আমার মতে, বর্তমান সময়ে মিউজিক হল নৈতিক অবক্ষয়ের অন্যতম সহজ উপায়। বর্তমানে মিউজিক হল অডিও পর্ণগ্রাফি। এটা সত্যিই তাই। এটা স্পষ্টতই অশালীন এবং অভদ্র। এটা আপনার মধ্য থেকে মনুষ্যত্ব দূর করে দেয়, এটা আপনাকে নারীকে ভোগ্যপণ্য ভাবতে শিখায়, এমনকি ভোগ্যপণ্য থেকেও নিকৃষ্ট ভাবতে শিখায়। পশুর চেয়েও খারাপ ভাবতে শিখায়। এরা নারী সম্পর্কে এমন ভাবে কথা বলে যেন নারীরা পশু। সত্যি। এটা নারীকে ভোগ্যবস্তু রূপে পেশ করে, আমি বিশেষ ভাবে লক্ষ্য করেছি যে, আমার পরিচিতদের মাঝে অনেকেই এমন যারা মুসলিম, কিন্তু তারা “হিপ হপ” সংস্কৃতিতে আকৃষ্ট। তাদের অনেকেই গানগুলো হিফয বা মুখস্ত করে ফেলে, তাইনা? তারা গানগুলো মুখস্ত করে এবং তাজবীদ এর সাথে গানগুলো গাইতেও পারে, তাইনা? এবং তাই তারা এটা করে এবং গান গুলোর ভাষা খুবই কদর্য, খুবই ভয়াল, নিম্নমানের ভাষা।
আপনাদের কি আর বলব, আমার একমাত্র মতামত এটাই যে, আপনার যদি আল্লাহ্ তাআলার কিতাবের প্রতি বিন্দুমাত্রও শ্রদ্ধা থাকে, যদি আপনি সত্যি বিশ্বাস করেন যে এটা আল্লাহর পক্ষ থেকে নাজিল হয়েছে, “বি সালিস্মুল ফুসুকু বা’দাল ঈমান”, এমন কি খারাপ জিনিষ এর নাম, এর উল্লেখ, এ শব্দ ব্যবহার করাও ভয়াবহ, যদি আপনার বিশ্বাস থেকে থাকে। এমনকি কোন ভয়ানক খারাপ জিনিষ এর উল্লেখ করাও আপনার জন্য ক্ষতিকর, যদি আপনার বিশ্বাস থেকে থাকে। আপনার জিহব্বা/ভাষা অবশ্যই পরিষ্কার রাখতে হবে। আপনাকে বলতে হবে- “কুল্লি ইবাদুল ইয়াকুলুললাতি হিয়া আহসান” – আমার বান্দাদেরকে বলুন তাই বলতে যা সবচেয়ে ভাল।
সবচেয়ে ভাল কথা বলুন। আপনার জিহবা দিয়ে ভাল কথা বলুন। এটাই হল প্রথম ধাপ। যখন আপনি কদর্য কথা বলেন এবং এমন কথা বলেন যা আমাদের জন্য আল্লাহ্ তাআলার নির্ধারিত নৈতিক মাপকাঠির সরাসরি বিপরীতে, তখন খুব স্পষ্টতই আপনি আপনার স্বাভাবিক বিশ্বাস থেকে দূরে সরে যাচ্ছেন, আল্লাহ্ তাআলার পথে চলার প্রবণতা থেকে দূরে সরে যাচ্ছেন। আপনি যখন বিরতিহীন ভাবে এসব আবর্জনা শুনতে থাকেন, তখন আপনি পথভ্রষ্ট হয়ে যান, তখন আল্লাহ কে অমান্য না করলে আপনার ভালো লাগেনা, আর এটাই হল হৃদয়ের অসুখের লক্ষণ। তাই অবশ্যই তাকে এর থেকে দূরে সরতে হবে। এটাই প্রথম পদক্ষেপ।
