এই সল্প সময়ে আমি আপনাদের সাথে আমাদের ধর্মের এক উপেক্ষিত মৌলিক নীতি শেয়ার করতে চাই। আল্লাহ আজ্জা ওয়া জাল বলেন, “ওয়াত্তাকুল্লাহাল্লাযি তাসা আলুনা বিহি ওয়াল আরহাম” আর আল্লাহকে ভয় কর যাঁর নামে তোমরা একে অপরের কাছে কিছু চেয়ে থাকো। তারপর তিনি আরো বলেন, “ওয়াল আরহামা” যা আসলে বোঝায় ভয় কর অর্থাৎ, সতর্ক হও, সচেতন থাকো, গর্ভের(আত্মীয় জ্ঞাতীদের) প্রতি ঋণী থাকার বোধ জাগ্রত কর। তাহলে এর অর্থ আসলে কি দাঁড়াল? এর অর্থ হল যে গর্ভের সাথে জড়িত যে কোন বিষয়কে আমাদের সম্মান (কদর) করতে হবে। আর তাই অন্যান্য পারিবারিক সম্পর্কগুলোর তুলনায় ইসলাম আমাদের মায়েদের অত্যধিক সম্মান দিয়ে থাকে। কিন্তু গর্ভের সাথে যুক্ত সম্পর্ক শুরু হয় বিয়ের মাধ্যমে (আদম(আঃ)–এর মত)। সেজন্যে এই আয়াত আরম্ভ হয়েছে এভাবে- ‘ইয়া আইয়্যুহান্নাসু ইত্তাক্বু রাব্বাকুম আল্লাজি খালাকাকুম মিন নাফসিন ওয়াহিদাহ’ ভয় কর তোমার পালনকর্তাকে যিনি তোমাদের এক ব্যক্তি(আত্মা) থেকে সৃষ্টি করেছেন, ‘ওয়া খালাক্বা মিনহা যাউজাহা’ এবং যিনি তার থেকে তার সঙ্গিনীকে সৃষ্টি করেছেন। সুতরাং আয়াতটি আসলে শুরু হয়েছে বিয়ের কথা বলে আর তাই নবী(সাঃ) বিয়ের খুতবায় এই আয়াতটি ব্যবহার করেছেন। মোটামুটি যে কোন বিয়েতে উপস্থিত থাকলে আপনারা এই আয়াতটির তেলাওয়াত শুনতে পাবেন। তো যে পয়েন্টটি এখানে লক্ষণীয় সেটি হচ্ছে ওই সম্পর্কটি পূত-পবিত্র। স্বামী-স্ত্রীর সম্পর্কটি হচ্ছে পবিত্র। এটি খুবই প্রগাঢ় একটি বিষয়। প্রকৃতপক্ষে আল্লাহ বলেন, ‘ওয়া আখাযনা মিনকুম মিইসাকান গালিযা’ (4:21) একই সূরাতে সেই জোরালো ভাষা। এই নারীরা তোমাদের থেকে গ্রহণ করেছে, এখানে স্বামীদেরকে বলা হচ্ছে, তারা তোমাদের থেকে গ্রহণ করেছে এক সুদৃঢ় অঙ্গীকার। ঠিক না? আর এটা আশ্চর্যজনক প্রকাশভঙ্গি কেননা আপনারা ভাবেন বিয়ের সমস্ত নিয়ন্ত্রণ পুরুষদের হাতে থাকে, ঠিক না? তাহলে পুরুষেরাই এই নারীদের বিয়ে করতে স্বাক্ষর করেছে। কিন্তু বলা হয়েছে আখাযনা, আখাযতুম মিনকুন্না নয়, মানে তোমরা তাদের থেকে অঙ্গীকার নিয়েছ, তা নয়! তারা তোমাদের থেকে...
আমার আসল পয়েন্ট হলো এখন কেন মানুষ মানুষ ইসলামকে নিয়ে ব্যঙ্গ করে? কেনই বা ওরা রাসুল (সঃ) কে নিয়ে মজা করে? কেন রাসুলুল্লাহ (সঃ) কে অপমান করে কার্টুন বানানো হয়? কেন মুসলিমদের উপর এত প্রোপাগান্ডা, এত জঘন্য কথাবার্তা যেগুলো এখন সাংবাদিকতার নামে চলছে সম্পাদকীয় কলামে? এ ব্যাপারটিকে দিনকে দিন আরও আকর্ষণীয় করা হচ্ছে। আগে তারা উগ্রপন্থীদের নিয়ে কথা বলতো তাই না? তারা কথা বলতো কিছু উগ্রপন্থী আর জঙ্গি ইসলামের ভার্সন নিয়ে যেখানে ওরা সবাইকে খুন করতে চায়, আর নারীদের ডাস্টবিনে ফেলতে চায় ইত্যাদি ইত্যাদি। কিন্তু আস্তে আস্তে এই উগ্রপন্থীর সংজ্ঞা ঢিলা হতে হতে এমন পর্যায়ে এসেছে যে আপনি এখন পাঁচ ওয়াক্ত নামায পড়লেই উগ্রপন্থী। উগ্রপন্থী আগে যা উন্মাদদের বেলায় প্রযোজ্য ছিল এখন তারা বলে আপনি যদি একটুও ইসলাম প্রকাশ করেন, অথবা আপনি দেখতে যদি মুসলিম হন, বা মহিলা যদি হিজাব পরেন সে নিশ্চয়ই উগ্রপন্থী। পুরুষদের বেলায় যদি দাঁড়ি থাকে তাহলে সে নিশ্চয়ই উগ্রপন্থী। আমেরিকায় এত খারাপ অবস্থা এখনও হয়নি কিন্তু ইউরোপে খুবই খারাপ অবস্থা। আমি ইউরোপে গিয়েছিলাম, আমি বলতে পারি অবস্থা সেখানে ভালো নয়। এটা উগ্রপন্থী হিসেবে দেখা হয় কিন্তু প্রশ্ন হলো কেন? আমাদের এই মানসিকতা তৈরি হয়েছে যে তারা(কাফিররা) আমাদের ধরতে আসবে, এই কাফিররা আমাদের ঘৃণা করে, ওরা প্রতিনিয়তই আমাদের বিরুদ্ধে কার্টুন আঁকছে, তারা প্রোপাগান্ডা চালায়, তারা ইসলামের সব ব্যাপারকেই ঘৃণা করে, তারা এটার পিছনে ছুটছে , ওরা ওরা ওরা……। আমরা নিজেদের আয়নায় দেখার একটুও সময় পাই না। নবী-রাসুলদের (সঃ) নিয়ে ব্যঙ্গ করা হয়েছিল, আমি বলেছিলাম সাহাবাদের নিয়েও হয়েছিল। যেমন কুরআনে এসেছে… وَيَسْخَرُونَ مِنَ الَّذِينَ آمَنُوا আর তারা ঈমানদারদের প্রতি লক্ষ্য করে হাসাহাসি করে। (বাকারা; ২১২)। কাফিররা তাদেরকে নিয়ে মজা করে যারা বিশ্বাস করে। এখন মৌলিক প্রশ্ন হলো রাসুল (সঃ) ও সাহাবাদের নিয়ে কেন ব্যঙ্গ করা হত? আর...
