রাসূল (সা) কীভাবে দাওয়াহ দিতেন

আরবরা বলে, “হৃদয়ের নমনীয়তা হৃদয়ের কারাগারে পরিণত হতে পারে।”

আপনি যদি কারও হৃদয়ে নমনীয়তা এনে দিতে পারেন এটা যেন তাকে পকেটে পুরে রাখার মতো! আপনি তাকে অর্জন করে ফেলেছেন। তারা বলে মানুষকে সুন্দর ব্যবহার দ্বারা বশ করে ফেলা যায়। আপনি কারও সাথে মনোরম ব্যবহার দেখালে সে আপনার হয়ে যাবে, তারা আপনার।এমনটাই ছিলেন আমাদের নবী (আলাইহিস সালাতু ওয়াস সালাম)। মানুষের সঙ্গে তাঁর ব্যবহার ছিলো অসাধারন।

আমাদের নবীর সুন্দর ব্যবহার বিষয়ক আমার একটা প্রিয় গল্প হলো মক্কা বিজয়ের গল্প। যখন আল্লাহ তাঁকে মক্কার বিজয় দান করেছিলেন, যিনি কা’বা ঘরের রক্ষক ছিলেন তার কাছে এর চাবি ছিলো। তিনি ছিলেন একজন মুশরিক। আর তিনি মুসলিমদের চাবি দিতে আপত্তি জানালেন। ‘আমি যদি বিশ্বাস করতাম যে মুহাম্মাদ আল্লাহর বার্তাবাহক তবে চাবিটা দিয়ে দিতাম, কিন্তু সে কোনো বার্তাবাহক নয়। আমি চাবি দিব না।’ তো একজন সাহাবী নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কে না বলেই জোর করে চাবিটি আদায় করে নবীর কাছে নিয়ে গেলেন। তারা কা’বা খুললেন তাতে নামায পড়লেন। তারা যখন বেরিয়ে আসছেন তখন এক আয়াত নাযিল হলো যাতে বলা হয়েছে চাবিটা সেই মুশরিক কে ফেরত দিতে এবং তার কাছে ক্ষমা চাইতে ওভাবে চাবিটা কেড়ে নেওয়ার জন্যে। আর মুসলিমদের কাছে এমন ব্যবহার পেয়ে তিনি মুসলিম হয়ে গিয়েছিলেন। অসাধারণ!

আল্লাহ এমন বিজয়ঘন মুহূর্তে এই আয়াত নাযিল করেছিলেন। আর এ সমস্ত মানুষেরা তো তাঁদের উপর নির্যাতন চালিয়েছিলো, সেই সাহাবী তো তাকে নির্যাতন করেননি কিংবা হত্যা করেননি, আঘাত করেননি, তিনি কেবল চাবিটি কেড়ে নিয়েছিলেন। অপরদিকে চাবিটি তাঁর কাছে থাকার কথাও নয়, তিনি ছিলেন মুশরিক। কিন্তু আল্লাহ এমন ব্যবহার পছন্দ করলেন না, তাই আয়াত নাযিল হলো।

“আল্লাহ তোমাদের আদেশ করছেন হকদার কে তাদের অধিকার বুঝিয়ে দিতে।”

অভিনব দৃশ্য! দেখুন নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কিভাবে অন্যদের সঙ্গে ব্যবহার করতেন।

একজন ইহুদি মেয়ে মারা গিয়েছিলো। অল্প বয়সে সে মারা গিয়েছিলো। আর তার শবযাত্রা যাচ্ছিলো। নবী (সা) বসেছিলেন, সম্মান দেখাতে তিনি দাঁড়িয়ে পড়লেন। কয়েকজন সাহাবী বলে উঠলেন, “সে তো ইহুদি!” নবী (সা) বললেন, “সে কি একজন মানুষ নয়?” সব মানুষের প্রতি তাঁর বিনয়ী আচরণ ছিলো। আলাইহিস সালাতু ওয়াস সালাম।

মুসলিমদের এসব শিখতে হবে… একে অন্যের প্রতি নম্রতা দেখান। সব মানুষের সাথে সৌজন্যমূলক আচরণ করুন। সম্মান দেখান। এভাবে আপনি মানুষকে দাওয়াত দিবেন।