একটি নিঃসঙ্গ ভ্রমণ

যখন আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তায়ালা পথনির্দেশনা আসার কথা বললেন, তিনি বলেন, فَمَن تَبِعَ هُدَايَ “যে ব্যক্তি আমার সে হেদায়েত অনুসারে চলবে,” এখানে একবচন ব্যবহার করা হয়েছে। (২ঃ৩৮) যে ব্যক্তিই আমার পাঠানো পথনির্দেশ অনুসরণ করবে… তিনি এটা বলেন নি যে – লোকেরা যারা আমার পথনির্দেশ মেনে চলবে। তিনি গাইডেন্স অনুসরণ করাকে ব্যক্তিগত বিষয় হিসেবে উল্লেখ করেছেন।

জানেন? কেন এভাবে বলা হয়েছে? কারণ, কখনো কখনো আল্লাহর আদেশ নিষেধ মেনে চলার ক্ষেত্রে আপনি একা হয়ে পড়বেন। আল্লাহর অবাধ্য হওয়া…এটা সবাই করতে পারে এবং তারা দল বেঁধেই এটা করে। আর আপনি যখন আল্লাহর বিধান মানতে চাইবেন আপনাকে এই গোষ্ঠীর বাইরে থাকতে হবে … ঠিক স্রোতের প্রতিকূলে সাঁতার কাটার মত। মাঝে মাঝে এমন হবে যে আপনিই একমাত্র আল্লাহর আদেশ নিষেধকে গুরুত্ব দিচ্ছেন। এমনও হতে পারে, পরিবারে একমাত্র আপনিই আল্লাহর দ্বীন মেনে চলছেন। আর অন্য সবাই বিপরীত দিকে ছুটে চলছে।

নবীদের (আলাইহিমুস সালাতু ওয়াস সালাম) দিকে তাকিয়ে দেখুন, যখন তাঁরা মিশন শুরু করেন, সম্পূর্ণ একা। আর যেসব মানুষ তাঁদের অনুসরণ করা আরম্ভ করেন তাঁরা ছিলেন বিভিন্ন পরিবারের নিঃসঙ্গ কেউ। গোটা পরিবার তাঁদের বিরুদ্ধে উঠে পড়ে লাগে।

সুতরাং এই দ্বীনের অনুসরণ করা বা এই হেদায়াতের উপর চলার সিদ্ধান্তটি হতে হবে একেবারেই একটি ব্যক্তিগত সাহসী সিদ্ধান্ত।

আর এই সিদ্ধান্ত নেয়ার ফলে আল্লাহ আপনাকে যে পুরস্কার দিবেন… فَلَا خَوْفٌ عَلَيْهِمْ وَلَا هُمْ يَحْزَنُونَ
যখন আপনি আসলেই আল্লাহর হেদায়াত মেনে চলা শুরু করবেন, তিনি আপনাকে নতুন ধরণের সঙ্গী দিবেন, তিনি আপনাকে বিশ্বাসীদের সাথী বানিয়ে দিবেন। তাই আয়াতের বাকি অংশে বহুবচন ব্যবহার করা হয়েছে। এই দুনিয়াতে আপনি যেমন মুমিনদের সাথী হিসেবে পাবেন, আর পরকালেও لَنُدْخِلَنَّهُمْ فِي الصَّالِحِينَ “আমি অবশ্যই তাদেরকে সৎকর্মীদের অন্তর্ভুক্ত করব।”

মহান আল্লাহ আমাদের দুনিয়া ও আখিরাতে সেই সঙ্গীদের অন্তর্ভুক্ত করুন।

 

[আরও মজার ব্যপার হলো দুনিয়া এবং পরকালে ফেরেশতারা হবে আপনার বন্ধু, এই আয়াতগুলো পড়ে দেখুন,

“নিশ্চয় যারা বলে, আমাদের পালনকর্তা আল্লাহ, অতঃপর তাতেই অবিচল থাকে, তাদের কাছে ফেরেশতা অবতীর্ণ হয় এবং বলে, তোমরা ভয় করো না, চিন্তা করো না এবং তোমাদের প্রতিশ্রুত জান্নাতের সুসংবাদ শোন।
ইহকালে ও পরকালে আমরা তোমাদের বন্ধু। আর সেখানে (অর্থাৎ জান্নাতে) তোমাদের জন্য তোমাদের মন যা চায় তা-ই আছে; তোমরা যে জিনিসের আকাঙ্ক্ষা কর, তোমাদের জন্য সেখানে তা-ই আছে ” সূরা ফুসসিলাত ৩০-৩১]

মতামত

comments