহার পেতো। আল্লাহ বলছেন, যদি তুমি কিতাব প্রতিষ্ঠা কর, তাহলে শুধু জান্নাতেই সুখী জীবন পাবে না। যে বিষয়ে আগের আয়াতে ৬৫ নং আয়াতে আলোচনা করা হয়েছে, বরং এখানেও সুখী জীবন পাবে। তুমি উপর থেকে আর নীচ থেকে আহার পাবে। বিষয়টা এমন না যে আল্লাহর কিতাব মেনে চললে সবকিছু হারাতে হবে। অনেক মানুষ মনে করে যদি তারা আল্লাহর কিতাব অনুযায়ী জীবন ধারণ করে তাহলে সে জীবন হবে দুর্বিষহ। জীবনে অনেক কিছু তাদের হারাতে হবে। আল্লাহ আযযা ওয়া জাল্লা বলেন, হায় যদি তোমরা জানতে! আমি আসমানের রিযিকের দরজা খুলে দিতাম, জমিনের রিযিকের দরজা খুলে দিতাম। তোমরা শুধু সেসব ভোগ করতে, তোমরা বিলাসী জীবন পেতে... শুধু কী করতে হবে? মাত্র একটা জিনিসই করতে হবে – আল্লাহ’র কিতাব মেনে চলতে হবে। সুবহানাল্লাহ!...

আল্লাহর ওয়াস্তে বলিউড মুভি দেখা বন্ধ করুন

উস্তাদ নুমান আলী খানের বাহরাইনে দেয়া ‘Friends Part 1’ লেকচারের অংশ বিশেষ।   সবার আগে আল্লাহর ওয়াস্তে ভারতীয় মুভি দেখা বন্ধ করুন! প্লিজ! আর কতবার মানুষকে গাছের চারপাশে চরকি খেতে দেখবেন!? যথেষ্ট হয়েছে। আর দিনে দিনে এসব মুভি নোংরা থেকে আরও নোংরা হয়ে যাচ্ছে! আমি একটা রেস্টুরেন্টে গিয়েছিলাম। বেশিদিন আগের কথা না। আমার ছেলেমেয়ের সাথে। সিয়াটলে একটা হালাল রেস্টুরেন্ট। আমরা চেক করেছিলাম এটা হালাল রেস্টুরেন্ট ছিল। তো আমরা সেখানে গেলাম। হালাল রেস্টুরেন্ট ছিল ঠিকই কিন্তু বিনোদনের জন্যে তারা বলিউডের ব্যবস্থা রেখেছিল। আক্ষরিক অর্থে আমার নিজেকে এবং আমার ছেলেমেয়েদের ঘুরে বসতে হয়েছিল! কারণ এটা এতো নোংরা ছিল! এত জঘণ্য! এই জিনিস আপনাদের ঘরের ভিতরে কেমন করে অবলীলায় চলতে থাকে? আপনার ঘরে মা আছে, বোন আছে, স্ত্রী আছে, মেয়ে আছে আর সাথে এটাও!? ব্যপারটা অত্যন্ত জঘণ্য। এসব বন্ধ করুন! এগুলো কোন ধরনের কল্পনাতেও গ্রহণযোগ্য নয়। এসব দেখে আপনারা আপনাদের পরিবারকে ধ্বংস করে দিচ্ছেন। আপনারা এসব মুভিকে আপনাদের ডিজিটাল ফ্রেন্ড বানিয়ে ফেলেছেন তাই সব সময় এসব দেখছেন। সুবহানাল্লাহ।...

ইস! এটা যদি আমার থাকতো!