হয়তো আপনি একজন খুব বেশী ধার্মিক মানুষ নন এবং আপনি আপনার পরিবারের বাকি সদস্যদের মতই জীবন যাপন করছেন। তারপর হৃদয়ে হঠাৎ এমন কিছু একটা অনুভূত হয়েছে এবং আপনি বলছেন, আমি এই পরামর্শটি গুরুত্বপূর্ণ ভাবে নিবো। আমি জানি না এটি কিভাবে হয়েছে , হয়তো আল্লাহ পাক এটি একটি YouTube ভিডিওর মাধ্যমে করেছেন নয়তো একজন বন্ধুর মাধ্যমে করেছেন অথবা অন্য কোন ভাবে করেছেন। কিন্তু আপনি জীবনে ভালো কিছু করার জন্যই আপনার জীবনকে পরিবর্তন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। যখন আপনি আপনার জীবনের আচরণগুলো পরিবর্তন করতে শুরু করবেন, প্রথম যেই মানুষগুলো আপনার এই পরিবর্তনগুলো লক্ষ্য করবেন তারা হচ্ছেন আপনার নিজের পরিবার। তারা এটি লক্ষ্য করবেন যে আপনি আর আগের মানুষটির মতো নেই। আপনি আগের মত কথা বলেন না, আগের মত আচরণ করেন না, আপনি পূর্বের জায়গা গুলোতেও আর যান না। আপনার আগের বন্ধুগুলোও আর নেই, এবং এটি ঘটবেই। যখন আপনি ইসলামের দিকে ধাবিত হবেন তখন আপনি বন্ধুদের হারাতে শুরু করবেন । কারণ আপনার পূর্বের বন্ধুরা অনেক খারাপ কাজ করে এবং এখন আপনি তাদের সাথে এইসব খারাপ কাজে আর অংশ নিবেন না। সুতরাং আপনাকে বন্ধু হারানোর এই ব্যাপারটি সহ্য করতে হবে এবং এই একি সময়ে আপনার পরিবার ও বলবে যে আপনি কিছুটা অদ্ভুত আচরণ করছেন। যুবক ছেলেদের প্রতি পরিবারের সদস্যরা এটিও বলে থাকেন যে, “তোমার মুখে এইগুলো কি? তুমি কি শেভ করতে ভুলে গিয়েছো? তোমার কি হয়েছে?” এবং মেয়েরা যখন হিজাব পরা শুরু করেন তখন পরিবারের সদস্যরা আকস্মিক ধাক্কা খায় – আর মনে রাখুন এটি একটি মুসলিম পরিবার – তারা আপনাকে মাথা থেকে এই জিনিসটি খুলে ফেলতে বলবেন, তারা বলবেন – “তোমাকে এখন যেমন লাগছে তুমি কি বিয়ের অনুষ্ঠানে এভাবেই যেতে চাও ? তুমি এভাবে গেলে আমি তোমার সাথে গাড়ীতে বসতে পারবো না । তুমি...
বিয়ে একটি শক্ত প্রতিজ্ঞা। কুরআনেও এই ব্যাপারে খুব গুরুত্বের সাথে উল্লেখ করা হয়েছে। “আল্মুহসানাত”, “আল্মুহসিনিন”। আরবিতে “ইহসান” মানে হল কাউকে নিরাপদ দুর্গের মধ্যে রাখা। অনেকটা মিলিটারি ক্যাম্পের মত। উদাহরনটা এমন যে, বাইরে শত্রু আছে আর তাই যে মিলিটারি ক্যাম্পের ভিতরে আছে সে নিরাপদ। এর দ্বারা বুঝানো হয়েছে যে নারীরা যেন নিরাপদ প্রাচীরের মধ্যে আছে, আর কে তাদের সুরক্ষা দিচ্ছে? তাদের নিজ নিজ স্বামীরা। সবকিছু থেকে সুরক্ষা দিচ্ছে, দুঃখ কষ্ট, লজ্জাহীনতা, এমনকি অজ্ঞানতা থেকেও, কারন তাকে সঠিক শিক্ষা দেয়াও তার স্বামীর দায়িত্ব। সে তাকে সব দিক থেকে নিরাপদ রাখছে। আর যারা বিয়ে করতে ইচ্ছুক তাদেরকে আল্লাহ কুরআনে বলেছেন, “মুহসিনিন গাইরা মুসাফিহিন”।(সূরা নিসা ২৪) তারা হল সেসব মানুষ যারা নারীদের এরূপ নিরাপত্তায় আনতে আগ্রহী, তাদের নিজেদের পরিচর্যায়, পরিবার গঠনের উদ্দেশ্যে, শুধুমাত্র তাদের নিজেদের কামনা পূরণ করার জন্য নয়। “মুসাফিহ” বলতে এমন কাউকে বুঝায় যে নিজের হরমোনের দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হয়। আর একারনেই সে বিয়ে করতে চায়, এটাই একমাত্র কারন। তাই আল্লাহ বিয়ের সম্পর্কে আমাদের মনোভাব পরিবর্তন করেছেন। যদি আপনি সঠিক কারনে বিয়েতে আবদ্ধ হন, তাহলে আপনার স্ত্রীর সাথে আপনার একটি সুস্থ সম্পর্ক গড়ে উঠবে। আর যদি আপনি ভুল কারনে বিয়ে করেন, ভুল কারন কি কি হতে পারে? আমার হরমোনের সমস্যা আছে তাই আমি বিয়ে করতে চাই, ব্যাস। তাহলে অবশ্যই আপনার সংসার অশান্তির হবে, আর আপনি কখনই সন্তুষ্ট হবেন না। আর খুব সম্ভবত আপনাদের অনেকেই এটা অনুধাবন করেছেন কঠিন উপায়ে। কারন আপনার নিয়্যতে ভুল ছিল। আপনার নিয়্যত থাকতে হবে একটি পরিবার শুরু করার, আল্লাহকে খুশি করা, সমাজে ভাল কিছু বৃদ্ধি করা। তাই আল্লাহ প্রদত্ত দ্বীনের অন্যান্য সব কিছুর মত বিয়ের মূলনীতিও হলঃ আপনি নিজের দায়িত্ব নিয়ে চিন্তিত থাকুন, আর আপনার অধিকার আদায়ের কথা ভুলে যান। আমি জানি যে এটা খুবই রুক্ষ শুনাচ্ছে, কিন্তু...