আমি আপনাদের কে বলব, যদিও এটা আমার ব্যক্তিগত বিবেচনা, এটা কোন ফতওয়া নয়, এটা আমার ব্যক্তিগত বিশ্লেষণ, আপনাকে এটা মানতেই হবে এমন নয়, কিন্তু যদি কোন মানুষের দীর্ঘদিন “হিপ হপ ” মিউজিক আর এটা ওটা শোনার পর তার কাছে কুরআন শুনাকে বিরক্তিকর মনে হয়, যখনই কেউ গাড়িতে কুরআন তেলাওয়াত চালু করে, জানেন তারা কি বলে? “ওহ এটা বন্ধ কর, আমি শুধু কথা বলতে চাই”। আর কুরআন শোনা মাত্রই তারা তাৎক্ষনিকভাবে বিরক্ত হয়ে উঠে, এর আসল মানে হল তারা শয়তানের কব্জায় চলে গেছে, এবং তারা বিরতিহীন ভাবে এই মানুষটিকে কুবুদ্ধি দিচ্ছে। শয়তান কোন জিনিষটিকে সবচেয়ে বেশি ঘৃণা করে? তারা কুরআন কে সবচেয়ে বেশি ঘৃণা করে। তারা আল্লাহ্ তাআলার বানীকে ঘৃণা করে। তারা পালিয়ে যায়- কারন এটা তাদের জন্য ক্ষতিকর। তাই তারা কি করে জানেন? যেহেতু মানুষটি এদের কব্জায় আছে, এর হৃদয় তাদের কব্জায় আছে, তারা তার হৃদয়ে খোঁচা দিতে শুরু করে যখন সে কুরানের বানী শুনে, আর সে বলে “আহহ আমি এটা শুনতে চাইনা”।
এটা সার্জারি করার মত, এটা যেন দাঁত তোলার মত যন্ত্রণাদায়ক মনে হয়। এটা সত্যিই ঘটে। আপনি যখন এরকম মানুষকে আল্লাহ্ তাআলার বানীর কথা স্মরণ করিয়ে দিবেন, তারা বিরক্ত হবে, উত্তেজিত হবে, যেন তাদের এটাতে এলারজি আছে। এর কারন? কারন তারা শয়তান কে তাদেরকে কব্জা করার সুযোগ দিয়েছে। তাদেরকে বিতাড়িত করতে হলে, প্রথমে যে কাজটি করতে হবে তা হল, তাদেরকে জ্বালানি সরবরাহ করা থেকে বিরত হওয়া। মিউজিক এর জ্বালানী। এভাবে উদ্দেশ্যহীন সময় নষ্ট করাটাই, শয়তান এর জ্বালানী। তারা এটাই পছন্দ করে যে, আপনি যেন সময় নষ্ট করেন। তারা এটাই ভালবাসে। কারন, আল্লাহ সমগ্র মানবজাতিকে একটি মাত্র সম্পদ, শুধু একটি মাত্র সম্পত্তি প্রত্যেককে দিয়েছেন, আর তা হল সময়। আর মিউজিক, টিভি, ইউটিউব, ফেসবুক, মাই স্পেস, টুইটার এসব কি? আপনি যদি এগুলোর পিছনে ঘণ্টার পর ঘণ্টা নষ্ট করেন, এটা আপনার সময় নষ্ট করা ছারা আর কি হতে পারে? এটা আপনার সম্পদকে নষ্ট করে দিচ্ছে, আর শয়তান এর থেকে অন্য কোনকিছুই বেশি ভালবাসেনা।
আল্লাহ’তালা আপনাদেরকে এই ধরনের প্রবৃত্তি থেকে বিরত থাকার শক্তি দান করুন। আমার পরামর্শ হল, আমি বার বার এই পরামর্শই দেই, তা হল- ভাল বন্ধু জোগাড় করুন। এমন বন্ধু জোগাড় করুন যারা এসবে আসক্ত নয়, এবং তাদের সাথে বেশি বেশি সময় কাটান। ইনশাল্লাহ আপনি নিজেকে এ ধরনের অভ্যাস থেকে মুক্ত করতে পারবেন।