উস্তাদ নুমান আলী খানের বাহরাইনে দেয়া  ‘Friends Part 1’ লেকচারের অংশ বিশেষ।   আমি নিজে নিজের মতই থাকব। আমি যা, আমি তাতেই সন্তুষ্ট। আমার কোন প্রয়োজন নেই এমন কিছু হবার যা আমি নই, তা হবার ইচ্ছাও করব না। বিশেষত, আমি মেয়েদের এবং আমার ছোট বোনদের বলছি যারা আজ এখানে উপস্থিত আছে। আমার মতে, বর্তমান আমেরিকা সহ সারা বিশ্বে নারীদের জন্য সবচেয়ে বড় সংকট হল আত্ম-সম্মান এর অভাব। বিশেষত, মুসলিম নারীদের আত্ম-সম্মান। আপনাদের সামনে অমুসলিম নারীদের উদাহরণ আছে যারা যেভাবে খুশি পোশাক পরিধান করে, অথচ আপনাদের পোশাকে সীমাবদ্ধতা রয়েছে। আর আপনাদের মনে হয় আমাকে দেখতে কুশ্রী লাগবে আর তাদের সুন্দর লাগবে। অবশ্য কিছু মেয়েরা এমনটাই চিন্তা করে, কেন আমাকে এসব পোশাক পড়তে হবে ? অথবা আমি কেন এত খাটো কিংবা এত মোটা অথবা এত চর্মসার ? অনেকে ভাবে, কেন আমার চোখগুলোর দূরত্ব এত বেশি বা নাকটা এত বড় কেন ? কিংবা আমার দাঁতগুলো কি সমান হতে পারত না ইত্যাদি। কেন ? কেন আপনারা নিজেকে নিয়ে এত চিন্তিত । আমার গালে এত দাগ কেন ? ওহহ !! আমি অনেক চিন্তা করি, দেখ দেখ, কী অবস্থা ! কী বিশ্রী !! এভাবে আপনারা কমপক্ষে ৩৫ মিনিট আয়নায় দাড়িয়ে থাকেন। না, এটা ঠিক না। আপনি যা, তা নিয়েই সন্তুষ্ট থাকুন। এটাই গুরুত্বপূর্ণ আপনার জন্য। অন্যের কোন কিছুতেই নিজেকে খুঁজবেন না। আল্লাহ্‌ মানুষকে অতি সুন্দর করেই সৃষ্টি করেছেন। وَلَا تَتَمَنَّوْا مَا فَضَّلَ اللَّهُ بِهِ بَعْضَكُمْ عَلَىٰ بَعْضٍ ۚ لِّلرِّجَالِ نَصِيبٌ مِّمَّا اكْتَسَبُوا ۖ وَلِلنِّسَاءِ نَصِيبٌ مِّمَّا اكْتَسَبْنَ ۚ وَاسْأَلُوا اللَّهَ مِن فَضْلِهِ ۗ إِنَّ اللَّهَ كَانَ بِكُلِّ شَيْءٍ عَلِيمًا আর তোমরা আকাঙ্ক্ষা করো না এমন সব বিষয়ে যাতে আল্লাহ তাআলা তোমাদের একের উপর অপরের শ্রেষ্ঠত্ব দান করেছেন। পুরুষ যা অর্জন করে সেটা তার অংশ এবং...

আমরা কি আসলেই তাওহিদে বিশ্বাস করি?