’’যারা ঈমান এনেছে আল্লাহর প্রতি ও কিয়ামত দিবসের প্রতি এবং সৎকাজ করেছে, তাদের জন্য রয়েছে তার সওয়াব তাদের পালনকর্তার কাছে। আর তাদের কোনই ভয়-ভীতি নেই, তারা দুঃখিতও হবে না।’’ (২:৬২) এই আয়াতে আল্লাহ আমাদেরকে একেবারে প্রাথমিক কিছু কথা বলেছেন, যা কিনা একটি শিশুর পক্ষেও বোঝা সম্ভব। কিন্তু একই সাথে ঈমান সম্পর্কে অত্যন্ত শক্তিশালী দৃষ্টিভঙ্গীও তুলে ধরেছেন। ঈমান — একেবারে প্রাথমিক বিষয়, তাই না? একজন মুসলিমের জন্য ঈমান হলো সবচেয়ে প্রাথমিক বিষয়। কিন্তু এখানে আল্লাহ আমাদেরকে ঈমানের সামগ্রীক দৃষ্টিভঙ্গী দিয়েছেন যা জীবনকে পরিবতর্ন করে দেয়ার মত বিষয়। আপনাদেরকে আমি এই সম্পর্কেই বলতে চাই। আল্লাহ এই আয়াতে ঈমানের তিনটি দিক সম্পর্কে বলেছেন, তাই না? তিনি বলেছেন, যারা ঈমান এনেছে আল্লাহর প্রতি ও কিয়ামত দিবসের প্রতি এবং সৎকাজ করেছে, এই তিনটি বিষয়ের কথা বলা হয়েছে যা পরকালের সফলতার জন্য প্রয়োজন وَلَا خَوْفٌ عَلَيْهِمْ وَلَا هُمْ يَحْزَنُونَ ’’আর তাদের কোনই ভয়-ভীতি নেই, তারা দুঃখিতও হবে না।” (২:৬২) এখন খেয়াল করুন, এই আয়াতের আগের আয়াতগুলোতে আল্লাহ উল্লেখ করেছেন বনী ইসরাইলের জঘন্য খারাপ অপরাধগুলোর কথা। আমরা সেগুলো পড়েছি। এখন, তিনি বলছেন, ঈমানের প্রথম অংশ হলো, আল্লাহর প্রতি ঈমান। আল্লাহর প্রতি বিশ্বাসের অত্যাবশ্যকীয় ফলাফল হলো, আপনি অবশ্যই, অবশ্যই, অবশ্যই পরকালে বিশ্বাস করবেন। এটা আল্লাহর প্রতি বিশ্বাসের ফলেই হয়। আপনি যদি আল্লাহর প্রতি বিশ্বাস না করেন, তখন আপনার জন্য এটা মেনে নেওয়া খুবই কঠিন হয়ে যাবে যে, এই জীবনের পরে আরও একটি জীবন আছে। কিন্তু আপনি যদি আল্লাহর প্রতি বিশ্বাস করেন, তাহলে এই বিশ্বাসেরই যৌক্তিক পরিণতি হলো পরকাল। কিভাবে? আপনি যদি আল্লাহর প্রতি বিশ্বাস করেন, তাহলে আপনি এবং আমি কি এটা বিশ্বাস করি না যে, তিনি সকল কাজই নিখুঁতভাবে করেন? তিনি একদম নির্ভুল, তাই না? আপনি যদি কোন নাস্তিক, দার্শনিক কিংবা অজ্ঞাবাদীর সাথে কথা বলেন, তারা বলবেন,...
কিয়ামতের দিন সবার বিচার শেষ করার পর একজন লোক বাকি থাকবে। তাকে জাহান্নাম থেকে মুক্তি দেয়া হবে কিন্তু তার চেহারা জাহান্নামের দিকে ফেরানো থাকবে। তখন সে লোকটি কেঁদে বলবে- হে আমার রব! জাহান্নামের উত্তাপ আমাকে অস্থির করে তুলছে এবং এর শিখা আমাকে জ্বালাচ্ছে। আপনি আমার চেহারা জাহান্নাম থেকে অন্য দিকে ফিরিয়ে দিন। সে এভাবে আল্লাহর কাছে ক্রমাগত প্রার্থনা করতে থাকবে। তারপর আল্লাহ তাকে বলবেন- তোমার এ প্রার্থনা মঞ্জুর করা হলে তুমি কি আর কিছু চাইবে? সে বলবেঃ না, আপনার ইজ্জতের কসম! আমি আর কিছু চাইবো না। তো, তার চেহারা জাহান্নমের দিক থেকে সরিয়ে দেয়া হবে। তারপর সে আবার বলতে শুরু করবে, হে আমার প্রভূ! আমাকে একটু জান্নাতের দরজার নিকটবর্তী করে দেন। আল্লাহ বলবেন, তুমি কি বলোনি এরপর আর কিছু চাইবে না? ধিক হে মানব সন্তান! তুমি কোন কথা রাখো না। কিন্তু এ ব্যক্তি প্রার্থনা করতেই থাকবে। তখন আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তায়ালা বলবেন – তোমার এ ইচ্ছা পূরণ করা হলে আর কিছু চাইতে পারবে না। সে বলবে- না, আমি আপনার মর্যাদার কসম করে বলছি আমি আর চাইবো না। এভাবে সে অঙ্গীকার আর প্রতিজ্ঞা করতে থাকবে যে সে আর কিছু চাইবে না। অবশেষে তাকে জান্নাতের দরজার নিকটবর্তী করে দেয়া হবে। অতঃপর যখন সে জান্নাতে গেটের দিকে তাকিয়ে জান্নাতের সূখ শান্তি দেখবে, নিজের ওয়াদার কথা স্মরণ করে কিছুক্ষণ চুপ থাকবে। কিন্তু পরিশেষে সে বলবে, হে আমার প্রভু আমাকে জান্নাতে প্রবেশ করিয়ে দিন। তখন আল্লাহ বলবেন- তুমি না এতক্ষণ ধরে সব ওয়াদা আর অঙ্গীকার করলে যে আর কিছু চাইবে না? ধিক তোমার! হে বানী আদাম! কতই না ও‘য়াদা ভঙ্গকারী তুমি। সে বলবে, হে আমার প্রভূ আমাকে আপনার সৃষ্টির মধ্যে সবচেয়ে দুর্ভাগা করে রাখবেন না। সে এভাবে প্রার্থনা করতেই থাকবে, অবশেষে আল্লাহ সুব হানাহু...
যখন কোন একটা বিপদ তোমাদের উপর বর্তায় (উহুদের যুদ্ধকালীন) যদিও তোমরা এর আগে (বদরের যুদ্ধে শত্রুদের মাঝে) এর চেয়ে ও দ্বিগুণের মাঝে পরিবেষ্টিত ছিলে তোমরা বল, “এগুলো কোথা থেকে এলো?” বল, “এগুলো তোমাদের থেকেই এসেছে”। নিশ্চয়ই আল্লাহ্ সব কিছু করতে সক্ষম। (৩-১৬৫) আসসালামু আলাইকুম কুরআন উইকলী আমি সুরা আল ইমরানের ১৬৫ নাম্বার আয়াত আপনাদের সাথে খুব সুনির্দিষ্ট একটু উদ্দেশ্যে আলোচনা করতে চাই। অনেক মানুষই প্রশ্ন করেন কেন আল্লাহ্ সুবহানাহু ওয়া তায়ালা তাদেরকে কঠিন সময়ে ফেলেছেন এবং এটা একটা কঠিন প্রশ্ন। ওনারা জানতে চান কি এমন ওনারা করেছেন যে এইরকম কষ্টের মধ্য দিয়ে তাদের যেতে হচ্ছে। এবং কখনো কখনো মানুষ এটাও বলে, যখন খারাপ কিছু হয়, এটা হয়েছে কারণ, “আমি কিছু খারাপ কাজ করেছি, কারণ এটা আমারই ভুল নয়তো আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তায়ালা এরকম ইচ্ছা করেছেন আমার পরীক্ষা নিতে। আমি কিভাবে বুঝবো কোনটা আসল কারণ?” আবার কিছু মানুষ আছে যারা যখনই তাদের উপর কোন বিপদ আসে, তারা নিজেদেরকে এর জন্য দোষারোপ করে। তারা শুধু বলে, “আল্লাহ্ সুবহানাহু ওয়া তায়ালা ন্যায়বান… নিশ্চয়ই আমিই কিছু অন্যায় করেছি, আমি নিশ্চয়ই আমার পিতামাতার সাথে খারাপ আচরণ করেছি অথবা অন্য কিছু, এবং এই কারণে আমার গাড়ী এক্সিডেন্ট করেছে অথবা অন্যকিছু”। তারা অদৃশ্য থেকে দৃশ্যমান জগতে মনোযোগী হয়। এখন কিছু আয়াত আছে যা আমাদেরকে বুঝতে সাহায্য করবে, একদিকে আল্লাহ্ সুবহানাহু ওয়া তায়ালা বলেছেন, যেমন এই আয়াতে, আওয়া লাম্মা আসাবাকতুম মুসীবাতুনক্বাদ আসাবতুম মিছলায়হা যখন উহুদের যুদ্ধে মুসলমানেরা কঠিন পরিস্থিতির মুখোমুখি হচ্ছিলো, আল্লাহ্ সুবহানাহু ওয়া তায়ালা বলছেন, “যখন তোমরা কোন বিপর্যয়ে আক্রান্ত হও, যেরকমটি তোমাদের শত্রুদের থেকে আগে ও এসেছে এবং তোমরা পরাহত করেছ” (ক্বাদ আসাবতুম মিছলায়হা) “আগের বছরই এরচেয়ে দ্বিগুণ ক্ষয়-ক্ষতি তোমরা তোমাদের শত্রুদের করেছ”। ক্বুলতুম আন্না হাথা তোমরা বললে, “এটা কীভাবে সম্ভব? আল্লাহ কী করে এরকম...
