আপনার সন্তানকে যথেষ্ট সময় দিচ্ছেন তো?

আপনার সন্তানকে যথেষ্ট সময় দিচ্ছেন তো?

উস্তাদ নুমান আলী খানের ২০১০ এ ICNA তে দেয়া “Time, Love, Praise & Encouragement” লেকচারের অংশ বিশেষ।   টিনেজারদের বাবা-মারা প্রায় সময়ই আমার কাছে আসেন। ‘জানেন, আমার ছেলেটা না, আমার কথা শোনেই না আজকাল। আপনি ওর সাথে একটু কথা  বলবেন?’ যেন আমি কোনো মহৌষধ সাথে নিয়ে ঘুরি! যেন সেই ছেলেটা আমার কাছে আসলে আমি ওর গায়ে ফু দিয়ে দেব এভাবে। আর সাথে সাথেই সে দারুন লক্ষী  ছেলে হয়ে যাবে! ‘একটু যদি কথা বলতেন’। না, বরং আপনি আপনার ছেলের সাথে কথা বলছেন না কেন? কোথায় ছিলেন আপনি যখন তার সাথে কথা বলার প্রকৃত সময় ছিল? আজকে আমি আপনাদের সাথে বাবা-মাদের নিয়ে একটু কথা বলব, তারপর বলব স্বামী-স্ত্রীদের নিয়ে। আজকে এই দু’টো জিনিস নিয়ে বলারই সময় আছে। দু’টো খুবই মৌলিক সম্পর্ক: একটা আপনার সন্তানদের সাথে, আরেকটা আপনার জীবনসঙ্গীর সাথে। এই দু’টো সম্পর্কের ব্যপারেই আমরা খুব বেসিক কিছু ব্যাপার নিয়ে  আলোচনা  করবো। আপনার সন্তান যখন ছোট, খুবই ছোট, ধরুন যখন তাদের বয়স পাঁচ, ছয়, সাত, দুই, তিন, চার, তখন তাদের কাছে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কোন জিনিসটা বলুন তো? আমার নিজের পাঁচটা বাচ্চা আছে, তাই আমি খুব ভালো বলতে পারবো এ ব্যপারে। তাদের কাছে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো আপনার সমর্থন। তারা আপনাকে গর্বিত করতে চায়। তারা যা যা করেছে সব আপনাকে দেখাতে চায়। ধরুন, আমি জরুরী কোনো কাজের আলাপ করছি ফোনে, জরুরী একটা ফোন, আর এ সময় আমার দুই বছরের ছেলে এসে বলবে, – “আব্বা আব্বা আব্বা আব্বা আব্বা।” – “ভাই, একটু লাইনে থাকেন। কি হয়েছে?” – “হে হে হে”। ব্যস! আমি আবার ফোনালাপে ফিরে গেলাম, সে আবার আমাকে ডাকা শুরু করল। আমি বললাম, – “আচ্ছা ঠিক আছে, কি হয়েছে বলো”। – “আমি তোমাকে একটা জিনিস দেখাবো”। – “কি দেখাতে চাও বাবা?” – ” হে...
আল্লাহর ওয়াস্তে বলিউড মুভি দেখা বন্ধ করুন