“আহাদ” এই ধারণাটি তথা একক সত্ত্বার এই ধারণাটি।  ইসলামিক ধর্মতত্ত্বের বিশিষ্ট একজন লেখক ডঃ রফী’ উদ্দীন এই সুরাহ সম্বন্ধে মন্তব্য করতে গিয়ে অতি আশ্চর্য‍্যজনক কিছু তত্ত্ব প্রদান করেন। আমি আসলেই এর প্রশংসা করি, এবং আমি মনে করি আধুনিক শ্রোতাদের মনে এই তত্ত্বগুলো গেঁথে দেওয়া প্রয়োজন। আল্লাহ মানব জাতির মধ্যে তাঁর সম্পর্কে জ্ঞান প্রদান করে তৈরী করেছেন। মানব জাতি শুরু থেকেই জানত যে, সর্বোচ্চ সত্ত্বা আল্লাহ বিদ‍্যমান। এরকম নয় যে, একজন উপাস‍্য আছেন, তিনি আমাদের সৃষ্টি করেছেন, এখন আমরা যা ইচ্ছা তাই করতে পারি। না, সেটা নয়। বরঞ্চ তিনিই রব, তিনিই প্রভু। আমার জীবনের মূল লক্ষ‍্যবস্তু হচ্ছে তিনি যা চান তা করা।এটা আমার সর্বোচ্চ আদর্শ। তাঁর দাসে পরিণত হওয়াই হচ্ছে আমার জীবনের সবচেয়ে বড় পাওয়া। এটাই হবে আমার জন‍্য সবচেয়ে বড় সম্মানের বিষয়। আল্লাহর নবী (সাঃ), তাঁর বড় সম্মান ছিল তিনি আল্লাহর ‘‘عبد’’ হয়েছিলেন। আল্লাহর দাস হওয়া সবচেয়ে সম্মানের বিষয়। এটাই হচ্ছে জীবনের মূল লক্ষ‍্যবস্তু এবং আল্লাহ সেই লক্ষ‍্যবস্তুটি সকল মানবজাতির অন্তরে খোদাই করে দিয়েছেন। কিন্তু যদি আপনি সেই লক্ষ‍্যবস্তুর দিশা হারিয়ে ফেলেন তখন যেটা হয়, সেই লক্ষ‍্যবস্তু পরিপূর্ণতার পিপাসা বা ক্ষুধা আপনার মধ্যে বিরাজ করে, যা দ্বারা আল্লাহ আপনাকে সৃষ্টি করেছেন। কিন্তু আপনার ক্ষুধা যখন স্বাস্থ‍্যকর খাবার দ্বারা নিবারিত হয় না, তখন কি দিয়ে নিবারণ করেন? আপনি যদি সঠিক খাবার না পান, আপনি কি তাহলে বলবেন যে, আমি খাবই না। না। যখন কোন ব‍্যক্তি ক্ষুধায় কাতর থাকে এবং তার পছন্দের কোন খাবার যদি তখন সে না পায় অথবা কোন স্বাস্থ‍্যকর খাবারও নেই, শুধু আছে ময়লা আবর্জনা, গাছের ছাল-পালা মানুষ কি তা নিয়েই চোষাচুষি শুরু করবে না, যখন সে এরকম পরিস্থিতির স্বীকার হবে? অবশ‍্যই করবে। যখন আপনি মহান আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের উদ্দেশ্যকে ভুলে যান, সেটা যখন আর আপনার লক্ষ্যবস্তু হয়...