প্রসঙ্গতঃ স্বপ্নদোষ বা অশ্লীল স্বপ্ন এগুলোও শয়তানের পক্ষ থেকে। এ ধরণের স্বপ্ন দেখাতে একজন পুরুষ বা নারীর কোন দোষ নেই। যাইহোক, আপনারা সবাই এ বিষয়ে ফিকহ জানেন; এ রকম স্বপ্ন দেখলে এবং এটা হলে আপনাকে গোসল করতে হবে। এ স্বপ্ন শয়তানের নিকট থেকে, যদিও এতে আপনার কোন দোষ নেই কারণ আপনি আপনার স্বপ্ন নিয়ন্ত্রণ করেন না। এ কারণে নবীদের কখনো স্বপ্নদোষ হতো না। কোন নবীদের এটা হতো না। কারণ এ স্বপ্ন, এ রকম চরম নির্লজ্জতা শয়তানের নিকট থেকে। এটা প্রাকৃতিক, এতে আমাদের কোন অপরাধ বোধ করার প্রয়োজন নেই। একজন মানুষের জন্য এ পর্যায় অতিক্রম করা স্বাভাবিক। এর জন্য নিজের প্রতি কোন ঘৃণা অনুভব করার প্রয়োজন নেই। আমাদের উপলব্দি করা দরকার যে, শয়তানই এ রকম অশ্লীল দৃশ্য আমাদের দেখায় আর ভয়ংকর শীতের রাতে আমাদের গোসল করতে হয়। এটা আমাদের কাছ থেকে নয় বা আল্লাহর নিকট থেকেও নয়। এটা আসে শয়তানের কাছ থেকে। সুতরাং এটা আরেক রকম ‘হুলম’ বা অশুভ স্বপ্ন। এ ক্ষেত্রেও আমরা মানুষদের এসব বলে বেড়াই না। আমরা কাউকে বলি না, কিন্তু স্পষ্টতঃ যদি আমরা এরূপ অবস্থায় জেগে উঠি আমাদের গোসল করতে হবে। তো, এটা হল দ্বিতীয় প্রকারের স্বপ্ন। প্রথম প্রকার কি ছিল? ‘হাদিসুন নাফস’। দ্বিতীয় প্রকারঃ শয়তানের পক্ষ থেকে দুঃস্বপ্ন। তারপর আছে তৃতীয় প্রকার। তৃতীয় প্রকার হল- মুবাশশিরাত। এটাকে আরবিতে আরও বলা হয়- রু’ইয়া। রু’ইয়া হল আল্লাহর পক্ষ থেকে দেখানো স্বপ্ন। এটা একটা ইতিবাচক স্বপ্ন। আল্লাহর পক্ষ থেকে কোন স্বপ্ন দেখলে আপনি ভীত হয়ে জেগে উঠবেন না। আপনি আতঙ্কিত হবেন না। যদি এমন হত তাহলে তো আর একে মুবাশশির (সুসংবাদ) বলা হত না। মুবাশশির শব্দটি বাশির, বাশারা থেকে আগত। মুবাশশির অর্থ কি? সুসংবাদ, ভাল সংবাদ, আশাব্যঞ্জক কিছু অথবা যদি এটা ইতিবাচক নাও হয় তবু এটা হবে প্রকৃত সত্য...
আমরা কুরআন এবং সুন্নাহ থেকে জানতে পারি যে, স্বপ্ন আসতে পারে আল্লাহ সুব হানাহু ওয়া তায়ালার কাছ থেকে, স্বপ্ন আসতে পারে শয়তানের কাছ থেকে এবং আপনি নিজের কল্পনা থেকেও স্বপ্ন দেখতে পারেন। সুতরাং স্বপ্নের তিনটি বিভাগ রয়েছে। আল্লাহর কাছ থেকে স্বপ্ন। নবীরা এ ধরনের স্বপ্ন দেখে থাকেন। তাঁরা অন্য দু’ধরনের স্বপ্ন দেখেন না। এটা নবীদের বেলায় ঘটে। নবীরা শুধু আল্লাহর কাছ থেকে স্বপ্ন দেখেন। আল্লাহ তাদের স্বপ্ন শয়তানের আক্রমণ থেকে রক্ষা করেছেন। এবং আল্লাহ তাদের নিজেদের কল্পনা থেকেও তাদের স্বপ্নকে সংরক্ষিত করেছেন। আর তাই যখনই একজন নবী একটি স্বপ্ন দেখেন সেটা অহি হিসেবে গণ্য করা হয়। এটাকে আল্লাহর নিকট থেকে অহি হিসেবে দেখা হয়। একজন নবীর প্রতিটি স্বপ্ন হল আল্লাহর নিকট থেকে অহি। আমরা ব্যাপারটি ইব্রাহীম (আ) এর পরিবারের বেলায় দেখেছি। ইব্রাহীম (আ) এর কি ঘটেছিল? তিনি ইসমাইল (আ) এর ব্যাপারে একটি স্বপ্ন দেখেন। তিনি দেখেন যে, তিনি ইসমাইল (আ) কে কুরবানি করছেন। ‘ইন্নি আরা ফিল মানামে আন্নি আজবাহুক’ আমি স্বপ্নে দেখেছি যে আমি তোমাকে জবেহ করছি। তাহলে নবী ইব্রাহীম (আ) আমাদেরকে স্বপ্নের বাস্তবতা সম্পর্কে বলেছেন। তাঁর পরবর্তী বংশধর ইউসুফ (আ)ও একটি স্বপ্ন দেখেন। সুতরাং স্বপ্ন এমন একটা বিষয় যা আল্লাহর নবীদের সাথে সম্পর্কযুক্ত। কিন্তু এটা একমাত্র নবীদের সাথে সম্পর্কযুক্ত নয়। এটা সম্ভব যে, নবী নয় এমন মানুষও এ ধরনের স্বপ্ন দেখতে পারেন। তিরমিজি শরিফের একটি হাদিসে রাসূল (স) বলেন- নবুওতের অংশ থেকে শুধু ‘মুবাশশিরাত’ বা সুসংবাদ অবশিষ্ট রয়েছে। তাঁকে জিজ্ঞাসা করা হল – ‘মুবাশশিরাত’ কি? হে আল্লাহর রাসূল (স)। তিনি বলেন- “এমন স্বপ্ন যা তুমি দেখ বা অন্য কেউ দেখে যেখানে তুমি রয়েছ।” হয় তুমি দেখেছ বা অন্য কেউ দেখেছে আর সে এসে তোমাকে বলে যে, ভাই আমি আপনাকে একটি স্বপ্নে দেখেছি। আমি এরূপ এরূপ দেখেছি। এটাকে বলা...