আল্লাহর ওয়াস্তে বলিউড মুভি দেখা বন্ধ করুন

উস্তাদ নুমান আলী খানের বাহরাইনে দেয়া ‘Friends Part 1’ লেকচারের অংশ বিশেষ।   সবার আগে আল্লাহর ওয়াস্তে ভারতীয় মুভি দেখা বন্ধ করুন! প্লিজ! আর কতবার মানুষকে গাছের চারপাশে চরকি খেতে দেখবেন!? যথেষ্ট হয়েছে। আর দিনে দিনে এসব মুভি নোংরা থেকে আরও নোংরা হয়ে যাচ্ছে! আমি একটা রেস্টুরেন্টে গিয়েছিলাম। বেশিদিন আগের কথা না। আমার ছেলেমেয়ের সাথে। সিয়াটলে একটা হালাল রেস্টুরেন্ট। আমরা চেক করেছিলাম এটা হালাল রেস্টুরেন্ট ছিল। তো আমরা সেখানে গেলাম। হালাল রেস্টুরেন্ট ছিল ঠিকই কিন্তু বিনোদনের জন্যে তারা বলিউডের ব্যবস্থা রেখেছিল। আক্ষরিক অর্থে আমার নিজেকে এবং আমার ছেলেমেয়েদের ঘুরে বসতে হয়েছিল! কারণ এটা এতো নোংরা ছিল! এত জঘণ্য! এই জিনিস আপনাদের ঘরের ভিতরে কেমন করে অবলীলায় চলতে থাকে? আপনার ঘরে মা আছে, বোন আছে, স্ত্রী আছে, মেয়ে আছে আর সাথে এটাও!? ব্যপারটা অত্যন্ত জঘণ্য। এসব বন্ধ করুন! এগুলো কোন ধরনের কল্পনাতেও গ্রহণযোগ্য নয়। এসব দেখে আপনারা আপনাদের পরিবারকে ধ্বংস করে দিচ্ছেন। আপনারা এসব মুভিকে আপনাদের ডিজিটাল ফ্রেন্ড বানিয়ে ফেলেছেন তাই সব সময় এসব দেখছেন। সুবহানাল্লাহ।...

ইস! এটা যদি আমার থাকতো!

উস্তাদ নুমান আলী খানের বাহরাইনে দেয়া  ‘Friends Part 1’ লেকচারের অংশ বিশেষ।   আমি নিজে নিজের মতই থাকব। আমি যা, আমি তাতেই সন্তুষ্ট। আমার কোন প্রয়োজন নেই এমন কিছু হবার যা আমি নই, তা হবার ইচ্ছাও করব না। বিশেষত, আমি মেয়েদের এবং আমার ছোট বোনদের বলছি যারা আজ এখানে উপস্থিত আছে। আমার মতে, বর্তমান আমেরিকা সহ সারা বিশ্বে নারীদের জন্য সবচেয়ে বড় সংকট হল আত্ম-সম্মান এর অভাব। বিশেষত, মুসলিম নারীদের আত্ম-সম্মান। আপনাদের সামনে অমুসলিম নারীদের উদাহরণ আছে যারা যেভাবে খুশি পোশাক পরিধান করে, অথচ আপনাদের পোশাকে সীমাবদ্ধতা রয়েছে। আর আপনাদের মনে হয় আমাকে দেখতে কুশ্রী লাগবে আর তাদের সুন্দর লাগবে। অবশ্য কিছু মেয়েরা এমনটাই চিন্তা করে, কেন আমাকে এসব পোশাক পড়তে হবে ? অথবা আমি কেন এত খাটো কিংবা এত মোটা অথবা এত চর্মসার ? অনেকে ভাবে, কেন আমার চোখগুলোর দূরত্ব এত বেশি বা নাকটা এত বড় কেন ? কিংবা আমার দাঁতগুলো কি সমান হতে পারত না ইত্যাদি। কেন ? কেন আপনারা নিজেকে নিয়ে এত চিন্তিত । আমার গালে এত দাগ কেন ? ওহহ !! আমি অনেক চিন্তা করি, দেখ দেখ, কী অবস্থা ! কী বিশ্রী !! এভাবে আপনারা কমপক্ষে ৩৫ মিনিট আয়নায় দাড়িয়ে থাকেন। না, এটা ঠিক না। আপনি যা, তা নিয়েই সন্তুষ্ট থাকুন। এটাই গুরুত্বপূর্ণ আপনার জন্য। অন্যের কোন কিছুতেই নিজেকে খুঁজবেন না। আল্লাহ্‌ মানুষকে অতি সুন্দর করেই সৃষ্টি করেছেন। وَلَا تَتَمَنَّوْا مَا فَضَّلَ اللَّهُ بِهِ بَعْضَكُمْ عَلَىٰ بَعْضٍ ۚ لِّلرِّجَالِ نَصِيبٌ مِّمَّا اكْتَسَبُوا ۖ وَلِلنِّسَاءِ نَصِيبٌ مِّمَّا اكْتَسَبْنَ ۚ وَاسْأَلُوا اللَّهَ مِن فَضْلِهِ ۗ إِنَّ اللَّهَ كَانَ بِكُلِّ شَيْءٍ عَلِيمًا আর তোমরা আকাঙ্ক্ষা করো না এমন সব বিষয়ে যাতে আল্লাহ তাআলা তোমাদের একের উপর অপরের শ্রেষ্ঠত্ব দান করেছেন। পুরুষ যা অর্জন করে সেটা তার অংশ এবং...