জীবনের উদ্দেশ্য

সমগ্র মানবজাতি কিসের প্রতি অনুপ্রানিত, কি তাকে আকর্ষণ করে সে বিষয়ে পবিত্র কুরআন খুব ভালভাবেই আলোচনা করে। একাধিকবার আল্লাহ পাক আলোচনা করেন এমন কিছু বিষয়ে, যেমন পুরুষদের মহিলাদের প্রতি আসক্তি, অথবা অর্থের প্রতি আসক্তি, আথবা সামাজিক পদ মর্যাদার প্রতি আসক্তি অথবা মানুষ আশা করে নিজের একটি বাসস্থানের মত সুন্দর কোন জিনিস। তাই মানুষ এগুলো পাওয়ার জন‍্য কাজ করে, কারন এগুলোর প্রতি তারা প্রবল আসক্তি অনুভব করে। এমনকি আজকালকার দিনেও অনেক যুবক-যুবতীরা হয়ত চায় তাদের ডিগ্রী শেষ করতে অথবা তাদের কর্মক্ষেত্র এগিয়ে যেতে অথবা একটি সম্পর্কের সুত্রপাত করতে চায় যার প্রত‍্যাশী তারা ছিল। এ সবগুলো বিষয়ই সবসময় বিদ‍্যমান আছে, সবসময় বিদ‍্যমান ছিল। এগুলোর একটি আধুনিক রূপ আজকাল বিদ‍্যমান এবং আরেকটি পুরনো, মানে প্রাক-আধুনিক রূপ আগে বিদ‍্যমান ছিল। কিন্তু সুনিপুণভাবে  কোর’আন ঘোষনা দেয় যে, এগুলো মানুষের প্রকৃত লক্ষ‍্যবস্তু নয়। তাই কেউ হয়ত কাজ করে যাচ্ছে নিজেকে বিশেষ আকারে পরিবেশন করার লক্ষ্যে নয়ত কেউ কাজ করে যাচ্ছে অন‍্য কারো সান্নিধ‍্য পাওয়ার লক্ষ্যে অথবা কেউ কাজ করে যাচ্ছে অতিরিক্ত কিছু অর্থ উপার্জনের আশায়। এগুলোর কোনটিই আসল লক্ষ‍্যবস্তু নয়। এগুলো হচ্ছে একটি বৃহত্তর সমাপ্তির মাধ‍্যম মাত্র এবং সেই সমাপ্তি আমরা আমাদের জীবনে যেসকল ক্ষুদ্র মাইলফলক অর্জন করি তার নির্দেশনা দেয়। প্রকৃতপক্ষে এই জীবন শুধুমাত্র বাস্তব কিছু অর্জন করার জন‍্যই নয়। অথবা শুধু শারীরিক সুখ অর্জনের জন্য নয়। এই জীবন হচ্ছে সঠিক লক্ষ‍্যবস্তু স্থির করা সম্পর্কে। সঠিক লক্ষ‍্যবস্তু পাওয়া যায় তখনই যখন আপনি জীবন যাপন করেন শুধুমাত্র আপনার নিজের অবস্থাকে ভাল করার জন‍্যই নয় বরং আপনার চারপাশের সবকিছু ভাল করার উদ্দেশ‍্যে। ইসলাম মানে হচ্ছে নিজের ইচ্ছেগুলোকে আল্লাহর ইচ্ছার নিকট সমর্পন করা, যেন আপনি নিজেকে চিরস্থায়ী সুখের জন‍্য প্রস্তুত করতে পারেন। এবং এটা করার মাধ‍্যমে আপনি এসব পার্থিব সুখ-স্বাচ্ছন্দ‍্যের বিসর্জন দেন না, আপনি এই জীবনও উপভোগ...

‘আলহামদুলিল্লাহ’ এর মানে আসলে কী?