এখানে আমি প্রফেসর জেফ্রি লেংস এর ঘটনা শেয়ার করতে চাই। অসাধারণ এক লেকচার! তার ঘটনা শুনে আমি হতভম্ব। তাঁর কথা শুনে সম্পূর্ণরূপে অভিভূত। তিনি একটি কঠোর পরিবেশে বড় হন। তাঁর মা একজন অসাধারণ মহিলা ছিলেন। তিনি একজন নার্স ছিলেন, একটি হাসপাতালে নিয়মিত কাজের পাশাপাশি অতিরিক্ত কাজও করতেন। সবাই তাকে ভালোবাসতো। যখনই তিনি হাসপাতালে তার মাকে আনতে যেতেন, সেখানকার রোগীরা বলতো- তোমার মা তো একজন সাধু মহিলা। তার মায়ের মৃত্যুর পর লোকজন এসে বলতে লাগলেন তার মা কেমন ভাল মহিলা ছিলেন। মোটকথা চমৎকার এক মহিলা ছিলেন; জেফ্রি ও তার ভাইয়ের জীবনে তিনি গভীর ইতিবাচক প্রভাব ফেলেন। অপরদিকে, তার বাবা ছিলেন একজন মদ্যপায়ী, খারাপ মানুষ; যিনি তার স্ত্রী সন্তানদের নিয়মিত মারধোর করতেন, গালিগালাজ করতেন। জেফ্রি তার মাকে জীবনে একটি বারের জন্যও গালি দিতে শুনেন নি। তার বাবা তাকে এবং তার মাকে নিয়মিত প্রহার করতেন। মোটকথা তার বাবা খুবই জঘন্য চরিত্রের এক মানুষ ছিলেন। দেখতে দেখতে জেফ্রি ষোল বছর বয়সে পৌঁছে গেলেন, কিন্তু তিনি এর কোন কারণ খুঁজে পেলেন না। তিনি একজন ক্যাথলিক খ্রিস্টান হিসেবে বেড়ে উঠেন। তার মা খুবই ধার্মিক একজন মহিলা ছিলেন। তিনি ভাবতেন- “কোন ধরনের প্রভু এটা ঘটতে দিতে পারেন? কোন কারণে তার মা এর যোগ্য হল? কী দোষ ছিল আমার, কেন আমি সবসময় এরকম মার খেতাম?” তিনি সবসময় গডের কাছে প্রার্থনা করতেন যেন পরিস্থিতি ভাল হয়ে উঠে। পরিস্থিতি কি ভাল হয়েছিল? না, হয়নি। বাচ্চা বয়সে তিনি এভাবে প্রার্থনা করতেন, কিন্তু কোন জবাব পেলেন না। তারপর কী ঘটলো? তিনি ভাবতে লাগলেন- “কেউ কি আসলে আমার প্রার্থনা শুনছে? নাহ! কোন গড নেই, যদি থাকতো তাহলে এরকম ঘটবে কেন?” এভাবে তিনি মানবতার উপর সম্পূর্ণ বিশ্বাস হারিয়ে ফেলেন। তিনি বলেন- যদি সত্যিই একজন প্রভু থেকে থাকে আমাদের কেন তিনি সৃষ্টি করলেন? কেন...
বিতাড়িত শয়তান থেকে আল্লাহর আশ্রয় চাই। আল্লাহর নামে শুরু করছি, যিনি পরম করুণাময়, অসীম দয়ালু। إِنَّا فَتَحْنَا لَكَ فَتْحًا مُّبِينًا لِّيَغْفِرَ لَكَ اللَّهُ مَا تَقَدَّمَ مِن ذَنبِكَ وَمَا تَأَخَّرَ وَيُتِمَّ نِعْمَتَهُ عَلَيْكَ وَيَهْدِيَكَ صِرَاطًا مُّسْتَقِيمًا وَيَنصُرَكَ اللَّهُ نَصْرًا عَزِيزًا ইনশাআল্লাহ আজকের এই সিক্রেট টপিক, আয়োজকদের বলেছিলাম সিক্রেট টপিক কারণ আমি তখনও এটি নিয়ে চিন্তা করছিলাম। যেটি নিয়ে আমি গত কয়েকটি মাস ধরে চিন্তা করে যাচ্ছি, সেটি নিয়ে কথা বলবো। আমি অনুভব করি যে আমাদের উম্মাহের মাঝে ভিন্ন ভিন্ন অনেক গুলো ব্যাপারে বিভ্রান্তি কাজ করে। আমরা আমাদের চারপাশে বাস্তবতা দেখছি, সেটা হতে পারে রাজনৈতিক বাস্তবতা অথবা সামাজিক বাস্তবতা কিংবা ইকোনোমিক বাস্তবতা অথবা আমাদের নিজেদের জীবনের সাথে সম্পর্কিত বাস্তবতা। আমাদেরকে সবসময়ই কিছু একটা নিয়ে চিন্তা করতে হচ্ছে, কোন একটা খবর এর অর্থ বুঝার চেষ্টা করতে হচ্ছে অথবা আমাদের জীবনের কোন একটি চ্যালেঞ্জ এর মোকাবেলা করার উপায় খুঁজতে হচ্ছে। কিন্তু আমি খুব বেশি একটি ব্যাপার অনুভব করি যে, আমরা আমাদের চারপাশের বাস্তবতাকে আল্লাহর বইয়ের সাপেক্ষে বিচার করি না। অন্যভাবে বলা যায় যে, বাস্তবতাকে বুঝার সবচেয়ে ভালো উপায় হলো আল্লাহর থেকে প্রাপ্ত জ্ঞানের বিভিন্ন concept কে ভালোভাবে বুঝা। এবং যখন আপনি এগুলো শিখে যাবেন, তখন আপনার দৃষ্টিভঙ্গি, আপনার দৃষ্টিকোণ এবং মতামত বদলে যাবে। আমি একটি উদাহরণ দিয়ে শুরু করবো। আপনি কল্পনা করুন যে আপনার চোখের দৃষ্টি খুবই দুর্বল কিন্তু আপনি আপনার চশমাটি ব্যবহার করছেন না। এই অবস্থাতেও আপনি দেখতে পারবেন, কিন্তু সেই দেখার মাঝে অনেক কিছুই মিসিং থাকবে। আপনি হয়তো একটি সাইনবোর্ডের আকৃতি বুঝতে পারবেন, কিন্তু সেটাতে কি লিখা আছে তা পড়তে পারবেন না। কিন্তু যখনই আপনি আপনার নির্দিষ্ট পাওয়ারের চশমা পড়ে নিবেন, তখনই সব কিছু পরিষ্কার ভাবে পড়তে পারবেন। এখন আপনি পবিত্র কোরআনকে এমনই একটি সঠিক পাওয়ারের চশমা হিসেবে ভাবুন। যখনই আপনি...