সন্তানের সাথে আপনার বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের গুরুত্ব

বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম [উস্তাদ নুমান আলী খানের লেকচার অবলম্বনে অনুবাদ। এই বক্তব্যটি যদিও আমেরিকার প্রেক্ষাপটে দেয়া তবে বিশ্বায়নের এই যুগে সবার জন্যই এতে শিক্ষা রয়েছে।] আমাদের ছেলেমেয়েদের ব্যাপারে প্রথম চিন্তার বিষয় হলো তারা কথা বলার জন্য মানুষ খুঁজে পায়না। এটা তাদের বিপর্যয়ের প্রধান কারণ। আপনার সন্তানকে আপনি স্কুলে পাঠান; ধরে নিই তারা পাবলিক স্কুলে যায়। অধিকাংশ মুসলিম অভিভাবকেরা তাদের সন্তানদের পাবলিক স্কুলে পাঠিয়ে থাকেন, কারণ যেকোনো কারণেই হোক তাদের সন্তানদেরকে ইসলামিক স্কুলে পাঠানোর সামর্থ্য বা সুযোগ হয়ে ওঠেনা। এজন্য আমরা তাদের দোষারোপ করব না। এটা তাদের পারিপার্শ্বিক অবস্থার কারণ। তো আপনি সন্তানদের পাবলিক স্কুলে ভর্তি করান; ক্লাস ফাইভ-সিক্সে উঠতে উঠতেই তারা এ দেশে বিভিন্ন নোংরা শব্দ শিখে ফেলে; আপনি যে শহরেরই হন না কেন। তারা খুব জঘন্য ভাষা আয়ত্ত করে ফেলে; তারা কিছু বাজে ওয়েবসাইটে ঢোকা শিখে যায়; তারা তাদের পিএসপি, আইপড, আইফোনে বিভিন্ন নোংরা জিনিষ ডাউনলোড করা শেখে। তারা কম বয়সেই এসবে পারদর্শী হয়ে যায়। যেসব জিনিস আপনি ২৫ বছর বয়সেও শেখেননি সেগুলো তারা ১২ বছর বয়সেই জানতে পারে। এটাই বাস্তবতা। এগুলোই এখন হচ্ছে। এখানে কোন কোন অভিভাবক জানেন যে ফেসবুক কী? একটু হাত দেখান প্লিজ। আচ্ছা, টুইটার কী জিনিস কেউ বলতে পারবেন? (its not when your eye bugs out, something else) তো আপনার সন্তান এসব সামাজিক যোগাযোগের ওয়েবসাইটে যায়, যেখানে অচেনা শিকারিরা আপনার কিশোর মেয়ে বা ছেলের সাথে কথা বলতে পারে। একসময় তারা সম্পর্কে জড়িয়ে যায় আর একে অপরের সাথে দেখাও করে। এরপর বিভিন্ন কিছু ঘটে যায়। এটা বর্তমানে আমাদের মুসলিম ছেলেমেয়েদের বাস্তবতা। এগুলোই ঘটছে। এসবের ব্যাপারে আমাদের চোখ বুজে থাকলে হবেনা, আমাদের চোখ খুলতে হবে। আপনি হয়তো বলতে পারেন, “না না, আমার সন্তানরা এমন না।” প্লিজ জেগে উঠুন! বড় বিষয়গুলো নিয়ে কথা বলার আগে এসব ব্যাপারে...