আমরা সেই দলের লোক যারা বলি ‘আলহামদুলিল্লাহ’, ‘আলহামদুলিল্লাহ’ এর অর্থ কী? যদিও আমরা এর অর্থ নিয়ে ঘন্টার পর ঘন্টা আলোচনা করতে পারি, প্রকৃতপক্ষে এর মূল অর্থ দুটি। আলহামদুলিল্লাহ এর দুটি অংশ রয়েছে। প্রথমটি হলো – আপনি আল্লাহর প্রতি কৃতজ্ঞ (আল্লাহকে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন), কৃতজ্ঞতা (শুধুমাত্র) আল্লাহর জন্য। আর দ্বিতীয় অংশ হলো – প্রশংসা; প্রশংসা আল্লাহর জন্য। কৃতজ্ঞতা ও প্রশংসা দুটি আলাদা বিষয়। একদিকে প্রশংসা আর অন্যদিকে কৃতজ্ঞতা, দুটি দিক। এখন চলুন প্রথমে আমরা এই দুটি বিষয়ের পার্থক্য বোঝার চেষ্টা করি। আপনি একটি সুন্দর বাড়ি দেখলেন, এবং প্রশংসা করলেন, কিন্তু আপনি বাড়িটিকে ধন্যবাদ দিবেন না। আপনি একজন অসাধারণ খেলোয়াড় দেখলেন, যিনি ফুটবল খেলেন, তিনি একটি অসাধারণ গোল করলেন। আপনি ঐ খেলোয়াড়ের প্রশংসা করবেন, কিন্তু আপনি ঐ খেলোয়াড়কে ধন্যবাদ দিবেন না, আপনি ঐ খেলোয়াড়ের প্রতি কৃতজ্ঞ হবেন না। আপনি একটি অসম্ভব সুন্দর গাড়ি দেখলেন। আপনি গাড়িটির প্রশংসা করবেন, কিন্তু গাড়িটির প্রতি কৃতজ্ঞ হবেন না। আবার মাঝে মাঝে উল্টোটাও ঘটে। কিছু মানুষের প্রতি আপনি কৃতজ্ঞ থাকেন যদিও আপনি কখনো তাদের প্রশংসা করবেন না। এমন ঘটে। এর উদাহরণ হচ্ছে ‒ আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তায়ালা একজন মুসলিমকে সকল অবস্থাতেই তার বাবা-মার প্রতি কৃতজ্ঞ থাকতে বলেন, এমনকি তার বাবা-মা মুশরিক হলেও়! আপনাকে অবশ্যই আপনার পিতা-মাতার প্রতি কৃতজ্ঞ থাকতে হবে। এমনকি যদিও তারা আপনাকে শিরক করার জন্য জোর করেন। তারা চান আপনি ঈমান পরিত্যাগ করেন, তারপরও আপনাকে উনাদের প্রতি কৃতজ্ঞ থাকতে হবে। আপনি তাদের শিরক এর প্রশংসা করবেন না , কিন্তু তারপর ও আপনি তাদের প্রতি কৃতজ্ঞ থাকবেন। অতএব জীবনের কোনো কোনো সময় আপনি প্রশংসা পাবেন কৃতজ্ঞতা ছাড়া, আবার কখনো কখনো কৃতজ্ঞতা দেখবেন প্রশংসা ছাড়া। আমি আপনাদের নিকট আরো একটি উদাহরণ পেশ করব, যার মধ্যে কৃতজ্ঞতা আছে কিন্তু প্রশংসা নেই, যেন বিষয়টি পরিষ্কার হয়ে যায়। আপনারা...

আধ্যাত্মিক ও বুদ্ধিবৃত্তিক পরিশুদ্ধি

আজকের খুতবার একদম শুরুতে আমি দুটো কথা বলে নিতে চাই, প্রথমত এই যে, অনেক দীর্ঘ সময় নিয়ে ভাবনা চিন্তার পর আজকে যে বিষয়টি আমি বেছে নিয়েছি, এটা খুব কঠিন এবং জটিল। যদিও আমি যখন খুতবার জন্য কোন বিষয় নির্বাচন করি সাধারণত আমি চেষ্টা করি সেটাকে যতটা সহজ করা যায়। কিন্তু আমি মনে করি এই বিষয়টা নিয়ে আলোচনা করা সব মুসলিমদের জন্য যথেষ্ট জরুরী এবং ভীষণ গুরুত্বপুর্ণ তাই আমি আল্লাহ্ আজ্জা ওয়াজ্বালের কাছে প্রার্থনা করছি যেন আজকের বক্তব্যে আমি আমার ভাবনাগুলো খুব পরিষ্কারভাবে উপস্থাপন করতে পারি যাতে আপনারা এ থেকে উপকৃত হতে পারেন। দ্বিতীয়ত, যখনই আমি এখানে এলাম আমি দেখলাম আমাদের ইমাম সাহেব এখানে বসে আছেন, আমার মনে হলো আরবীতে একটা কথা আছে, “আগনাস সাবা আনীল মিসবাহ”, যার মানে হলো, “সময়টা যখন সকাল, আপনার বাতির প্রয়োজন নেই” (স্মিত হাসি)। আমি ঠিক জানি না আমাকে কেন খুতবা দেওয়ার জন্য আমন্ত্রিত করা হয়েছে যেখানে ইমাম সাহেব স্বয়ং উপস্থিত আছেন। যা হোক, যেহেতু আমি এখন এ জায়গায় আছি, ইন শা আল্লাহ আশা করছি আমি এ সুযোগটা সুষ্ঠুভাবে কাজে লাগাতে পারবো। আজকের এই সংক্ষিপ্ত খুতবায় আমি কুরআনের সাথে আমাদের সম্পর্কের দুইটি দিক নিয়ে কথা বলতে চাই। আল্লাহ্ আজ্জা ওয়াজ্বাল কুরআনের সাথে আমাদের সম্পর্ক নিয়ে বর্ণনা করেছেন বিভিন্ন ভাবে। এটা শুধু এক ধরণের সম্পর্ক নয়, কুরআনের সাথে আমাদের সম্পর্কটা বিভিন্ন ধরণের। যেমন ধরুন এটা (কুরআন) একটা স্মরণিকা নিজের জন্য আবার এটা অন্যকে স্মরণ করিয়ে দেওয়ার একটা মাধ্যমও ।এটা জিকির বা স্মরণিকা আমাদের নিজেদের জন্য এবং কুরআন একটা মাধ্যমও যাতে আমরা অন্যদেরকেও স্মরণ করিয়ে দিতে পারি। এটা চিন্তা করার মতো বিষয় এবং আমাদেরকে বার বার বলা হয়েছে যাতে আমরা কুরআনকে নিয়ে চিন্তা করি, খুব মনযোগ দিয়ে শুনি এবং গভীর ভাবে ভাবি। এই “গভীর করে ভাবা” ব্যাপারটা নিয়েই আজকে আমি বিশেষভাবে...