আস সালাম আলাইকুম সবাইকে, এখানেএকটি শান্ত / গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন উঠে এসেছে গালফ সফর থেকে, আমি কোরআন পড়ি কিন্তু আমি আরবি বুঝি না , সুতরাং আমি কোরআন পড়ার সময় কোন কিছুই বুঝতে পারি না । এটি কি শুধুমাত্র ইংরেজিতে পড়া যায় না এবং এই সকল লোকজনরা বলেন যে তোমাকে কোরআন মনে রাখতে হবে, কোরআন মুখস্থ করলে আরও বেশী (সাওয়াব) পাওয়া যাবে, এবং এখানে এমন অনেকে বাবারা আছেন যারা কোরআন মুখস্থ করেছেন কিন্তু অর্থ বুঝেন নি । আমাদের কি মানুষকে কোরআন মুখস্ত করতে না বলে কোরআন পড়তে বলা উচিতনা? এবং আপনি জানেন কি আমি যখন এই প্রশ্নটি শুনি আমি কিছু উপলব্ধি করলাম, যে প্রতিটা কাজেরই একটি সমান ও বিপরীত মুখী প্রতিক্রিয়া আছে । আমাদের সমাজে কিছু চরমপন্থী লোক আছেন, আমাদের কিছু একমুখী লোক রয়েছেন যারা কোরআন মুখস্ত করার উপর গুরুত্ব দেন কিন্তু বুঝার উপর গুরুত্ব দেন না, এবং আপনি একজন বিজয়ী হয়ে যাবেন যখন আপনি কোরআন মুখস্ত করে ফেলবেন এবং আপনি তারাবী সালাত পড়াবেন এবং আপনি অনেক সুন্দর করে তেলাওয়াত করবেন এবং লোকজন বলবে যে আপনি কতো চমৎকার তাজউয়ীদ উল কোরআন, কিন্তু আপনার কোন ধারনাই নেই যে এখানে এই সকল আয়াতে কি বলা হয়েছে । এটা হয় এক প্রকার চরমপন্থা, এবং এই চরমপন্থা আরও অন্যান্য চরমপন্থার জন্ম দেবে, আপনি জানেন কি এই সকল লোক কোরআন তেলাওয়াত করছেন কোন উদ্দেশ্য ছাড়াই এবং এরা শুধুমাত্র সুন্দর করে শব্দগুলো তেলাওয়াত করে যাচ্ছে , কিন্তু প্রকৃত বার্তা / সংবাদটি কি ? আমাদের উচিত মুখস্ত করার কথা ভুলে যাওয়া / বাদ দেয়া , আমাদের পড়া এবং বুঝার উপর ফোকাস করা / গুরুত্ব দেয়া উচিত , আপনি জানেন এটি কি, এটি হচ্ছে দুটি চরমপন্থা । এই সকল ক্ষেত্রে প্রকৃত সত্যটি এই ২ টি ঘটনার মাঝখানে বিরাজমান থাকে,...
-আসসালামু আলাইকুম। কেমন চলছে? -আলহামদুলিল্লাহ। – কেমন চলছে? – আলহামদুলিল্লাহ ভালো। -পরিবার? -পরিবারও ভালোই আছে। -তোমার বাবা কেমন আছে? তাঁকে আমার সালাম পৌঁছে দিও দয়া করে। ইনশা আল্লাহ। -শনিবারে সে আসবে। -ও তাই! তাহলে তো দেখা হচ্ছে! ও দাঁড়াও! আমি তো শনিবার থাকবো না। -আপনি কোথায় যাচ্ছেন? – আমি হিউস্টন যাচ্ছি ইনশা আল্লাহ। – আপনার কি অনেক প্রোগ্রাম থাকছে আজকাল? – হ্যাঁ। অনেক প্রোগ্রাম আছে। -কেমন চলছে প্রোগ্রামগুলো? – অনেক প্রোগ্রামই তো আছে। একটা ঘটনা আমার মাথায় এখনো গেঁথে আছে, প্রোগ্রাম শেষে এক মহিলা আমার কাছে এসে আমাকে এক পাশে ডেকে নিয়ে গিয়ে তার স্বামী নিয়ে কথা বলা শুরু করলো। আমার শোনা সবচেয়ে খারাপ ঘটনা এটি নয়, কিন্তু যথেষ্ট জগাখিচুড়ি পাকানো একটি ঘটনা। সে এসে বলেছিল, আমার স্বামী যথেষ্ট ধার্মিক। সে দৈনিক পাঁচ ওয়াক্ত সালাত পড়ে। সবসময় মসজিদে যায়। ইত্যাদি, ইত্যাদি। কিন্তু একইসাথে, সে আমাকে আমার পরিবারের সাথে দেখা করতে নিষেধ করে। আমি যখন তাদের কল করি, যখন তাদের সাথে দেখা করতে যাই, সেটা সে পছন্দ করে না। আমাকে খুব কষ্ট করে, লুকিয়ে লুকিয়ে আমার মাকে কল করতে হয়, দেখা করতে হয়। যদি আমি আমার স্বামীকে না বলি যে, আমি আমার পরিবারের সাথে যোগাযোগ করি, তাহলে কি আমি গোনাহগার হব? কারণ, আমাকে তো আমার স্বামীর কথা মেনে চলতে হবে। সে আমাকে বলে, স্ত্রীদের উপর পুরুষের কর্তৃত্ব রয়েছে। তাই সে যা বলে, আমাকে তো তাই করতে হবে। সে হচ্ছে ঘর-বাড়ির আমির। সে বলে- আল্লাহ এবং তার দ্বীন এর মতে, সুন্নাহ এবং শরীয়াহ এর মতে, তোমাকে আমার কথা মেনে চলতে হবে যেহেতু তুমি আমার ঘরে বাস কর। তুমি তোমার পরিবারের সাথে, ভাইবোনদের সাথে যোগাযোগ রাখতে পারবে না। এবং এগুলোর সাথে সে তার উপর আরও শর্ত আরোপ করে, আমি চাই না তুমি...
আজকের খুতবার একদম শুরুতে আমি দুটো কথা বলে নিতে চাই, প্রথমত এই যে, অনেক দীর্ঘ সময় নিয়ে ভাবনা চিন্তার পর আজকে যে বিষয়টি আমি বেছে নিয়েছি, এটা খুব কঠিন এবং জটিল। যদিও আমি যখন খুতবার জন্য কোন বিষয় নির্বাচন করি সাধারণত আমি চেষ্টা করি সেটাকে যতটা সহজ করা যায়। কিন্তু আমি মনে করি এই বিষয়টা নিয়ে আলোচনা করা সব মুসলিমদের জন্য যথেষ্ট জরুরী এবং ভীষণ গুরুত্বপুর্ণ তাই আমি আল্লাহ্ আজ্জা ওয়াজ্বালের কাছে প্রার্থনা করছি যেন আজকের বক্তব্যে আমি আমার ভাবনাগুলো খুব পরিষ্কারভাবে উপস্থাপন করতে পারি যাতে আপনারা এ থেকে উপকৃত হতে পারেন। দ্বিতীয়ত, যখনই আমি এখানে এলাম আমি দেখলাম আমাদের ইমাম সাহেব এখানে বসে আছেন, আমার মনে হলো আরবীতে একটা কথা আছে, “আগনাস সাবা আনীল মিসবাহ”, যার মানে হলো, “সময়টা যখন সকাল, আপনার বাতির প্রয়োজন নেই”(স্মিত হাসি)। আমি ঠিক জানি না আমাকে কেন খুতবা দেওয়ার জন্য আমন্ত্রিত করা হয়েছে যেখানে ইমাম সাহেব স্বয়ং উপস্থিত আছেন। যা হোক, যেহেতু আমি এখন এ জায়গায় আছি, ইন শা আল্লাহ আশা করছি আমি এ সুযোগটা সুষ্ঠুভাবে কাজে লাগাতে পারবো। আজকের এই সংক্ষিপ্ত খুতবায় আমি কুরআনের সাথে আমাদের সম্পর্কের দুইটি দিক নিয়ে কথা বলতে চাই। আল্লাহ্ আজ্জা ওয়াজ্বাল কুরআনের সাথে আমাদের সম্পর্ক নিয়ে বর্ণনা করেছেন বিভিন্ন ভাবে। এটা শুধু এক ধরণের সম্পর্ক নয়, কুরআনের সাথে আমাদের সম্পর্কটা বিভিন্ন ধরণের। যেমন ধরুন এটা (কুরআন) একটা স্মরণিকা নিজের জন্য আবার এটা অন্যকে স্মরণ করিয়ে দেওয়ার একটা মাধ্যমও ।এটা জিকির বা স্মরণিকা আমাদের নিজেদের জন্য এবং কুরআন একটা মাধ্যমও যাতে আমরা অন্যদেরকেও স্মরণ করিয়ে দিতে পারি। এটা চিন্তা করার মতো বিষয় এবং আমাদেরকে বার বার বলা হয়েছে যাতে আমরা কুরআনকে নিয়ে চিন্তা করি, খুব মনযোগ দিয়ে শুনি এবং গভীর ভাবে ভাবি। এই “গভীর করে ভাবা” ব্যাপারটা নিয়েই...
আল্লাহ আজ ওয়াজ্জাল বিবাহ সম্পর্কে বলেছেন, وَمِنْ آيَاتِهِ أَنْ خَلَقَ لَكُم مِّنْ أَنفُسِكُمْ أَزْوَاجًا لِّتَسْكُنُوا إِلَيْهَا وَجَعَلَ بَيْنَكُم مَّوَدَّةً وَرَحْمَةً ۚ إِنَّ فِي ذَٰلِكَ لَآيَاتٍ لِّقَوْمٍ يَتَفَكَّرُونَ আর এক নিদর্শন এই যে, তিনি তোমাদের জন্যে তোমাদের মধ্য থেকে তোমাদের সংগিনীদের সৃষ্টি করেছেন, যাতে তোমরা তাদের কাছে শান্তিতে থাক এবং তিনি তোমাদের মধ্যে পারস্পরিক সম্প্রীতি ও দয়া সৃষ্টি করেছেন। নিশ্চয় এতে চিন্তাশীল লোকদের জন্যে নিদর্শনাবলী রয়েছে। (৩০ঃ ২১) এটি কুরআনের অত্যন্ত সুন্দর কিছু বাণী। আপনারা যারা বিবাহিত তাদের পুরো বিবাহিত জীবনে এই বাণীর প্রযোজ্যতা খুঁজে পাবেন। আল্লাহ বলেন, তিনি আপনাদের মধ্যে, স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে ভালোবাসা ‘মাওয়াদ্দা’, এবং প্রগাঢ় ভালোবাসা দিয়েছেন, ‘ওয়া রাহমা’ দৈবানুগ্রহ দিয়েছেন। কারণ, বিবাহের প্রথম দিকে ভালোবাসা প্রগাড় থাকে। আপনি আপনার স্ত্রীকে নিয়ে মুগ্ধ থাকেন। আপনি অন্য কিছুর কথা আর চিন্তা করতে পারেন না । আপনার বন্ধুরা যখন আপনাকে কল দেয়, তারা সরাসরি ভয়েস মেইল এ যায়। ঠিক? কারণ, আপনি সদ্য বিবাহিত। আপনারা জানেন, ছয় মাস ধরে আপনার কোন দেখা নেই, কেউ আপনাকে দেখে নি। কিন্তু তারপর যখন বিবাহিত জীবন আরও অগ্রসর হয়, কী আপনাদের বিবাহিত জীবন চাঙ্গা রাখে? এটা কি আগের মত থাকে? কারণ, অন্যান্য দায়িত্ব নিতে হয়। বাচ্চা হয়, কাজে ব্যস্ততার কারণে আর মধুর থাকে না। কিভাবে আপনার দাম্পত্য জীবন বজায় রাখবেন? রাহমা, আপনার স্ত্রীর প্রতি অনুগ্রহ থাকতে হবে। স্বামীর প্রতি অনুগ্রহ থাকতে হবে। একে অপরকে সম্মানপ্রদর্শন করতে হবে। একবার উমর (রাঃ) এর কাছে এক লোক আসল। সে বলল, আমি আমার স্ত্রীকে তালাক দিতে চাই। তিনি জিজ্ঞেস করলেন, কেন তুমি তোমার স্ত্রীকে তালাক দিতে চাও? (উত্তরঃ) আমি তাঁকে আর ভালোবাসি না, তাঁকে আর আকর্ষিত মনে হয় না। তারপর উমর (রাঃ) তাঁকে জিজ্ঞেস করলেন, ফা’ইনা রি’ইয়াআ, সৌজন্যতার কি অবস্থা? তোমার স্ত্রীর প্রতি উদারতার কি হল? সে কি তোমার...
প্রথমেই যে ব্যাপারটা আমি বলতে চাই তা হলো, আল্লাহ আজ্জা ওয়াজাল সুরা আন নাহল এর শেষ অংশে বলেছেন, ‘উদয়ু ইলা সাবিলি রাব্বিক’। যেটার অর্থ সাধারণ ভাবে বলা যায় ‘তোমার রবের পথে ডাকো’। এটাই সাধারণ ভাবে বলা হয়েছে এখানে। বিল হিকমাহ অর্থ প্রজ্ঞা ব্যবহার করে , অথবা বলা যায় তোমার রবের প্রতি ডাকো প্রজ্ঞার সাথে। কিন্তু এ বিষয়টাই এখন একটু গভীরভাবে ভাবা যাক। যখন আপনি কাউকে দাওয়াত দেন ; দাওয়াত দেবার অর্থ হলো এটা একই সাথে হবে বন্ধুত্বপূর্ণ, দয়ার্ত ও ভালবাসাময় একটা ব্যাপার। আপনি তেমন কাউকে দাওয়াত দিবেন না যাদের আপনি ঘৃণা করেন। এবং এই দাওয়াতের কাজটা তখনও সম্পন্ন হবে না যখন আপনি রাগান্বিত থাকবেন। অন্যভাবে বলা যায়, ব্যাপারটি এমন ও না যে আপনি কাউকে ডিনারের দাওয়াত দিতে গিয়ে রাগতস্বরে বললেন যে, এহ! আমার বাসায় এসো। আপনি সেটা করবেন না। কারণ আপনি নিশ্চিত ভাবে জানেন যে আপনার সে আমন্ত্রন প্রত্যাখ্যাত হবে। আমি যা বুঝাতে চাচ্ছি তা হলো, দাওয়াত দেবার পন্থাটা কেমন হবে। দাওয়াতের সেই পন্থা যেটা ইসলামকে মানুষের মাঝে ছড়িয়ে দেয়, মানুষকে ইসলামের পথে আনে। আপনি যে মানুষটাকে দাওয়াত দিয়ে ইসলামের পথে ডাকেন তার প্রতি ভালবাসা, সৌজন্যতা, সম্মান থাকতে হবে। এই দাওয়াতে ঘৃণা মেশানো কোন কথা থাকতে পারে না, বিচার করার বার্তা থাকতে পারবে না। এই দাওয়াত নিজেকে জাহির করার জন্যও নয় যেখানে কোনভাবেও দেখানো হয় যে যাকে দাওয়াত দিচ্ছেন তার চেয়ে আপনি উত্তম। এর কোনটাই দাওয়াতে থাকতে পারবে না। যদি থাকে তাহলে সেটা কখনই দাওয়াত হতে পারে না। এখন দেখা যাক আল্লাহ প্রথম শব্দটিতে কি ব্যবহার করেছেন। ‘উদয়ু’। এবং তার পরে তিনি বলেছেন ‘ইলা সাবিলি রাব্বিক’- তোমার রবের পথে ডাকো। এটা নিয়ে একটু চিন্তা করুন। ক্লাসিক্যাল তাফসীর থেকে এ সম্পর্কে অনেক কিছুই বলা যায়। কিন্তু আজকের দর্শকদের জন্য আমি...