ইসলাম ও ইগো (আত্ম-অহংকার) – পর্ব : ০৫ (শেষ পর্ব)

এটা বলার বিভিন্ন ধরণ আছে, তাই না? “এই কাজটি করাতে তুমি দোজখে যাবে তুমি জানো তো?” ‒ এটা একভাবে বলা।”নিজের কাজের জন্য তোমার লজ্জিত হওয়া উচিৎ।” ‒ এটা বলার একটা ধরণ।”ভাই আমি সত্যিই তোমার জন্য উদ্বিগ্ন। তুমি জানো ওটা খারাপ আর আমি তোমাকে ভালোবাসি। তুমি এটা কেন করছ? তোমার কোন সাহায্য লাগবে? আসলেই কেন করছ, বন্ধ কর। আসো এটা নিয়ে আলোচনা করি।” আন্তরিক! (অডিয়েন্সে বসা কেউ হাঁচি দিলেন, উস্তাদ নুমান বললেন, “ইয়ার হামু কাল্লাহ”, অর্থাৎ আল্লাহ আপনার প্রতি ক্ষমাশীল হোন)। আন্তরিকতা, এটা দেখা যায় না, তবে প্রকাশিত হলে হৃদ্যতা বাড়ায়। আপনি কীভাবে মানুষের সাথে কথা বলেন, এতে প্রকাশ পায় আপনি আন্তরিক নাকি শুধু ওদের প্রতি আপনার মন্তব্য প্রকাশ করতে চান। এখানে পার্থক্য আছে। আপনি মানুষের সাথে কীভাবে কথা বলছেন এতে পার্থক্য আছে।أَذِلَّةٍ عَلَى الْمُؤْمِنِينَ “আযিল্লাতিন আলাল মু’মিনীন”,(৫: ৫৪ ) বিশ্বাসীদের কাছে যখন নিজেদের উপস্থাপন করে ওরা আন্তরিক, বিনয়ী ‒ কুরআনে এভাবে বলা আছে, কিন্তু আপনি কীভাবে জানবেন আপনি আন্তরিক কিনা। এই আয়াতে এটা বলা আছে, এরপরই আমরা শেষ করবো। فَاعْفُ عَنْهُمْ وَاسْتَغْفِرْ لَهُمْ وَشَاوِرْهُمْ فِي الْأَمْرِ “ফা’ফু আনহুম ওয়াস তাঘফির লাহুম ওয়া শাভিরহুম্ ফিল আমার”,(৩: ১৫৯) তাদের ভুলের পর আপনি তাদের প্রতি সহনশীল; যদি তারা ভুল করে ফেলে, প্রথম কাজ, তাদেরকে মমতার সাথে ক্ষমা করে দিন। “ফাফু আনহুম”, এরপর আল্লাহ্‌ সুবহানাহু ওয়া তা’আলার কাছে তাদের জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করুন। আল্লাহ্‌র কাছে অন্যের জন্য ক্ষমা প্রার্থনা মানে এই নয় — ধরুন, কোন ভাই কিছু করলো আর আপনি বললেনঃ “এই, যা হোক আল্লাহ্‌ সুবহানাহু ওয়া তা’আলা তোমাকে মাফ করুন।”ওটা “ফাস্তাঘফির লাহুম” নয়। আপনি কখন তাদের জন্য আল্লাহ্‌র কাছে ক্ষমা চাইবেন? যখন আপনি নিজের জন্য আল্লাহ্‌র কাছে ক্ষমা চাইছেন, নির্জনে ক্ষমা চাইছেন। নির্জনে প্রার্থনার মানে কী? ঐ প্রার্থনা আন্তরিক, ওটা অকৃত্রিম। সবার...

ইসলাম ও ইগো (আত্ম-অহংকার) – পর্বঃ ০৪

আপনি এখানে কেন এসেছেন? আপনি কি এখানে এসেছেন কারণ আপনার বন্ধুরা এসেছে বলে? কারণ আপনাকে আসতে জোর করা হয়েছে? আপনার গাড়ি আজ ছাড়ছে না, তাই আপনি আটকে গেছেন এখানে। এজন্য? তাহলে আপনি কিছুই অর্জন করতে পারলেন না।কিন্তু আপনার এখানে আসার কারণ এবং নিয়ত যদি এরকম হয়-“আজ রাতে আমি আল্লাহ্‌ কে স্মরণ করব, আমি আল্লাহ্‌র আরোও নিকটবর্তী হব। এমনকি যখন কিছু হচ্ছে না, আপনি সেটার অপেক্ষায় আছেন। এ অপেক্ষার সময়টাও আপনার স্বপক্ষে পূণ্য হিসেবে গণ্য হবে। শুধু দরকার দৃষ্টিভঙ্গির পরিবর্তন, নিয়তের পরিবর্তন। ঠিক আছে? এটি আপনাকে জীবনভর অনেক সাহায্য করবে। কারণ আপনি যখন কিছু করবেন, যেমন- প্রচারপত্র দেওয়া, মানুষকে ইসলামের দাওয়াত দেওয়া এবং কেউ কোন আগ্রহ দেখাল না এবং আপনি হয়তো মনে মনে বলবেন-কেউ কিছু শুনতে চায় না। কিন্তু আপনি হতাশ হয়ে পড়বেন না। কেন জানেন? কারণ, কেন আপনি প্রচারপত্র গুলো বিলি করছিলেন? কেন আপনি দাওয়াত দিচ্ছিলেন? কোথায়, কার আছে আপনার প্রত্যাশা? (আঙুল ঊর্ধ্বমুখী, মানে আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তায়ালার কাছে।)আপনার কাজ চেষ্টা করা। ফলাফল তাঁর কাছে। আপনি এই ফলাফলের দায়িত্বে নন। আপনি যখন এটাকে আন্তরিক ভাবে মেনে নিতে পারবেন,তখন জীবন অনেক সহজ হয়ে যাবে। এবং নিজের প্রতি অনেক সন্তুষ্ট থাকবেন। আপনি হতাশ হয়ে পড়বেন না।’ ‘সেখানে মাত্র অল্প কিছু মানুষ, তাদের সংখ্যা আরোও বেশি হতে পারত।’ ‘ হ্যাঁ,সেখানে আরো মানুষ থাকতে পারত কিন্তু সেটি আল্লাহ্‌র হাতে। আমি কি আমার দায়িত্বটুকু পালন করেছি? আমি কি যথেষ্ট চেষ্টা করেছি? শুধুমাত্র এটাই নিজেকে জিজ্ঞেস করতে পারেন এবং আমার চেষ্টা কি সত্যিই আল্লাহ্‌র জন্য ছিল? এই প্রশ্নটিই নিজেকে করতে পারেন। আমি এসব আলোচনায় আনছি কারণ ‘নিয়ত’ এমন কিছু নয় যা আপনি জীবনে একবারমাত্র করেন। জীবনে একবার ইচ্ছা পোষণ করেছিলেন যে আল্লাহ্‌র রাস্তায় কাজ করবেন, একজন ভালো মুসলিম হবেন। আপনি সেই ইচ্ছা পোষণ করেছিলেন কিন্তু...