আপনি হয়তো ভাবতে পারেন যে ‘প্রভাবসৃষ্টি’ এটাই হয়তো সর্বোচ্চ শিখর, কিন্তু না এর থেকেও বড় কিছু আছে। এর উপরে আছে চূড়ান্ত সত্য। কেউ কেউ ন্যায়ের খোঁজ করে। কেউ কেউ সত্যের খোঁজ করে। কেউ কেউ আদর্শের খোঁজ করে। তারা ন্যায়ে বিশ্বাস করে। আর ন্যায় এমন একটা জিনিস সেটা আপনি পরিপূর্ন ভাবে দুনিয়াতে দেখবেন না। দেখবেন কি? এটা কখনোই নেই পুরোপুরি ভাবে, কিন্তু তারা এর পরোয়া করেন না, তারা এটার জন্যই কাজ করেন। ও আরেকটি ব্যাপার, যখন আপনি এমন কিছু করতে চান যেটার দুনিয়াতে কোন নজীর নেই তখন সেটা করাটাই সবচেয়ে কঠিন কাজ হয়। আপনি যদি পরিবর্তনের জন্য কাজ করতে চান, তখন যদি আপনি সামান্য একটুও পরিবর্তন দেখেন, তাতেও আপনি উদ্দীপিত হয়ে যান, আপনি অনুপ্রানিত হন এবং এটি আপনাকে আরো সামনের দিকে এগিয়ে নিয়ে যায়। কিন্তু আপনি যখন এমন একটা আদর্শের জন্য কাজ করবেন, ন্যায়ের জন্য, আপনি হয়তো ন্যায় কখনো দেখবেনই না। এই লোকেরা কেমন করে নিজেদেরকে অনুপ্রেরনা দিবে যখন তারা এমন কিছুর জন্য কাজ করা যেটা দেখা যাচ্ছে না। এরাই হচ্ছে সবচাইতে অসাধারন, সহনশীল ব্যক্তি। একবার তারা একটা আদর্শের পেছনে পড়লো, সবাই তাকে পাগল ভাবলো কিন্তু তাতে তার কিছু এসে যায় না। তারা এগিয়েই চলেন। তাই এখন আমি শুরু করতে যাচ্ছি একদম সর্বোচ্চটা দিয়ে যেটা হল সত্যের খোঁজ। ন্যায়ের খোঁজ। প্রসঙ্গক্রমে বলে রাখি যে আমাদের সকল নবীদের (আঃ) এর পথই ছিল সত্যের অন্বেষণ। তারা মানুষের সাথে সত্যটা শেয়ার করতে আগ্রহী ছিলেন। এবং অনেক সময়ই, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসালাম এর হাদীস থেকে আমরা জানি কেয়ামতের দিন অনেকেই, মানে অনেক নবীই আল্লাহর সামনে দাঁড়াবেন যাদের পেছনে কোন অনুসারীই থাকবেন না। একজন অনুসারীও নয়। এক না দুই না একেবারে শূন্য, শূন্য। তাদের লক্ষ্য টা কি ছিল? সত্য। তাদের প্রভাব কতটুকু ছিল? শূন্য। কিন্তু...
এরপর এর উপরে রয়েছে আর এক ধরনের প্রচেষ্টা সেটা হল “সম্মানের” পেছনে ছুটে চলা। কলেজের ছাত্রদের কাছে এটা বেশি গুরুত্বপূর্ণ, প্রাথমিক বা হাইস্কুলের ছাত্রদের চেয়ে। কিন্তু কলেজের ছাত্রদের কাছে এর গুরুত্ব অনেক। এইমাত্র আমি কি বললাম? “সম্মান”! আমি ক্রমানুসারে যেতে চাই। সবার নীচে “সুখ”, তারপরে কি?” সামাজিকতা (cool)”। তারপর? “জনপ্রিয়তা”। এখন আমরা কি নিয়ে কথা বলছি? “সম্মান”! “সম্মান” মানে হল আপনি নিজের সাথে এমন কিছু যুক্ত করতে চান যেটা অনেক মূল্যবান। আপনি মানুষকে বলতে চান, “জানো! আমি হার্ভার্ডে গিয়েছিলাম!” আপনি তাদের বলেন না যে আপনি সেখানে সাপ্তাহিক ছুটি কাটাতে গিয়েছিলেন! আপনার বন্ধুর সাথে দেখা করতে! কিন্তু আপনি নিজের নামের সাথে একই বাক্যে হার্ভার্ড শব্দটাকে ব্যবহার করতে ভালোবাসেন। সত্যি কথা হল, আপনি যদি হার্ভার্ডে নবীন ছাত্র হন, আপনি কি অর্জন করেছেন? কিছুই না। আপনি শুধু সেই ভার্সিটিতে পড়েন, এর বেশিতো কিছু না। কিন্তু আপনি নিজের নামের সাথে একটা সম্মানিত প্রতিষ্ঠানের নাম যোগ করতে পছন্দ করেন। নিজের নামের সাথে একটা মর্যাদাপূর্ণ ব্র্যান্ড- এর নাম যুক্ত করতে আপনার ভালো লাগে। আপনার নির্দিষ্ট ব্র্যান্ডের পোশাক করতে ভালো লাগে এবং যদি ব্র্যান্ডের লেবেল দেখা না যায় আপনি অন্য মানুষদের সাথে এমনভাবে কথা বলেন যেন তারা বাধ্য হয় প্রশ্ন করতে যে, “আপনি এটা কোথা থেকে কিনেছেন”? আপনি যেন বলতে পারেন যে এটা আরমানী ব্র্যান্ড বা কিছু একটা। কারণ আপনি চান নিজের নামের সাথে সেই ব্র্যান্ডের নাম যুক্ত করতে। এমনটাই ঘটে নতুন কোন ব্র্যান্ডের গাড়ি বাজারে আসলে। কোন গাড়ি আপনি চালাচ্ছেন, কোন ধরণের পোশাক আপনি পরছেন, কোন ধরণের মানুষের সাথে আপনি মিশছেন। সেলফি এজন্য তোলেন না যেন আপনি তাদের মনে রাখতে পারেন, আপনি এজন্য তোলেন যেন ছবিটা পোস্ট করতে পারেন। যেন অন্য মানুষ আপনাকে বেশি গুরুত্বপূর্ণ ভাবে কারণ আপনি সেই বিশেষ ব্যক্তির পাশে দাঁড়িয়ে আছেন। এটা...