ইসলাম ও ইগো (আত্ম-অহংকার) – পর্বঃ ০৩

তারপর আল্লাহ একই আয়াতে একটি সতর্ক বাণীও উল্লেখ করেছেন। তিনি বলেছেন : وَلَا يَكُونُوا كَالَّذِينَ أُوتُوا الْكِتَابَ مِن قَبْلُ তারা (মুমিনরা) যাতে তাদের মত না হয়, যাদেরকে তাদের পূর্বে কিতাব দেয়া হয়েছিল।فَطَالَ عَلَيْهِمُ الْأَمَدُ তাদের উপর একটি বড় সময় অতিক্রান্ত হয়ে গেছে। তার মানে তারা এই কিতাব ধারণ করেছিল দীর্ঘ সময়ের জন্য। যখন তারা এভাবে কিতাব ধারণ করেছিল, আপনারা জানেন – যখন আপনি প্রথম ধর্মীয় অনুশাসন মানা শুরু করেন, আপনি এ ব্যাপারে খুবই উত্তেজিত থাকেন। এই উত্তেজনা একসময় চলে যায়, যা থাকে তা হলো বহিরাবরণ। সুতরাং ঐসব লোকদের ক্ষেত্রে কী ঘটল? فَقَسَتْ قُلُوبُهُمْ তাদের অন্তর কঠিন হয়ে গেল। একটি দীর্ঘ সময় অতিক্রান্ত হওয়ার পর, ধর্মীয় কর্ম সম্পাদন একটি রুটিনে পরিনত হয়ে গেল। এমন কিছু যা তারা শুধু করে, যা করতে হয়, তারা এটা করছে কারণ এটাতে তারা অভ্যস্ত। কিন্তু এটা আর এমন কিছু নয়, যা তাদের হৃদয়কে আলোড়িত করে। তাদের হৃদয় হয়ে গেছে কঠিন। আর যখন আপনার অন্তর কঠিন হয়ে যায়, তখন কলুষিত হওয়া আপনার জন্য খুবই সহজ। এজন্য আয়াতের পরবর্তী অংশে বলা হয়েছে- وَكَثِيرٌ مِّنْهُمْ فَاسِقُونَ তাদের অধিকাংশই পাপাচারী। তাদের বড় একটা সংখ্যা আসলে খারাপ।আয়াতটি শেষ হয়েছে আহলে কিতাবদের দিয়ে , আর এটা কি দিয়ে শুরু হয়েছিল? আলোচনাটি আসলে তাদের নিয়ে যারা বিশ্বাস স্থাপন করেছে। আর কিভাবে তাদের অন্তর কঠিন হয়ে গেছে। আর এটা যদি আপনি আপনার ভেতরে অনুভব করতে পারেন, কেউ আপনাকে এটা বলে দিতে পারবে না। আমি আবার বলছি, আপনার জন্য কেউ এটা অনুমান করতে পারবে না। একমাত্র যে এটা ধরতে পারবে সে ব্যক্তি হলো আপনি নিজে, অন্য কেউ নয়। আপনি আল্লাহর সামনে কতটুকু বিনয়ী, আপনি অন্যদের সামনে কতটুকু বিনয়ী এ বিষয়টা আমরা আপনাকে বলে দিতে পারব না, একমাত্র আপনি আপনার এই বিষয়টা ভালো বলতে পারবেন।...